দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: করোনার আশঙ্কা আর লকডাউনে অর্থনীতির অশনি সংকেত এই দুইয়ের মাঝে পড়ে চিঁড়ে চ্যাপটা হয়ে যাওয়া জীবনে শান্তি নেই একটুকুও। লকডাউনের জেরে ঘর বন্দী কিন্তু তাও দানা বাঁধছে অসংখ্য রোগ! হ্যাঁ, বদ্ধ ঘরে থেকেও রোগের হাত থেকে কিন্তু আমার আপনার নিস্তার নেই। কিন্তু কী ঘটছে সেখানে?
বিশেষজ্ঞদের মতে ঘরবন্দী মানুষদের স্মার্টফোনের ব্যবহার কিন্তু বেড়েছে অনেক শতাংশ। এই একুশতম শতকের ডিজিটাল যুগে স্মার্টফোন আমাদের প্রত্যকের শরীরের অঙ্গের মত হয়ে গিয়েছে। কাজেই স্মার্টফোন হাতছাড়া হলেই অস্বস্তি। এমন অস্বস্তিতে পড়েছেন প্রায় ৯০% স্মার্টফোন ব্যাবহারকারীই। আত্মবিশ্বাসও যেনো তলানিতে গিয়ে ঠেকছে। অশান্ত মন, এলোমেলো ভাবনা এই সবই কিন্তু ঘোরাফেরা করছে ওই ডিজিট্যাল ডিভাইসটিকে কেন্দ্র করেই।
কিন্তু রোগ টা আসলে কী? হ্যাঁ, সে বিষয়েই। একটু লক্ষ্য করে দেখুন তো উপরে বলা উপসর্গগুলি কি আপনার শরীরেও রয়েছে? যদি এর একটিও থেকে থাকে, তবে স্পষ্ট জেনে রাখুন,আপনি অ্যাংজাইটি, অবসেসিভ কমপালসিভ ডিসঅর্ডারের মতো ঘাতক রোগের কবলে পড়েছেন আর তাতে আপনাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়েছে ওই স্মার্টফোনটিই।


এবার আশা যাক গবেষণার কথায়, সম্প্রতি একটি সংস্থা পর্তুগাল জুড়ে স্মার্টফোন ব্যবহারকারীদের উপর একটি গবেষণা চালায়। এই সমীক্ষাটি পর্তুগালের ৪৯৫ জন ১৮-২৪ বছর বয়সিদের উপর চালানো হয়েছিল। সেখানে দেখা যায়, অধিকাংশ ব্যাবহারকারীই স্মার্টফোনটি অন্তত চার থেকে সাত ঘণ্টা ব্যবহার করেন। আরও দেখা যায় যার স্মার্টফোনের প্রতি আসক্তি যত বেশি, তাঁরই স্মার্টফোন ছেড়ে থাকার উদ্বেগও তত বেশি’। সেই প্রকাশনাতে দেখতে পাওয়া গিয়েছে যারা নিজেদের স্মার্টফোনের সাথে দূরত্ব থাকা নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন তারা আসলে প্রতিদিন ধীরে ধীরে ওপরের ওই রোগগুলোর কাছে আত্মসমর্পন করেছেন।
এই সমীক্ষার সাথে জড়িয়ে থাকা ‘ওহিও স্টেট ইউনিভার্সিটির’ অধ্যাপক ‘আনা পাওলা কোরেয়া’ বলছেন- “এই রে বাড়িতে ফোনটা ফেলে এলাম বা আমার ফোনটা বেহাত হয়ে গেল এই ধরনের উদ্বেগ আসলে স্মার্টফোন ব্যবহারকারীকে একজন সাধারণ মানুষের তুলনায় অনেক বেশি মানসিক রোগের দিকে ঠেলে দেয় একজন।”
সম্প্রতি এই বিষয়ে কোরেয়া বলছেন, “আজ ফোন শুধুই কথা বলার মাধ্যম নয়। ছেলেমেয়েরা মাল্টিটাস্কিংয়ে অভ্যস্ত হয়ে উঠেছে। তাঁদের অনেকেই রীতিমতো সোশ্যাল ইনফ্লুয়েন্সার। কাজেই ফোনের চার্জ চলে যাওয়া বা ফোন হাতছাড়া হওয়ার মানেই নিজের আয়ের বলয় থেকে বিচ্যুত হওয়ার ভয়। আর এই ভয়ই অন্ধকারে ঠেলে দিচ্ছে বহু মানুষকে।”