দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে সারা বিশ্ব যখন ত্রস্ত সেই সময়ে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে যৌথ উদ্যোগে অ্যাস্ট্রাজেনেকা সংস্থার তৈরি কোভিড ভ্যাকসিন জাগিয়ে তুলেছিল আশার আলো। কিন্তু এই ভ্যাকসিনের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শুরু হতেই একের পর এক বিতর্কে তৈরি হতে শুরু করেছে। এর জেরে এই ভ্যাকসিন নিয়ে জনমানসে তৈরি হচ্ছে আশঙ্কা, আদৌ এই ভ্যাকসিন নিরাপদ তো? নাকি মুনফা অর্জনের লড়াইয়ে ভেতরে ভেতরে অসাধু প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে উন্নতশীল দেশ গুলোর মধ্যে।
ঘটনার সূত্রপাত হয়েছিল গত সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে। ব্রিটেনে এই Covid-19 ভ্যাক্সিনের ট্রায়ালে অংশ নেওয়া দুই স্বেচ্ছাসেবী অসুস্থ হয়ে পড়লে ট্রায়াল বন্ধ করে দেয় অক্সফোর্ড। একই সাথে অন্যান্য দেশেও এই ভ্যাক্সিনের ট্রায়াল বন্ধ করে দেওয়া হয়। তখনই প্রশ্ন ওঠে এই টিকার নিরাপত্তা নিয়ে।
এরপর একটি মেডিকেল বিবৃতি জারি করে অক্সফোর্ড জানায় যে আবার ব্রিটেন সরকার ট্রায়ালের অনুমতি দিয়েছে এবং তারা আবার বিশ্বের অন্যত্রও এই ভ্যাকসিনের ট্রায়াল ফের শুরু করছে। কিন্তু সম্প্রতি ব্রাজিলে ট্রায়ালে অংশগ্রহণকারী এক স্বেচ্ছাসেবকের মৃত্যুতে অক্সফোর্ডের টিকা নিয়ে গভীর উদ্বেগ তৈরি হয়েছে নতুন করে। যদিও এখনও পর্যন্ত ট্রায়াল আর বন্ধ করা হয়নি।
যদিও ভ্যাকসিন ট্রায়ালে অংশগ্রহণকারীদের সম্পর্কে সমস্ত তথ্যই অত্যন্ত গোপনীয় এবং নিয়ম অনুযায়ী তা কখনও জনসমক্ষে প্রকাশ করা হয় না। তবে ব্রাজিলের সংবাদমাধ্যম দাবি করেছে যে মৃত স্বেচ্ছাসেবক একজন চিকিৎসক, যিনি কোভিড রোগীদের চিকিৎসায় যুক্ত ছিলেন।
ব্রাজিলের সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, চলতি ট্রায়ালে তিনি স্বেচ্ছায় অংশ নিয়েছিলেন বটে, তবে তাঁর উপরে টিকার একটি ডোজও প্রয়োগ করা হয়নি বলে দাবি সংবাদসংস্থার। এই কারণেই তাঁর মৃত্যুতে ভ্যাক্সিন ট্রায়ালে ছেদ পড়েনি বলে জানিয়েছে সূত্র।
উৎপাদক সংস্থা অ্যাস্ট্রাজেনেকা জানিয়েছে, ‘ট্রায়াল অনুসন্ধানকারীরা সমস্ত চিকিৎসাগত দিক সযত্নে খতিয়ে দেখছেন। নিরাপত্তা নজরদারিতে একটি স্বাধীন ক্ষমতাসম্পন্ন কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্তে এখনও পর্যন্ত ট্রায়াল চালিয়ে যাওয়া নিয়ে কোনও শঙ্কা প্রকাশ করা হয়নি।’
নির্মাতা সংস্থা অ্যাস্ট্রাজেনেকার এই আশ্বাসে অবশ্য বিশ্বজুড়ে অক্সফোর্ডের কোভিড টিকা প্রয়োগ নিয়ে উদ্বেগ দূর হয়নি। এমনকি এর প্রভাব পড়েছে অন্যান্য সংস্থার তৈরি করোনা ভ্যাকসিনের ওপরেও। উল্লেখ্য, আমেরিকায় কয়েক কোটি ডোজ উৎপাদনে নিযুক্ত জনসন অ্যান্ড জনসননের এক স্বেচ্ছাসেবক অসুস্থ হয়ে পড়লে তাদের ভ্যাকসিন ট্রায়াল আপাতত স্থগিত রাখা হয়েছে।