দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: করোনা মহামারী যদি শুরু হয়ে থাকে তাহলে আসল বিপর্যয় অপেক্ষা করছে ২০৬৮ সালে। কেন না, ওই সময়েই গ্রহাণু ‘অ্যাপোফিজ’ এর পৃথিবীর সঙ্গে ধাক্কা খাওয়ার সম্ভাবনা ৯৯%। আর তা যদি হয়, তবে পৃথিবী নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে, আপাতত এ কথা নিশ্চিত করেছে নাসা!


অ্যাপোফিজ ৯৯৯৪২! নামের সাথে সংখ্যাগুলো নাসা-র হিসেবের সুবিধের জন্য হলেও এই নামেই লুকিয়ে আছে এক পৌরাণিক সত্যি। আর তাতেই আশঙ্কার মেঘ ঘন হতে শুরু করেছে। পুরাণকথা অনুযায়ী, ‘অ্যাপোফিজ’ আদতে এক মিশরীয় নাগ দেবতা। তিনিই জন্ম দিয়েছিলেন ক্যাওস বা মহাজাগতিক বিশৃঙ্খলার। আকারে এবং রূপে বিশাল এই নাগদেবতা সম্পর্কের দিক থেকে আরেক মিশরীয় দেবতা ‘রা’ বা সূর্যের ভাই! নাসা বলছে যে দুই ভাইয়ের মধ্যে পারস্পরিক সৌহার্দ্যের বন্ধন না কি এতটুকুও কমেনি! বরং যত দিন যাচ্ছে সেকেন্ডে মিনিটে ঘণ্টার নিরিখে, সেই টান বাড়ছে বই কমছে না!
একটু সহজভাবে বললে এটা দাঁড়ায় যে ওই মিশরীয় পুরাণকথার উল্লেখের মধ্যেই লুকিয়ে রয়েছে পৃথিবীর ভবিষ্যত্ বিপদসঙ্কেত। নাসা জানিয়েছে যে এই জাতীয় গ্রহাণু পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসে সূর্যের আলোর দ্বারা আকর্ষিত হয়ে! হ্যাঁ, সূর্যের আলোর এক নিজস্ব আকর্ষণ ক্ষমতা আছে। যা আমরা টের পাই না ঠিকই, কিন্তু সৌরজগতের অন্য গ্রহ ও গ্রহাণু দিব্যি অনুভব করে থাকে। এই টানের সূত্রকে জ্যোতির্বিজ্ঞানের পরিভাষায় বলা হয়ে থাকে ইয়ারকোভস্কি অ্যাক্সেলারেশন। আর এবার সেই টানেই ওই অ্যাপোফিজ গ্রহাণু নতুন করে ক্যাওস বা মহাজাগতিক বিশৃঙ্খলা ঘটানোর লক্ষ্যে সুপ্রস্তুত!


এই গ্রহাণু ইতিমধ্যে পৃথিবীর খুব কাছেই রয়েছে। নাসা-র বিজ্ঞান পরিভাষায় নিয়ার আর্থ অ্যাস্টেরয়েড। ফলে, পৃথিবীর বিপদের আশঙ্কা ক্রমেই বাড়ছে। তবে এই গ্রহাণু আবিষ্কার হয়েছিল ২০০৪ সালে। সেবার সুবারু টেলিস্কোপে জ্যোতির্বিদ ডেভিড জে টলেন এবং তাঁর দল আবিষ্কার করেছিলেন তাকে আর সে সময়ে যান্ত্রিক হিসেব বলেছিল যে অ্যাপোফিজ ৯৯৯৪২ পৃথিবীর বুকে আছড়ে পড়বে ২০২৯ সালে। কিন্তু নাসা তাদের সাম্প্রতিক হিসেবের মাধ্যমে নিশ্চিত যে ওই সময়ে এই গ্রহাণু আটলান্টিক মহাসাগরের উপর দিয়ে ইউনাইটেড নেশনস পেরিয়ে চলে যাবে পৃথিবীকে না ছুঁয়েই কিন্তু পরের বার যখন সে ঘুরে আসছে সেই ২০৬৮ সালে কিন্তু পৃথিবীর সাথে তার সংঘর্ষ এড়ানো যাবে না।