দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: যে করোনা ভাইরাস নিয়ে এতো হইচই শোরগোল সেই ভাইরাসের স্পষ্ট ছবি এতোদিন পাওয়া যায়নি। অবশেষে এবার হাতে এল SARS-CoV-2’র বেশ কিছু পরিষ্কার ছবি।
উল্লেখ্য, বৈশ্বিক মহামারী ঠেকানোর উদ্দেশ্যে বেশ কয়েকটি দেশের বিভিন্ন বিজ্ঞানী, গবেষক, চিকিত্সক, পেশাদাররা কার্যকর চিকিত্সা এবং প্রতিরোধমূলক উপায়গুলি খুঁজতে গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন। আর এই গবেষণায় ভাইরাস সম্পর্কে আরও তথ্য আহরণের জন্য কঠোর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা। তবে এই প্রথম বিজ্ঞানীদের হাতে করোনা ভাইরাসের এত পরিষ্কার আর স্পষ্ট ছবি উঠে এল।
উল্লেখ্য, এতদিন পর্যন্ত মানবদেহের ফুসফুসে করোনা ভাইরাসের ঘনত্ব কতোটা তা সঠিকভাবে বুঝতে সক্ষম হচ্ছিলেন না বিজ্ঞানীরা। ফলে গবেষণার কাজ করতে অসুবিধা হচ্ছিল। এই পরিস্থিতিতে এবার নর্থ ক্যারোলিনা চিলড্রেন্স রিসার্চ ইনস্টিটিউট ইউনিভার্সিটির গবেষক ও পেডিয়াট্রিক্সের সহকারী অধ্যাপক ক্যামিল এহরে সারস-কোভি -২ এ সংক্রামিত এমন কোষগুলির চিত্র পেতে সক্ষম হয়েছেন যা বিজ্ঞানীদের চমকে দিয়েছে।
ক্যামিলি-র এই গবেষণাগারে এই সার্স-কোভ ২ জীবাণু সংক্রমণের ছবি তোলা সম্ভব হয়েছে। গবেষণাগার সেটিংয়ে গবেষকরা ভাইরাসের সংক্রমণকে মানুষের শ্বাসনালীর উপকোষে প্রতিস্থাপন করেছিলেন। উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন ইলেক্ট্রন মাইক্রোস্কোপে লাগাতার ৯৬ ঘণ্টা ধরে পর্যবেক্ষন করার পর সংক্রমণের এই স্পষ্ট ছবি ধরা পড়েছে।


নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অফ মেডিসিনে এই ছবিটি প্রকাশিত হয়েছে। এই ছবিগুলি যাতে স্পষ্ট বোঝা যায় তার সুবিধার জন্য ছবিগুলির বিশেষ অংশে বিভিন্ন রং করা হয়েছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে মিউকাসের মতো করোনার জীবাণু ছেয়ে যাচ্ছে ফুসফুসের কলা-কোষগুলিতে।
SARS-CoV-2 ভাইরাসের জীবাণুটি অনেকটা আমাদের চুলের মতো দেখতে হয়।যেগুলি শ্বাসযন্ত্রের এপিথেলিয়াল কোষে গিয়ে বাসা বাঁধছে। এই জীবাণুর মাথাগুলি’কে বলা হয় ‘cilia tips’ অর্থাৎ চুলের মতো গঠন।
গবেষকরা জানাচ্ছেন, এ ভাবেই একজনের শ্বাসযন্ত্র থেকে অন্যজনের শরীরে ঢুকে পড়ছে করোনার জীবাণু। পুরো পদ্ধতিটাই হচ্ছে নাক বা মুখের মাধ্যমে। ফলে সবার আগে সাবধান হতে হবে নাক-মুখ ঢাকার ক্ষেত্রে’। এক্ষেত্রে মাস্ক পরা ও সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার মতো বিধি নিষেধগুলো পালন করতেই হবে।
এই ছবিটি একজন ব্যক্তির তীব্র COVID-19 বিকাশ এবং তা অন্যকে সংক্রমণ করার সম্ভাবনা ঠিক কতটা তা নির্ধারণ করতে সহায়তা করতে পারে। এই চিত্রগুলি সেই গবেষণাগুলিকেও সমর্থন করে যা ভাইরাসের সংক্রমণকে কমিয়ে দেওয়ার জন্য মুখোশ পরার প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেয়।