দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরোঃ পৃথিবীর বৃহত্তম হিমশৈল নাকি শীঘ্রই ডুবে যাবে অ্যান্টার্কটিকার জলে। তার ফলে পেঙ্গুইন, সীল এবং বিপন্ন নীল তিমির একটি বড়সংখ্যা নাকি সরাসরি ক্ষতির সম্মুখীন হবে। এ-৬৮ নামের এই হিমশৈলটি ২০১৭ সালে অ্যান্টার্কটিকা উপদ্বীপের পূর্ব উপকূলের লারসেন-সি আইস শেল্ফ থেকে ভেঙ্গে গেছিল। এই বছর পর্যন্ত এটি ধীরে ধীরে উত্তরের দিকে এগোচ্ছিল, কিন্তু এখন একটি সমুদ্র স্রোত নাকি দ্রুত তাকে দক্ষিণ আটলান্টিক মহাসাগরে ঠেলে নিয়ে যাচ্ছে বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা।
প্রায় ৯৫ মাইল দীর্ঘ এবং ৩০ মাইল চওড়া, হিমশৈল প্রায় ১৫০০ বর্গ মাইল এলাকা জুড়ে এবং ৫০০-৬০০ ফুট জলের নিচে বিস্তৃত এই হিমবাহটি। স্যাটেলাইট ছবিতে দেখা যাচ্ছে এটি একটি বন্ধ হাতের মত আকৃতির যার সামনের দিকটি ধীরে ধীরে মূল অংশ থেকে আলগা হয়ে আসছে।
আরো পড়ুনঃ অন্য এক বিশ্ব থেকে ভেসে এলো রেডিও সংকেত, ভিনগ্রহে জীবের সম্ভাবনা নিয়ে আবার উত্তেজনা বিজ্ঞানীমহলে
বিজ্ঞানীরা আশা করছেন যে এই হিমশৈলটি বর্তমানে দক্ষিণ জর্জিয়া থেকে প্রায় ৩১ মাইল দূরে অবস্থিত। যদি এটা থেমে যায়, তাহলে এটাও পরিষ্কার নয় যে হিমশৈলটি কতদিন অক্ষত থাকবে। আন্টার্টিকা বিশেষজ্ঞ ক্রিস রিডিং বলেছেন যে, সাম্প্রতিক ছবিতে দেখা যাচ্ছে যে হিমশৈল ভেঙ্গে পড়তে শুরু করেছে, এবং বিজ্ঞানীরা অধীর আগ্রহে তাকিয়ে আছেন যে এর পরে কি হয়।
ব্রিটিশ অ্যান্টার্কটিক সার্ভে-এর একজন পরিবেশবিদ জেরাইন্ট টারলিং বলেছেন, “এই ধরনের হিমশৈলের জন্য আমাদের কাছে তেমন বৈজ্ঞানিক তথ্য নেই। তিনি এ-৬৮ এর উৎপত্তিকে একটি প্রাকৃতিক ঘটনা হিসেবে বর্ণনা করেছেন, কিন্তু তিনি বলেছেন যে উষ্ণ জলবায়ুর কথা মাথায় রেখে, বিশেষ করে যে অঞ্চলে এই হিমশৈলের উৎপত্তি হয়েছে সেতা হয়তো এক স্বাদু জলের গভীর হ্রদ। তিনি আরো জানান যে, যখন হিমবাহ সমুদ্রে প্রবাহিত হয় তখন আইস শেল্ফ থেকে তা সমুদ্রমুখী হয়ে যায়।
লারসেন-সি অন্তত ১০০০০ বছর ধরে আন্টার্টিকার বুকে বিদ্যমান। ৪০ বছর আগে বিশ্ব উষ্ণায়নের হাতে এর ধ্বংসের কথা প্রথম ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছিল- কিন্তু তার মানে এই নয় যে বিশ্ব উষ্ণায়নের ফলেই এমন হচ্ছে। মেরিল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূপদার্থবিজ্ঞানী কেলি ব্রুন্ট বলেছেন, “যখন আপনি জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে কিছু বলার চেষ্টা করেন, তখন আপনি একটি ঘটনা সম্পর্কে কিছু বলতে পারেন না। জলবায়ু পরিবর্তন একটি পরিসংখ্যানগত খেলা।” কিন্তু অনেকের মতে এই বরফের চাঁই যদি সমুদ্রে মিশে যায় তবে সমুদ্রপ্রাণে এক বিশাল প্রভাব পরবে এমনকি দক্ষিণ আটলান্টিকে সুনামি পরিস্থিতির আশঙ্কাও করেছে তারা।