দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: উল্লেখ্য, ২০০৯ সাল থেকে প্রতি বছর ১২ নভেম্বর পালিত হয় এই বিশ্ব নিউমোনিয়া দিবস। এ বারের থিম Every Breath Counts।করোনা নিয়ে এখনও আতঙ্কিত গোটা দেশ। জোড় কদমে চলছে ভ্যাকসিন তৈরীর প্রস্তুতি। কিন্তু এই প্যানডেমিকের মতো দুর্বিসহ সময়ে দাড়িয়ে যদি অন্য কোনো রোগের ভয়াল রোগের স্বীকার হতে হয় তাহলে! হ্যাঁ এবার নতুন রোগের আশঙ্কা। রোগের নাম নিউমোনিয়া। এই রোগ এখন আরও বড় আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। করোনার পাশাপাশি এ বছর নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে বহু মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এহেন পরিস্থিতিতে এবারের বিশ্ব নিউমোনিয়া দিবস খুবই তাৎপর্যপূর্ণ।
মানবদেহের শ্বাসযন্ত্রে আক্রমণ করে এই নিউমোনিয়া। এ ক্ষেত্রে মিউকাস বা অন্যান্য ফ্লুইডে ভরতি হয়ে যায় আমাদের শ্বাসযন্ত্র। এর ফলেই শুরু হয় শ্বাসকষ্ট। তথ্যে জানা গিয়েছে, প্রতি বছর এই রোগে মৃত্যু হয় লক্ষ লক্ষ মানুষের। আর এই সময়ে তা এক বাড়তি উদ্বেগের কারণ। এছাড়া এবছর নিউমোনিয়ায় মৃত্যুর সংখ্যাও বেড়েছে অনেক সংখ্যক। কিন্তু কোন কোন ক্ষেত্রে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা বেশি?
Cleveland Clinic-এর মতে, বয়সসীমা বিশেষে কিছু বিশেষ ক্ষেত্রে নিউমোনিয়া হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল দেখা দেয়।এ ক্ষেত্রে দুই বছরের নিচের শিশুদের নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা সবচেয়ে বেশী হারে দেখা দেয়। এমন ভাবে ওই একই সম্ভাবনা দেখা যায় ৬৫ বছরের বয়স্কদের উপরেও।HIV-AIDS বা অটোইমিউন ডিজিজের জেরে যাঁদের ইমিউনিটি সিস্টেম দুর্বল এবং যাঁদের ফুসফুসে সংক্রমণের প্রবণতা রয়েছে, তাঁদের ক্ষেত্রেও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা বেশি। এছাড়া যাঁদের নিউরোলজিকাল ইস্যু যেমন ডিমেনশিয়া বা স্ট্রোকের প্রবণতা রয়েছে, তাঁরাও এই রোগে আক্রান্ত হতে পারেন। এছাড়া যেসকল ব্যাক্তি মদ্যপান করেন,তাঁদের তো বটেই এবং অন্তঃসত্ত্বাদের ক্ষেত্রেও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা বেশি।
তবে কীভাবে বাঁচা যায় এই নিউমোনিয়ার হাত থেকে?
ভাইরাল নিউমোনিয়াকে আটকানোর কোনও ভ্যাকসিন নেই।তবে Pneumococcal ব্যাকটেরিয়া সৃষ্ট নিউমোনিয়া রোগকে প্রতিরোধ করতে Pneumovax23 ও Prevnar13 নামে এর দু’টি ভ্যাকসিন রয়েছে। প্রতি বছর ফ্লু ভ্যাকসিন নিতে পারেন। এই ভ্যাকসিন ছাড়াও কিছু বিষয় আপনাকে মেনে চলতে হবে। যেমন,
প্রথমত, করোনার মতো ড্রপলেটের মাধ্যমেই ছড়াতে পারে নিউমোনিয়া। তাই বাইরে বেরোলে মাস্ক ব্যবহার করুন।এবং নিয়মিত সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে নিন। এছাড়া ও স্যানিটাইজার ব্যাবহার করুন।
দ্বিতীয়ত,কেউ যদি নিউমোনিয়ায় ভোগেন তাহলে তাঁর থেকে দূরে থাকুন।
তৃতীয়ত, এই রোগ স্পর্শের মাধ্যমে ছড়াতে পারে। তাই হাইজিন মেইনটেন করুন। এবং নিজের সঙ্গে
হ্যান্ড স্যানিটাইজার রেখে তা সময় সময় ব্যবহার করুন।
চতুর্থত, বায়ুদূষণ বা নিষ্ক্রিয় ধূমপানও আপনার ফুসফুসের ক্ষতি করতে পারে। তাই অধিক দূষিত এলাকা বা ঘিঞ্জি এলাকা এড়িয়ে চলা ভাল।এবং ধুমপান বর্জিত করুন।
পঞ্চমত, যদি সাধারণ কোনও জ্বর বা ভাইরাল ইনফেকশন হয়, তা হলে অবশ্যই সঙ্গে সঙ্গে ডাক্তার দেখিয়ে চিকিৎসা করুন। যাতে এটি নিউমোনিয়ার স্টেজে না যায়, সে কথা মাথায় রাখুন।
এই অভ্যাসগুলি যথাযথ ভাবে বজায় রাখলে আপনার ও এই রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতাও বাড়বে। সঠিক প্রটোকল এবং রোগের বিরুদ্ধে সঠিক নিয়ম মেনে চললে নিউমোনিয়া-সহ একাধিক সংক্রামকের বিরুদ্ধে লড়তে পারবেন আপনিও।