দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: গবেষকরা একটি স্ট্যান্ড্যালোন ডিভাইস তৈরি করেছেন যা কোনও অতিরিক্ত উপাদান বা বিদ্যুতের প্রয়োজন ছাড়াই সূর্যের আলো, কার্বন ডাই অক্সাইড এবং জলকে কার্বন-নিরপেক্ষ জ্বালানীতে রূপান্তরিত করতে পারে।
কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণা দলের তৈরি এই ডিভাইসটি কৃত্রিম সালোকসংশ্লেষ পদ্ধতিতে সম্পুর্ণ ঘটনাটি ঘটিয়ে থাকে। সালোকসংশ্লেষ এমন একটি প্রক্রিয়া যেখানে উদ্ভিদ তার পাতার সাহায্যে সূর্যের আলো, কার্বন ডাই অক্সাইড ও জল ব্যবহার করে তা থেকে শক্তি উত্পন্ন করে। এই ডিভাইসটিও উদ্ভিদের সেই পদ্ধতিকে নকল করে। এটি একটি উন্নত ‘ফটোশিট’ প্রযুক্তির উপর ভিত্তি করে তৈরি যা সূর্যের আলো, কার্বন ডাই অক্সাইড এবং জলকে অক্সিজেন এবং ফর্মিক অ্যাসিডে রূপান্তর করে। এই অক্সিজেন আর ফরমিক অ্যাসিডের মিশ্রণ একটি সঞ্চয় সক্ষম জ্বালানী যা হাইড্রোজেনে রূপান্তরিত করে সরাসরি ব্যবহার করা যেতে পারে।
এই ফলাফলগুলি নেচার এনার্জি জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। এই ফলাফল কার্বন ডাই অক্সাইডকে পরিষ্কার জ্বালানিতে রূপান্তর করার একটি নতুন পদ্ধতি জানায়। ওয়্যারলেস ডিভাইসটি কে মাপ মত তৈরি করে নিয়ে সৌরশক্তি চলিত খামারের মতই ব্যবহার করা যেতে পারে যেখানে সূর্যের আলো এবং জল ব্যবহার করে পরিষ্কার জ্বালানী তৈরি করা যাবে এবং প্রয়োজনীয় এনার্জি’র চাহিদা পূর্তি ঘটবে।
সৌরশক্তি ও কার্বন ডাই অক্সাইডকে ব্যবহার করে ধোঁয়াহীন জ্বালানি তৈরি জীবাশ্ম জ্বালানী (যেমন পেট্রোল, কয়লা) ইত্যাদি থেকে কার্বন নিঃসরণ রোধে এবং এর ব্যবহার কমানোর একটি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ উপায় হতে পারে। তবে অযাচিত বাই-প্রোডাক্ট ছাড়াই এই পরিষ্কার জ্বালানী উত্পাদন করা বেশ চ্যালেঞ্জিং ছিল গবেষকদের কাছে।
উল্লেখ্য ২০১৯ সালে, রিসনার গ্রুপের গবেষকরা একটি ‘কৃত্রিম পাতা’ নকশার উপর ভিত্তি করে একটি সৌর চুল্লি তৈরি করেছিলেন, যা সূর্যালোক, কার্বন ডাই অক্সাইড এবং জল ব্যবহার করে জ্বালানী তৈরি করতে পারে, এটি সিঙ্গাস নামে পরিচিত। নতুন প্রযুক্তিটি কৃত্রিম পাতার মতো দেখতে একই রকম আচরণ করলেও ভিন্নভাবে কাজ করে এবং ফর্মিক অ্যাসিড তৈরি করে।
গবেষণার সহ-লেখক ও টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কাজুনারি ডোমেনের দলের সহযোগিতায় বর্তমান গবেষণা’র ফলাফলগুলি পাওয়া গেছে। গবেষকরা এখন সিস্টেমটিকে আরও উন্নত,দক্ষতা এবং হালকা করতে কাজ করছেন। এছাড়াও, তারা বিভিন্ন উপায়ে সৌর জ্বালানী তৈরির জন্যে ডিভাইসটি ব্যবহার করতে অন্যান্য অনুঘটকও খুঁজে বেড়াচ্ছেন। গবেষক রিজনার বলেন “আমরা আশা করি যে এই প্রযুক্তিটি টেকসই এবং ব্যবহারিক সৌর জ্বালানী উত্পাদনের দিকে মানব সভ্যতাকে অনেকটাই এগিয়ে দেবে।”