দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরোঃ এতদিন আকাশপথে নিভৃতে চলাচল করত ড্রোন, সামরিক বাহিনীকে একের পর এক জয় এনে দিয়েছে যে ড্রোন সেই নাকি এবার বিপর্যয়ের সময় বাঁচাবে লক্ষ্য লক্ষ্য প্রাণ। আর সেই ড্রোন কিন্তু বিদেশের কোনো নামকরা সংস্থা বানায়নি। এই ড্রোন তৈরি করেছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বি.টেক চূড়ান্ত বর্ষের দুই ছাত্রী।
আঁচল নিহালনি আর অন্বেষা ব্যানার্জি, যাদবপুরের ইলেকট্রনিক্স ও টেলিকমিউনিকেশনের ফাইনাল ইয়ারের দুই ছাত্রী এমন একটি ড্রোন তৈরি করেছে যা নাকি সাউন্ড ট্র্যাক করতে পারবে। এই ড্রোনটি তারা ৫জি কমিউনিকেশনের মাধ্যমে তৈরি করেছে। ইন্ডিয়ান মোবাইল কংগ্রেসে তাদের এই ড্রোনের প্রোটোটাইপ তাক লাগিয়ে দিয়েছে সকলকে। ডিসেম্বরের আট থেকে দশ তারিখ অবধি এই মোবাইল কংগ্রেসে তিরিশটি টিমকে চূড়ান্ত করা হয়েছিল। করোনাকালে এই ভার্চুয়াল কংগ্রেসে এই ড্রোনের কার্যকারিতা পেশ করে সকলকে অবাক করে দিয়েছে যাদবপুরের এই দুই ছাত্রী।
আরো পড়ুনঃ BREAKING করোনা থেকে নিষ্কৃতি দেবে কোরম্যাক নামের একটি লামা! বিশ্ব জুড়ে স্বস্তির নিশ্বাস!
তারা তাদের এই প্রকল্পটির নাম দিয়েছে ‘Listener Drone: A 5G Use Case for Environment, Public Safety and Disaster Management’, কোনো প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে বা দুর্ঘটনায় আটকে থাকা মানুষ বা পশুপাখির আওয়াজকে অনুসরণ করে পৌঁছে যাবে এই ড্রোন ফলে বিপর্যয় মোকাবিলায় এক যুগান্তকারী দিক খুলে যাচ্ছে বাংলার এই দুই উদ্ভাবনীর আবিষ্কারে। অন্বেষা জানিয়েছে যে এই ড্রোনের মধ্যে একটি ইন-বিল্ড সাউন্ড প্রসেসর আছে যা অনায়াসে শব্দতরঙ্গকে ধরে তাকে প্রসেস করে দ্রুত ফলাফল ঠিক করে দেবে। ফলে কোনো মানুষ নাকি কোনো পশুপাখি আটকে আছে তা বোঝা যাবে।
পাটনা নিবাসী আঁচল জানায় যে এই ড্রোন সর্বোচ্চ কোনো বিপর্যয়ে একমাত্র হাতিয়ার হয়ে উঠবে। আমরা আমপানের সময়ে দেখেছি যে কিভাবে কমিউনিকেশন স্তব্ধ হয়ে গেছিল। এমতাবস্থায় এই ড্রোন সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেবে। গতবছরের জানুয়ারি মাসে তারা এই কাজটি শুরু করেছিল। একবছর পর এর প্রোটোটাইপ নিয়ে তারা কেনিয়া পাড়ি দেয়, সেখানে নাইরোবিতে আনইয়ুজুয়াল সলিউশন কম্পিটিশনের অংশগ্রহণ করে ১৫০০০ মার্কিন ডলারের গ্রান্ট জিতে নেয়। সেই অর্থ দিয়েই তারা কাজটি সম্পূর্ণ করেছে বলে জানিয়েছে।
খুব শীঘ্র তারা এটিকে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা পরিষদের কাছে পেশ করবে। তাদের সম্মতি মিললেই তারা এটির ব্যবহারিক দিক নিয়ে কাজ শুরু করবে বলে জানিয়েছে। মাত্র ১.৫ লাখ টাকা দিয়ে তৈরি এই ড্রোন নাকি আর পাঁচটা সাধারণ ড্রোনের থেকে অনেক কম খরচে তৈরি করা যায়। যাদবপুরের দুই উদ্ভাবক ছাত্রী এর আগে ‘কাশি’র বাহক রোগীই করোনা কেরিয়ার কিনা সেই নিয়ে একটি নির্ণায়ক মেশিনও বানিয়েছিল। সেটিও নাকি এখন ব্যবহারিক স্বত্ত্বের (পেটেন্ট) দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে। এখন দেশ নয় দুনিয়াকে পথ দেখাচ্ছে বাংলার এই দুই ছাত্রী।
তথ্য সূত্র: এবিপি এডুকেশন