দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: শামুকখোল, আমাদের অভিভক্ত বাংলার জীব বৈচিত্র্য’র একটি অন্যতম উপাদান। বর্তমানে বাংলাদেশের রাজশাহীর বাঘা উপজেলার খোর্দ্দ বাউসা গ্রামের এক আমবাগানে পাঁচ বছর ধরে বাসা বাঁধছে শামুকখোল। নভেম্বর শেষে এই পাখিরা চলে যায় আবার এপ্রিল মাসে আসতে শুরু করে। দেখা যাচ্ছিল ঘুরেফিরে তারা ওই একটি বাগানেই আশ্রয় নেয়। আর পাখিদের কারণে গাছে আম হচ্ছে না, গাছও মরে যাচ্ছে।
তাই গত বছর পাখিগুলোকে তাড়িয়ে দিচ্ছিলেন বাগান মালিকেরা। বাংলাদেশ গণমাধ্যমে এমন খবর প্রকাশ হওয়ার পর পাখির আবাস রক্ষা করতে হাইকোর্ট রুল জারি করে। বন্যপ্রাণী বিভাগকে নিয়ে র্যাবও (RAB) পাখির আবাস রক্ষা করে। এর পাশাপাশি আমচাষিদের ক্ষতিপূরণ দেয়ার কথা বলা হয়।
অবশেষে সেই বাগান মালিকেরা অতিথি পাখির ‘বাসা ভাড়া’ হিসেবে নগদ অর্থ পেতে চলেছেন । গত ১ নভেম্বর পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব দীপক কুমার চক্রবর্তীর স্বাক্ষরিত একটি পত্রে বন অধিদপ্তরের অনুন্নয়ন খাত থেকে মোট পাঁচজন বাগান মালিককে পাখির বাসার জন্য মোট ৩ লাখ ১৩ হাজার টাকা ইজারা বাবদ অর্থ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
বনবিভাগ সূত্রে খবর, পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উন্নয়ন খাত থেকে বন অধিদপ্তরকে খোর্দ্দ বাউসা গ্রামের আমবাগানে শামুকখোল পাখির বাসার জন্য আমচাষিদের ক্ষতিপূরণ হিসেবে এই বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। যে পাঁচজন আমবাগান মালিক এই বরাদ্দ পাচ্ছেন তারা হলেন- খোর্দ্দ বাউসা গ্রামের মঞ্জুর রহমান, সানার উদ্দিন, সাহাদত হোসেন, শফিকুল ইসলাম ও ফারুক আনোয়ার।
শনিবার সকালে পাখির অবস্থা দেখতে বাগানে যান বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ অঞ্চল ঢাকার বন সংরক্ষক মিহির কুমার দে, রাজশাহী বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) জিল্লুর রহমান, রাজশাহী সামাজিক বনবিভাগের সহকারী বনসংরক্ষক মেহেদী হাসান, বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র সংরক্ষণ কর্মকর্তা রাহাত হোসেন, ওয়াইল্ড লাইফ রেঞ্জার হেলিম রায়হান ও বন্যপ্রাণী পরিদর্শক জাহাঙ্গীর কবীর। এ সময় তারা বাগান মালিক ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলেন।
গতকাল রোববার সকালে ওই বাগানে দেখা যায় শত শত শামুকখোল পাখির। বাগানে গাছের মালিকেরাও ছিলেন। তারা জানান, তাদের নামে পাখির বাসার জন্য টাকা বরাদ্দ হয়েছে শুনেছেন। তবে এখনও হাতে পাননি। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, কয়েকদিনের মধ্যেই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে আমবাগানের মালিকদের আনুষ্ঠানিকভাবে টাকা দেয়া হবে। তবে তারাও কখনো মন থেকে চাননি এই পাখি গুলোকে তাড়িয়ে দিতে কিন্তু রুটি রুজির কারণে বাধ্য হয়েছিলেন। এখন সরকার দায়িত্ব নেওয়াতে তার যথেষ্ট আনন্দিত।