দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরোঃ ২১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের প্রযুক্তি, প্রকৌশল ও নির্মাণ প্রতিষ্ঠান এল অ্যান্ড টি কনস্ট্রাকশন ভারতে প্রথমবারের মতো জি+১ (গ্রাউন্ড প্লাস ওয়ান) বাড়ি নির্মাণ করতে চলেছে। এল অ্যান্ড টি কর্তৃপক্ষ বলেছে যে, ২০২২ সালের মধ্যে হাউজিং ফর অল এই প্রকল্পের অধীনে ৬ কোটি বাড়ি নির্মাণের কথা ভাবা হয়েছে।
কোম্পানির অন্যতম কর্ণধার এম.ভি.সতীশ বলেন যে, “ত্রিমাত্রিক কঙ্ক্রিট ডিজাইন এমন একটি প্রযুক্তি যার মাধ্যমে নির্মাণ পদ্ধতিতে আমূল ভাবে পুনঃনির্ধারণ করার সম্ভাবনা রয়েছে এবং আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে ত্রিমাত্রিক এই বাড়ি নির্মাণে আমাদের ক্রমবর্ধমান দক্ষতা প্রদর্শনের মাধ্যমে আমরা স্বয়ংক্রিয় রোবটিক নির্মাণের সীমানাকে টেনে আনতে সক্ষম হয়েছি,”।
আরো পড়ুনঃ সাফল্য বাঙালি পড়ুয়াদ্বয়ের! বিপর্যয়ের সময়ে মানুষ খুঁজে বের করবে যাদবপুরের ড্রোন!
ত্রিমাত্রিক মুদ্রিত ভবন বা যাকে থ্রি-ডি প্রিন্টেড বলা হচ্ছে, তা ৭০০ বর্গ ফুট এলাকায় নির্মাণ করা হয়েছে। L&T কনস্ট্রাকশনের কাঞ্চিপুরমে এটি তৈরি করা হয়েছে। এম.ভি. সতীশ আরো বলেন যে; এই ত্রিমাত্রিক মুদ্রণ শুধুমাত্র নির্মাণ গতি ত্বরান্বিত করবে তাই না, একই সাথে বাড়ি নির্মাণ-এর মান উল্লেখযোগ্যভাবে উন্নত করবে।
এই 3D-প্রিন্টেড বাসভব যা কিনা ৭০০ বর্গ ফুট এলাকা জুড়ে নির্মিত হয়েছে তার নির্মাণে কিছু প্রাথমিকভাবে উপলব্ধ নিয়মিত নির্মাণ উপকরণ ব্যবহার করে একটি বিশেষ ইন-হাউস উন্নত কংক্রিট মিশ্রণকে ব্যবহার করা হয়েছে। বাড়িটির ওয়েল্ডেড জাল ব্যবহার করে উল্লম্ব শক্তি বার এবং অনুভূমিক পরিবেশক উভয় দিক দিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে যা ভারতীয় বাড়ি নির্মাণের সবরকম বিধিকে মেনেই তৈরি হয়েছে। বলা হচ্ছে যে এই বাড়ি নির্মাণ-এর খরচ যথেষ্ট অনুকূল। অনুভূমিক স্ল্যাব বাদ দিলে, পুরো বিল্ডিং কাঠামোটি একটি সম্পূর্ণ স্বয়ংক্রিয় ত্রিমাত্রিক প্রিন্টার ব্যবহার করে মাত্র ১০৬ মুদ্রণ ঘন্টার মধ্যে একটি পরিবেশ বান্ধব বাড়ি বানানো সম্ভব হয়েছে।
ত্রিমাত্রিক মুদ্রণ এমন একটি প্রক্রিয়া, যেখানে সমস্ত উপাদান কম্পিউটার নিয়ন্ত্রণের অধীনে মুদ্রিত হয়ে এমন একটি ত্রিমাত্রিক পণ্য নির্মাণ করে যার দ্বারা অতি দ্রুত প্রোটোটাইপ, জটিল আকৃতি এবং ছোট ব্যাচ উৎপাদন করা যায়। বিশেষ ধরনের পলিমার, মেটাল অ্যালয় ইত্যাদি ব্যবহার করে এই 3D কংক্রিট মডেল ব্যবহার করে বাড়ি নির্মাণের কাজ এখন সারা বিশ্বে চলছে। এর আগে ২০১৯ সালের নভেম্বর মাসে এল এন্ড টি থেকে একটি ২৪০ বর্গফুট ও এক-BHK অ্যাপার্টমেন্ট প্রিন্ট করেছিল, সাধারণ ইডাব্লিউএস বিল্ডিং লেআউটের সাথে সামঞ্জস্য রেখে, আর তারপরেই এই ত্রিমাত্রিক বাড়ি নির্মাণ করে তার সফলতা পেয়েছে। তাই এখন দেশের মাটিতে বাড়ি নির্মাণের এই প্রকল্প হয়তো অনেক মানুষের ‘নিজের বাড়ির’ শখপূরণের একমাত্র সহায়ক হয়ে উঠতে পারে।