দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: যাদের কোভিড-১৯ আছে তারা কোন বাহ্যিক লক্ষণ ছাড়াই এই রোগ খুব সহজেই ছড়িয়ে দিতে পারে কারণ তারা অসুস্থ। কিন্তু একটি নতুন উন্নত AI (আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স), একটি তীক্ষ্ণ অ্যালগরিদম প্রোগ্রামিং দ্বারা মানুষের কাশির শব্দ থেকে অ্যাসিম্পটোমেটিক কেস খুব সহজেই সনাক্ত করতে সক্ষম। একটি নতুন গবেষণাতে এ তথ্য উঠে এসেছে।
এমআইটি (MIT)’র একদল গবেষক সম্প্রতি একটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) মডেল তৈরি করেছেন যা সুস্থ মানুষ এবং আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে কাশির সূক্ষ্ম পার্থক্য শুনে অ্যাসিম্পটোম্যাটিক কোভিড-১৯ কেস সনাক্ত করতে পারে। গবেষকরা এখন ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে তাদের এই এআই পরীক্ষা করছেন এবং ইতিমধ্যে তা খাদ্য ও ঔষধ প্রশাসনের (FDA) কাছ থেকে অনুমোদন চাওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে।
এই ক্রিটটিম বুদ্ধিমত্তা অ্যালগরিদম পূর্ববর্তী মডেলের উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে যেমন নিউমোনিয়া, অ্যাজমা এবং এমনকি আলঝেইমার ও। এমআইটির অটো-আইডি (Auto ID) ল্যাবরেটরির গবেষক বিজ্ঞানী ব্রায়ান সুবিরানা এক বিবৃতিতে বলেন,”কথা বলা এবং কাশির শব্দ কণ্ঠস্বরের পর্দা এবং আশেপাশের অঙ্গদ্বারা প্রভাবিত হয়। অনর্গল বক্তৃতা থেকে আমরা সব কিছু পেতে পারি, আর এই AI শুধুমাত্র কাশি থেকে মূল তথ্য সংগ্রহ করতে পারে। যার মধ্যে রয়েছে ব্যক্তির লিঙ্গ, মাতৃভাষা বা এমনকি মানসিক অবস্থাও। আসলে আমাদের প্রত্যেকের কাশিতে আবেগ জড়িয়ে আছে। এটাই সত্য বিষয়।
প্রথমত, গবেষকরা একটি ওয়েবসাইট তৈরি করেছে যেখানে উভয় প্রকারের স্বেচ্ছাসেবীরা (সুস্থ এবং কোভিড-১৯) তাদের সেলফোন বা কম্পিউটার ব্যবহার করে তাদের কাশি রেকর্ড করতে পারে। এর পাশাপাশি তারা একটি ফর্ম ফিলাপ করেন যেখানে তারা তাদের রোগ নির্ণয় এবং তাদের যে কোন উপসর্গ নিয়ে একটি শমিককে অংশগ্রহণ করতে পারেন। এখানে মানুষকে “জোর পূর্বক কাশি” রেকর্ড করতে বলা হয়, যেমন কাশি যখন আপনার ডাক্তার আপনাকে স্টেথোস্কোপ দিয়ে আপনার বুকের কথা শোনার সময় কাশি দিতে বলেন।
গবেষকদের বিবৃতি অনুসারে এই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে গবেষকরা ‘বলপূর্বক কাশির নমুনা’র ৭০,০০০ ব্যক্তিগত রেকর্ডিং সংগ্রহ করেছেন। এদের মধ্যে ২,৬৬০ জন রোগীর মধ্যে কোভিড-১৯ ছিল, যাদের কোন লক্ষন বা উপসর্গ ছিল না। এরপর তারা তাদের এআই মডেল এবং ১,০৬৪টি নমুনা পরীক্ষা করে দেখতে যে এটি কোভিড-১৯ রোগী এবং সুস্থ মানুষের মধ্যে কাশির পার্থক্য সনাক্ত করতে পারে কি না।
তারা দেখেছে যে তাদের এআই কোভিড-১৯ (যা তাদের আলঝেইমার অ্যালগরিদমেও ব্যবহৃত হয়েছিল) সম্পর্কিত কাশির পার্থক্য তুলে নিতে সক্ষম হয়েছে- পেশীবহুল অবক্ষয়, কণ্ঠস্বরের শক্তি, আবেগ যেমন সন্দেহ এবং হতাশা এবং শ্বাস-প্রশ্বাস এবং ফুসফুসের কার্যক্ষমতা।
এই এআই মডেল কোভিড-১৯ এর ৯৮.৫% মানুষকে সঠিকভাবে চিহ্নিত করেছে, এবং সঠিকভাবে ৯৪.২% মানুষের মধ্যে কোভিড-১৯ কে সঠিকভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে। অ্যাসিম্পটোম্যাটিক ব্যক্তিদের জন্য, এই মডেলকোভিড-১৯ এর ১০০% মানুষকে সঠিকভাবে চিহ্নিত করেছে, এবং সঠিকভাবে এই রোগ ছাড়া ৮৩.২% মানুষের মধ্যে কোভিড-১৯ কে সঠিকভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে।
এই গবেষণাটি আংশিকভাবে ঔষধ কোম্পানি টেকডা ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি লিমিটেড দ্বারা সমর্থিত। এই গবেষণা পত্রটি গত সেপ্টেম্বর আমেরিকার ওপেন জার্নাল অফ ইঞ্জিনিয়ারিং ইন মেডিসিন এন্ড বায়োলজিতে প্রকাশিত হয়।