দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: গবেষণায় দেখা গিয়েছে, আলোর ক্ষেত্রে প্রবাল অত্যন্ত স্পর্শকাতর। তাদের জীবনচক্র এবং অন্যান্য জৈবিক ক্রিয়া নির্ভর করে সূর্যের ও চাঁদের আলোর উপরেই। তবে সমুদ্র-উপকূল অঞ্চল এবং তার আশপাশে অনেক স্ট্রিট ল্যাম্প,বিলবোর্ড এবং অনেক আকাশচুম্বী বাড়ি আছে। আর সেই সমস্ত জায়গা থেকে আলোর রশ্মি সমুদ্রে এসে পড়ছে। এই আলোগুলি সন্ধ্যে পাঁচটা-ছ’টা থেকে জ্বলতে শুরু করে। তখন স্বাভাবিক আলো থাকলেও এগুলো জ্বেলে দেওয়া হয়। ফলত প্রবাল গোষ্ঠীর যে নিজস্ব বায়োক্লক আছে সেটা বিঘ্নিত হয়।
কয়েক দিন ধরে আলোচনার বিষয়বস্তুর মধ্যে যেটা সবচেয়ে বেশী আলোচিত হচ্ছে তা হল বায়ু দূষন। মিডিয়া, সংবাদপত্র সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বায়ু দূষনের মাত্রা নিয়ে ক্রমশ আলোচনা হচ্ছে। কারন সামনেই কালীপুজো। সর্বত্র দিপাবলীর রেশ থাকবে। আর বাজি থেকে বাতাসে ঠিক কতটা দূষন বাড়তে পারে, সেই নিয়ে অনেকেই চিন্তায় আছেন। যদিও দূষণ শুধু বাজির ধোঁয়া থেকে হয় না, হয় কৃত্রিম আলো থেকেও। ইতিমধ্যেই এবার হাই কোর্টের রায়ে বাজি পোড়ানো নিষিদ্ধ। তবে কৃত্রিম আলো থেকেও যে বায়ু দূষন হয়, এমনই জানা গেছে গবেষণা থেকে।
কারেন্ট বায়োলজি নামক একটি পত্রিকায় প্রকাশিত গবেষণাপত্রে দেখানো হয়েছে যে, কীভাবে উপকূলীয় অঞ্চলে প্রবালের প্রজনন ক্ষমতা হারিয়ে যাচ্ছে কৃত্রিম আলোর জন্য বা আলোকদূষণের জন্য। প্রবাল ছাড়া অন্যান্য সামুদ্রিক উদ্ভিদও এই আলোকদূষণের জন্য ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।


সম্প্রতি গবেষণায় দেখা গিয়েছে, কৃত্রিম আলোর প্রভাবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ক্যারিবিয়ান সমুদ্র, প্রশান্ত মহাসাগর এবং ভারত মহাসাগর। শুধু তাই নয়, এই সমুদ্রগুলো ছাড়াও অন্যান্য যে সমস্ত জায়গায় প্রবালপ্রাচীর রয়েছে সেখানে তারা ভুল সময়ে ডিম পাড়ছে। এর ফলে প্রবালের স্বাভাবিক প্রজননক্রিয়ার চক্র বিঘ্নিত হচ্ছে।
আজকাল উপকূলীয় অঞ্চলে জনবসতি অনেক বেড়ে গিয়েছে।আর জনবসতি বেড়ে যাওয়ায় আলোর ব্যবহার ও বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই এই সকল এলাকায় প্রবালপ্রাচীর অনেক বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।কারণ হল, এলইডি থেকে যে আলো বিচ্ছুরণ হয়, তা সমুদ্রের অনেক গভীর পর্যন্ত ছড়াচ্ছে। ফলত প্রবালের ওপর তার অনেক খারাপ প্রভাব পড়ছে। তাই গবেষকরা দাবি করছেন সারা বিশ্বে প্রবালপ্রাচীর বাঁচিয়ে রাখার জন্য প্রশাসনকে আরও অনেক বেশি তৎপর হতে হবে এবং যথাসম্ভব কৃত্রিম আলোর ব্যবহার কমাতে হবে!
উল্লেখ্য, অত্যাধিক দূষনযুক্ত এলাকায়, কোভিডে মৃত্যুর হার বেশি দেখা গিয়েছে। সম্প্রতি একটি সমীক্ষায় এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে আসলো বিজ্ঞানীদের।