দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা শুক্রগ্রহের বায়ুমন্ডলে ফসফিন গ্যাস সনাক্ত করার পর সেই গ্যাসে ভাসমান জীবিত প্রাণী থাকার বিষয়টি বিবেচনা করছেন যদিও তারা সঠিকভাব এর ব্যাখ্যা দিতে পারেননি, পুরোটাই এখনো ধারণা পর্যায়ে রয়েছে।
ফসফিন গ্যাসের অণু একটি ফসফরাস পরমাণু এবং তিনটি হাইড্রোজেন পরমাণু দিয়ে গঠিত। পৃথিবীতে, ফসফিন জীবনের সাথে জড়িত। এগুলি জীবাণু যেমন পেঙ্গুইনের পায়ে ,অথবা অক্সিজেন-বিহীন পরিবেশে বাস করে যেমন জলাশয়ে’র ময়লা বা আবর্জনা’র স্তুপে বাস করে, যে কারণে এটি কটু গন্ধ ছড়ায়।


যুক্তরাজ্যের কার্ডিফ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জেন গ্রিভস এবং তার সহকর্মীরা এই প্রশ্নটি করছেন নিশ্চিতভাবে, শুক্রে কোন কারখানা নেই; এবং অবশ্যই কোন পেঙ্গুইন নেই। তাহলে এই ফসফিন এলো কোথা থেকে? আর এই গ্যাস কেন, গ্রহের পৃষ্ঠ থেকে ৫০ কিলোমিটার উপরে ভাসছে?
তারা নেচার অ্যাস্ট্রোনমি জার্নালে একটি গবেষণাপত্র প্রকাশ করেছেন যেখানে শুক্রগ্রহে ফসফিন সম্পর্কে তাদের পর্যবেক্ষণের বিস্তারিত বর্ণনা রয়েছে। সেই সাথে তারা এই অণুটি কটি প্রাকৃতিক, অজৈব উৎপত্তি হতে পারে তা দেখানোর জন্যও যে গবেষণা করেছে তাও এই প্রকাশনাতে উল্লেখ রয়েছে।
জেন গ্রিভস বলেন- “শুক্র’র অবস্থা সম্পর্কে আমরা যা জানি, তা দেখে, কেউ এখনো ফসফিনের একটি অ্যাবায়োটিক পথ বর্ণনা করতে সক্ষম হয়নি,আর যে তা সনাক্ত করা হয়েছে তাও নয়। এর অর্থ শুক্রে জীবনের উৎস নিয়ে এবার আমাদের বিবেচনা করা উচিত।”
উল্লেখ্য, অধ্যাপক গ্রিভসের দল প্রথমে হাওয়াইয়ের জেমস ক্লার্ক ম্যাক্সওয়েল টেলিস্কোপ ব্যবহার করে ভেনাসের ফসফিন সনাক্ত করে, এবং তারপর চিলির আতাকামা লার্জ মিলিমিটার/সাবমিলিমিটার অ্যারে ব্যবহার করে তার উপস্থিতি নিশ্চিত করে।
গ্রিভস বলেন এই বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ ও আকর্ষণীয় এই কারণে যে আমাদের সৌরজগতের অন্য কোথাও প্রাণের কথা চিন্তা করার সময় শুক্র কখনোই তালিকার শীর্ষে নেই। পৃথিবীর তুলনায়, এটা একটা নরকের সমান। ৯৬% কার্বন ডাই অক্সাইড দিয়ে গঠিত বায়ুমণ্ডল নিয়ে শুক্র একটি পলাতক গ্রীনহাউস। যার পৃষ্ঠের তাপমাত্রা পিৎজা ওভেনের মত – ৪০০ডিগ্রি সেলসিয়াসের ও বেশি।
গ্রিভস আরও বলেন যে এই বিষয়ে আমাদের সকলেরই উচিত আরও গবেষণাতে মনোনিবেশ করা। শুক্রগ্রহের বায়ুমণ্ডলে প্রাণের ন্যূনতম সম্ভাবনা থাকলে সেটা এই মহাবিশ্বে প্রানের উত্স সন্ধানে বিশেষ সহায়ক হবে।