দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: রাজস্থানের জঙ্গল এক বিরল ঘটনার সাক্ষী রইল। দীর্ঘ ৮ বছর পরে নিজের জন্মস্থানে ফিরে এল একটি বাঘ। সে ফিরে এসেছে মধ্যপ্রদেশ থেকে। আর এই ঘটনায় বিস্মিত বনকর্তারা।
যদিও জঙ্গল বিশারদরা জানাচ্ছেন যে ডোরাকাটা বাঘ বা রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারদের দীর্ঘ পথ পাড়ি দেওয়ার অভ্যাস জন্মগত। কিন্তু এবার নিজের পরিবারের কাছে শিকড়ে ফেরার অদ্ভূত দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে মধ্য প্রদেশের কুনো পালপুরের এক বাঘ। আট বছর আগে রণথম্বর অভয়ারণ্য ছেড়ে গেলেও বর্তমানে সেখানেই আবার ফিরে এসেছে সে।
বৃহস্পতিবার বন দফতর ‘টি-৩৮’ চিহ্নিত বাঘটির রণথম্বরে ফিরে আসার খবর স্বীকার করেছে। গত একমাসে তার গতিবিধি ধরা পড়েছে ক্যামেরা-ফাঁদে। ১৯ অক্টোবর বদলাও, ২৪ অক্টোবর চিরোলির কাছে এবং ১৫ নভেম্বর তাকে রণথম্বর ব্যাঘ্র প্রকল্পের ভিতরে তালেদায় ওই বাঘটিকে দেখা গিয়েছে।
তবে এই ঘটনা বিরল এই কারণে যে সাধারণত নিজের জন্মস্থানে ফিরে আসার অভ্যাস রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারদের মধ্যে দেখা যায় না। সেই কারণে তার ছবির সঙ্গে টি-৩৮ এর মা টি-১৩ এবং তার বোন নূর (টি-৩৯) এর চেহারাগত সাদৃশ্য মিলিয়ে দেখেছেন বনকর্তারা। ছবিতে হুবহু সাদৃশ্য পাওয়া গিয়েছে। এই বিষয়ে নিশ্চিত করেছেন রণথম্বর ব্যাঘ্র প্রকল্পের অধিকর্তা টি সি ভার্মা।
রয়্যাল বেঙ্গল বাঘেরা সাধারণত বহুদূর পর্যন্ত পাড়ি দিতে অভ্যস্ত। এই নভেম্বরের গোড়ায় মহারাষ্ট্র বন দফতর জানায়, রাজ্যের বুলধনা জেলার ধ্যানগঙ্গা অভয়ারণ্যে সম্প্রতি ১,৩০০ কিমি পাড়ি দিয়ে ঘাঁটি গেড়েছে একটি তরুণ বাঘ। মহারাষ্ট্রেরই যবৎমাল জেলার টিপেশ্বর ব্যাঘ্র প্রকল্পে রেডিয়ো কলার পরা বাঘটির তার জন্মস্থান ছেড়ে সেখানে পৌঁছতে প্রায় ১৫০ দিন সময় লেগেছে।
সূত্রের খবরে জানা গিয়েছে ২০১২ সালে নিজের জন্মস্থান থেকে প্রায় ১৭০ কিমি দূরে কুনোতে পৌঁছায় টি-৩৮। বেশ কয়েক বছর ধরে ওই জঙ্গলে প্রধান শিকারি ছিল সে। রণথম্বর থেকে কুনো পর্যন্ত তার গোটা যাত্রাটিই গোপন ক্যামেরায় ধরা পড়েছিল।
তবে বনকর্তাদের ধারণা, বর্ষার সময়ে প্রায় ২০০ কিমি পাড়ি দিয়ে ফের রণথম্বর ফেরে বাঘটি। মনে করা হচ্ছে, তার চেয়েও শক্তিশালী কোনও বাঘের দাপটেই ঘরে ফিরতে বাধ্য হয়েছে টি-৩৮। তবে অন্যকোন শিকারের খোঁজেও সে ফিরতে পারে বলে মত বনকর্তাদের একাংশের। এও জানা গিয়েছে যে, সম্প্রতি কুন্ডেরা রেঞ্জের দিকে এগিয়ে চলেছে বাঘটি। যদিও এখন সেই অঞ্চল শাসন করে তার বোন নূর। তবে ভাই-বোনের মুখোমুখি সাক্ষাৎ এ কী পরিস্থিতি তৈরি হবে আপাতত সে বিষয় নিয়ে যথেষ্ট চিন্তিত বন দফতর।