দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরোঃ বছরের প্রতিটি সময় প্রহরীর তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে নজরদারি চলে ভূস্বর্গ কাশ্মীরে। প্রায়ই বাতাসে মেশে বারুদের তীব্র গন্ধ। জীবনযাত্রা অত্যন্ত কঠিন ও আশঙ্কা পূর্ণ। তবে সব কিছুকে এক মুহূর্তে ছাপিয়ে যায় কাশ্মীরের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য। যার ফলে পৃথিবীর প্রতি বিন্দু থেকে প্রকৃতিপ্রেমীরা, সৌন্দর্য্যপ্রেমীরা ছুটে আসে এই উপত্যকায়। ছুটে আসে একবার পদচিহ্ন এঁকে বরফের চাদরে মোড়া কাশ্মীরকে দুচোখ ভরে দেখার নেশায়।


প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোর নিজেদের স্বার্থান্বেষণের কোন্দলে পড়ে প্রায়ই ‘লাল’ হয়ে ওঠে বরফের ননীশুভ্র বুক! অত্যন্ত বিপদজনক ভাবে বেঁচে থাকতে হয় তাদের। নেই কোনো কিছুরই নিশ্চয়তা। তাই তাদের জীবনে এক টুকরো খুশি তাদের কাছে বড় পাওয়া।


তবে বর্তমানে করোনা মহামারীর মধ্যেও প্রশাসন থেকে কাশ্মীরি ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষের মধ্যে খুশির বাতাবরণ। কারণ এবছর অক্টোবর-নভেম্বর মাসে কাশ্মীর উপত্যকায় পর্যটকের সংখ্যা গত সাত বছরের তুলনায় অনেক বেশি। ভেঙে দিয়েছে গত কয়েক বছরের সমস্ত রেকর্ড। এবছর সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, নভেম্বর মাসে কাশ্মীর ভ্রমণ করেছেন প্রায় ১ লক্ষ ২৭ হাজার ৬০৫ জন পর্যটক। গত বছর নভেম্বর মাসে যে সংখ্যা ছিল মাত্র ৬,৩২৭ জন।


পর্যটক টানতে কাশ্মীরে বিভিন্ন ধরনের উৎসবের আয়োজন করা হয়। এ বছর ও তারা বিভিন্ন উৎসবের আয়োজন করেছিল। এএনআই এর এক রিপোর্ট অনুযায়ী ড. জিএন ইটু, কাশ্মীর ট্যুরিজমের ডিরেক্টর জানিয়েছেন, ‘এবারের হাউসবোট উত্সব, সুফি উত্সবের মতো অনুষ্ঠানে জাতীয় স্তরের সেলেব্রিটিরা অংশ নিয়েছিলেন। সাহিত্য উত্সবের মতো কিছু আইকনিক উত্সব পরিচালনা করা হয়েছিল। যা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে একটি গুঞ্জন তৈরি করেছিল। তাই সারা বিশ্বের পর্যটকরা এবারে কাশ্মীর দেখতে বেশি আগ্রহী ছিলেন।’


তিনি আরও জানিয়েছেন, ‘নভেম্বর মাসে প্রায় ১, ২৭ হাজার পর্যটক এসেছেন ও অক্টোবরে প্রায় ৯৩ হাজার পর্যটকের আগমন হয়েছিল। আর এই সংখ্যার রেকর্ড এই প্রথম। গত সাতবছরে অক্টোবর ও নভেম্বর মাসে এত বিপুল সংখ্যক পর্যটক আসেননি।’ তার মতে, ‘COVID-19 এর দ্বিতীয় তরঙ্গের পরে পর্যটকদের আকৃষ্ট করার জন্য অন্যান্য ব্যবস্থা সহ কাশ্মীরে পর্যটন ব্যাবস্থাকে উন্নীত করার জন্য দেশে যে ২১টি রোডশো, প্রচার চালানোর হয়েছিল এটি তারই ফল।’


তাই এবারে পর্যটক সংখ্যা রেকর্ড ভাঙার ফলে, আগামী মরশুম গুলিতেও যাতে পর্যটকরা কাশ্মীরের প্রতি বেশি করে আকর্ষিত হয়। সেদিকে লক্ষ্য রেখে তারা এখন থেকেই আগামীদিনের পরিকল্পনা নিচ্ছে। আগামীতে বড়দিন, স্নোকার্নিভাল, আন্তর্জাতিক পর্বত দিবস, নববর্ষকে মাথায় রেখে আরও নতুন নতুন পরিকল্পনা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কারণ কাশ্মীরে পর্যটক বাড়লে তা স্থানীয় মানুষের রোজগারের সুরাহা করবে।
লেখা – তানিয়া তুস সাবা।