দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: ‘চাঁদ দেখতে গিয়ে আমি জল দেখে ফেলেছি’ হ্যাঁ, চাঁদের সূর্যালোকিত অংশে জলের সন্ধান পেল নাসা-র স্ট্র্যাটোস্ফেরিক অবজার্ভেটরি ফর ইনফ্রারেড অ্যাস্ট্রোনমি (সোফিয়া) SOFIA। তাদের এই আবিষ্কারটি নেচার অ্যাস্ট্রোনমি পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। তাঁদের এই আবিষ্কারের সূত্রে চাঁদের পিঠে ছায়াশীতল অংশ তো বটেই, গোটা উপগ্রহেই মাটির নীচে জলের অস্তিত্ব রয়েছে বলে প্রমাণ পাওয়া গেল। সেই সঙ্গে উসকে দিলো চাঁদের পাতাল লোকে জীবন থাকার রহস্য। তাহলে কী এলিয়েনরা চাঁদেই রয়েছে!
নাসা সূত্রে খবর, চাঁদের ক্ল্যাভিয়াস গহ্বরে জলের অণু (H2O) পাওয়া গিয়েছে। পৃথিবী থেকে এই ক্রেটার বা গহ্বরটি দৃশ্যমান। অতীতে চাঁদের ভূ-স্তরে হাইড্রোজেনের রূপান্তরিত নমুনা পাওয়া গেলেও বিজ্ঞানীরা জল বা তার কাছাকাছি কোনও যৌগের অণু খুঁজে পাননি। সাম্প্রতিক অনুসন্ধানে চাঁদের পিঠের ওই অংশে মোটামুটি ‘১২ আউন্স’ পরিমাণ জল পাওয়া গিয়েছে।


যদিও তুলনামূলক আলোচনাতে বলা যায়, চাঁদের পিঠে যে পরিমাণ জল খুঁজে পেয়েছে সোফিয়া, তার ১০০ গুণ বেশি রয়েছে সাহারা মরুভূমিতে। তবু বাতাসহীন পরিমণ্ডলে রুক্ষ চন্দ্রস্তরের নীচে কী ভাবে জলের অস্তিত্ব টিকে রয়েছে, তা নিয়ে নতুন প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
আসলে মহাবিশ্বে অত্যন্ত বিরল জলের উপস্থিতি জীবনের অন্যতম প্রধান উপাদান। তাই জলের অস্তিত্ব থাক মানেই সেখানে প্রাণের সঞ্চার সম্ভব। যদিও সোফিয়া-র খুঁজে পাওয়া জল সহজলভ্য কি না, তা খতিয়ে দেখতে হবে। তবে নাসা-র আর্তেমিস প্রকল্পে ২০২৪ সালে চাঁদে প্রথম এক নারী ও তার পরে এক পুরুষকে পরীক্ষামূলক বসবাসের জন্য পাঠানোর আগে চন্দ্রপৃষ্ঠে জলের অস্তিত্ব সম্পর্কে আরও তথ্য পেতে উদ্যোগী হয়েছে সংস্থা।
প্রসঙ্গত বিভিন্ন গবেষণাতে জানা গিয়েছে চন্দ্রপৃষ্ঠ সম্পূর্ণ শুকনো। বিগত ২০ বছর ধরে চাঁদকে প্রদক্ষিণকারী ও অন্যান্য অভিযানে জানা গিয়েছে, চাঁদের চিরছায়াচ্ছন্ন মেরু অঞ্চল তুষারাবৃত। ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র (ইসরো) সহ আরও পরবর্তী অভিযানে জানা গিয়েছে, চাঁদের সূর্যালোকিত অঞ্চল আংশিক দ্রবীভূত অক্সিজেন থাকার আভাস রয়েছে। তবে এখনও সেই খুঁজে পাওয়া তরল জল সত্যিই জল না অন্য কোনও হাইড্রোজেন যৌগ, তা যদিও বোঝা সম্ভবপর হয়নি।