দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: কোভিড-১৯ মহামারী সৃষ্টিকারী নভেল করোনা ভাইরাসের মৃত্যু সূর্যের হাতেই! হ্যাঁ, সাম্প্রতিক এক গবেষণাতে দেখা গিয়েছে বিশেষ এক ধরনের অতিবেগুনি রশ্মির দ্বারা পুরোপুরি ধ্বংস করা যায় এই মারণ ভাইরাসকে। আর এই বিষয়টি আমেরিকার একটি গবেষণাপত্রে দাবি করা হয়েছে।
ঐ গবেষণা’য় অংশগ্রহণকারী বিজ্ঞানীদের মতে, যে বিশেষ ধরণের অতিবেগুনি রশ্মি বা আলট্রাভায়োলেট রে বিকিরণ করোনা নিধনে ব্যাবহার করা হয় তার মানবশরীরের ওপরে এখনো কোনো ক্ষতিকর প্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি এবং এই রশ্মির সুবিধা এই যে, অনেক বড় এবং ভিড়ের জায়গা সহজেই জীবাণুমুক্ত করে ফেলা যাবে। আর এর জন্যে জায়গা ফাঁকা করার দরকারও নেই।
এই বিষয়ক সম্পূর্ণ গবেষণাপত্রটি সম্প্রতি আমেরিকান জার্নাল অফ ইনফেকশন কন্ট্রোল-এ প্রকাশিত হয়েছে। সেই গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে যে আলট্রাভায়োলেট-সি (ইউভিসি) রশ্মি করোনাভাইরাস নিকেশ করতে সক্ষম তার ওয়েভলেংথ ২২২ ন্যানোমিটার এবং সবচেয়ে মজার বিষয় এই ওয়েভলেংথ এর অতিবেগুণী রশ্মি কোনভাবেই মানুষের ত্বক ভেদ করতে পারে না বা শরীরের কোষ মারতে পারেনা।
এই গবেষণাতে অংশগ্রহণ করেছেন জাপানের হিরোশিমা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা। এই গবেষকদল ২২২ ন্যানোমিটার যুক্ত ইউভিসি বা ফার-ইউভিসি সংক্রান্ত এই পরীক্ষার আগের আর এক পরীক্ষায় জানতে পারে, মরশুমি করোনা ভাইরাস খতম করতে এই আলোকরশ্মির জুড়ি মেলা ভার। উল্লেখ্য, এই সিসনাল ভাইরাসের সঙ্গে কাঠামোগত সাদৃশ্য রয়েছে নভেল করোনাভাইরাসের।
ঐ গবেষণাপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে যে, এই পরীক্ষায় ব্যবহৃত ২২২ ন্যানোমিটার ওয়েভ লেংথ যুক্ত ইউভিসি (uvc) ২৫৪ ন্যানোমিটার যুক্ত ইউভিসি-র চেয়ে মানুষের শরীরে কম ক্ষতিকর, কারণ এই রশ্মি মানুষের ত্বক ও চোখ ভেদ করতে পারে না। তাই এটি সম্পূর্ণ সুরক্ষিত জীবাণু দমনের একটি কার্যকর প্রযুক্তি।’
ঐ গবেষণায় বিজ্ঞানীরা দেখিয়েছেন মাত্র ৩০ সেকেন্ডের মধ্যেই ৯৯.৭% নভেল করোনাভাইরাস খতম করেছে ঐ রশ্মি। এর পাশাপাশি বিজ্ঞানীরা এও জানিয়েছেন যে ২৫৪ ন্যানোমিটার ওয়েভ লেংথ যুক্ত অতিবেগুনি রশ্মির সাহায্যে যেকোনো ফাঁকা ঘর জীবাণুমুক্ত করা নিরাপদ।
উল্লেখ্য, বিজ্ঞানীদের এই খোঁজ জনবহুল পাবলিক প্লেস (যেমন, স্টেশন, বাজার, হাসপাতাল করিডোর, হোটেল লবী ও রুম কে স্যানিটাইজার ছিটিয়ে জীবাণুমুক্ত করার থেকে স্বল্প সময়ের মধ্যেই আলোর সহায়তাতে সহজেই জীবাণুমুক্ত করা যাবে। সেই সাথে মানুষের শরীরেও এর কোনো প্রভাব না থাকায়, মানুষকে সরানোর ও প্রয়োজন পড়বে না।
আসন্ন পুজোতে কলকাতায় ভিড় কে এই রকম অতিবেগুনি রশ্মির সহায়তায় স্যানিটাইজের ব্যবস্থা করলে কেমন হয়?