দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: নভেল করোনা ভাইরাস বা কোভিড-১৯ থেকে রেহাই পাওয়ার জন্যে উন্নত, উন্নয়নশীল থেকে অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে পরা সব দেশেই চলছে নিরন্তর গবেষণা। কোভিড-১৯ মহামারী রুখতে কেউ তৈরি করতে চাইছেন ভ্যাকসিন, কেউ বা ন্যাজাল স্প্রে, আর এবার সেই তালিকায় অন্তর্ভূক্ত হলো এক নতুন ফেস মাস্ক।
এবার বিজ্ঞানীরা সফলভাবে তৈরি করলেন এক নতুন ফেস মাস্ক। এই ফেসমাস্ক এর প্রধান উপাদান গ্রাফিন। যা অ্যান্টি ব্যাক্টেরিয়াল। বিজ্ঞানীদের দাবি গ্রাফিন মাস্কগুলি ৮০ শতাংশ কার্যকরী। শুধু তাই নয় এই মাস্ক এর একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো, এটির ক্ষমতা সূর্যের আলোয় বেড়ে ১০০ শতাংশ হয়ে দাঁড়ায়। আর এই ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্যে প্রয়োজন শুধুমাত্র ১০ মিনিট সূর্যের আলো।


হটাত্ মাস্ক তৈরির পেছনে কেন পড়লেন বিজ্ঞানীরা? এই বিষয়ে গবেষকরা জানাচ্ছেন, যে সার্জিক্যাল মাস্ক আমরা সাধারণত ব্যবহার করে থাকি সেগুলি মোটেই অ্যান্টি ব্যাক্টেরিয়াল নয়। আর এই মাস্ক থেকে অন্যদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়তে পারে সংক্রমণ। সংক্রমণের সম্ভাবনা আরও বেড়ে যায় যখন কেউ ব্যবহৃত মাস্কের দূষিত অংশটি অসাবধানতায় ছুঁয়ে ফেলে বা যখন সেই মাস্কগুলি ব্যবহার করার পর সঠিক ভাবে বাতিল করা হয় না।
বিজ্ঞানীদের এই মাস্ক তৈরির যাবতীয় গবেষণা রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে ACS Nano (এসিএস ন্যানো) নামক এক জার্নালে। করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে এই মাস্ক কতটা সফল ? এই প্রশ্নের উওর খুঁজতে গিয়ে প্রাথমিক পরীক্ষায় দেখা গিয়েছে, এই মাস্ক এখনো অবধি দুই প্রজাতির কোরোনাভাইরাসকে রুখে দিতে পুরোপুরি সফল। সুতরাং এই মাস্ক মুখে পড়লে শরীরে করোনা প্রবেশ নৈব নৈব চ। এই গবেষণার সাফল্য এই কঠিন সময়ে আশার আলো বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা।


এই মাস্ক নিয়ে প্রশ্নের উত্তরে হংকং বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কিছু বিশেষজ্ঞ জানিয়েছেন, এই গ্রাফিন মাস্ক তৈরি করা খুব সহজ এবং তা অল্প খরচেই তৈরি করা সম্ভব। উল্লেখ্য, গবেষণাদলের প্রধান ইয়ে রুকুয়ান গ্রাফিন তাঁর অ্যান্টি ব্যাক্টেরিয়াল তথ্যের জন্য বিখ্যাত। গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে, এই মহামারী শুরুর বেশ কিছুদিন আগেই এই মাস্কের ধারণা তিনি পোষণ করেছিলেন। আর তখন থেকেই তিনি লেজার-ইনডিউসড গ্রাফিন মাস্কবানানো শুরু করেন।
এই মাস্ক কতটা শক্তিশালী সেটা বোঝার জন্যে জন্যে রিসার্চ টিম E.Coli নামক এক ব্যাকটেরিয়ার উপর পরীক্ষা করে জানতে পারে, এই গ্রাফিন ৮২ শতাংশ ক্ষমতাশালী। গ্রাফিনের পাশাপাশি মাস্ক বানানোর অন্যান্য উপকরণ যেমন, সক্রিয় কার্বন ফাইবার এবং কাপড় দিয়ে পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে যে সেগুলি মাত্র ২ শতাংশ ও ৯ শতাংশ কার্যকর।
এই গবেষণায় প্রমাণ পাওয়া যায় যে ৯০ শতাংশ E.Coli ৮ ঘণ্টা পরেও বেঁচে থাকে কিন্তু সেটা গ্রাফিনে হয় না। এই গ্রাফিন বায়বীয় ব্যাক্টরিয়াদের ধ্বংস করতেও খুবই সক্ষম বলে জানা গিয়েছে। ইয়ে জানিয়েছেন, গ্রাফিনের অ্যান্টি-ব্যাক্টেরিয়াল গুণ সম্পর্কে আরও গবেষণা করতে আগ্রহী তারা।