দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: গর্ভবতী মায়ের ঠান্ডা পানীয় থেকে সাবধান! বাজারে কিনতে পাওয়া যায় এমন জাতীয় ঠান্ডা পানীয়তে চিনির মাত্রা বেশি রয়েছে এমন ঠান্ডা পানীয় খেলে মায়ের শারীরিক ক্ষতি তো হয়ই, সেই সঙ্গে বাচ্চা জন্ম নেওয়ার পর তার অ্যাস্থেমার মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও বৃদ্ধি পায়।
গর্ভাবস্তায় যে মায়েরা বেশি মাত্রায় কোল্ড ড্রিঙ্ক খেয়ে থাকেন,তাদের বাচ্চারা জন্ম নেওয়ার ৭-৯ বছরের মধ্যে ক্রণিক অ্যাস্থেমায় আক্রান্ত হয়। তাই আপনার বাচ্চাকে যদি সুন্দর, স্বাস্থ্যকর ভবিষ্যত উপহার দিতে চান, তাহলে ভুলেও এই নয় মাসে একবারও কোল্ড ড্রিঙ্ক খাবেন না।
কোল্ড ড্রিঙ্কের সঙ্গে যে কেবল অ্যাস্থেমা রোগেরই যোগ রয়েছে এমন নয়। একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে নিয়মিত এমন পানীয় খেলে নানা ধরনের রোগও দেখা দিতে পারে।
এক বোতল কোল্ড ড্রিঙ্ক খেলে আমাদের শরীরে প্রায় ১৪০ গ্রাম ক্যালোরি প্রবেশ করে। এই পরিমাণ ক্যালোরিকে বার্ন করার জন্য যে মাত্রায় শরীরচর্চা করা উচিত, তা অনেকেই করেন না। ফলে শরীরের জমতে থাকা এই অতিরিক্ত ক্যালোরি এক সময়ে গিয়ে ওজন বৃদ্ধির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
কোল্ড ড্রিঙ্ক খেলে কীভাবে আপনার শরীরের ক্ষতি হতে পারে তা জেনে নিন:
আরো পড়ুন:
রক্তচাপ বেড়ে যায়:
ডায়েট সোডা এবং কোল্ড ড্রিঙ্কে সোডিয়ামের পরিমাণ খুব বেশি থাকে। তাই তো এমন ধরনের পানীয় বেশি মাত্রায় খেলে শরীরে সোডিয়ামের মাত্রা খুব বেড়ে যায়। ফলে ব্লাড প্রেসার বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা থাকে। এই কারণেই প্রেসারের রোগীদের আর গর্ভবতী মায়েদের কোল্ড ড্রিঙ্ক খেতে বারণ করেন চিকিৎসকেরা।
দাঁতের ক্ষতি হয়:
ডায়েট সোডায় অ্যাসিডিক এলিমেন্ট খুব বেশি থাকে। যে কারণে এই ধরনের পানীয় খেলে দাঁতের ক্ষয় হতে শুরু করে। সেই সঙ্গে নানাবিধ দাঁতের রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও বৃদ্ধি পায়।
ওজন বৃদ্ধি করে:
এই ধরনের পানীয়তে ক্যালোরি মাত্রা খুব বেশি থাকে। ফলে কোল্ড ড্রিঙ্ক বা ডায়েট সোডা বেশি মাত্রায় খেলে ওজন বৃদ্ধির সম্ভবনা বহুগুণে বৃদ্ধি পায়। সেই সঙ্গে হজম ক্ষমতা কমে যাওয়ার কারণে আরও নানা ধরনের রোগের প্রকোপও বৃদ্ধি পায়।
কিডনির কর্মক্ষমতা কমে যায়:
বেশি মাত্রায় কোল্ড ড্রিঙ্ক বা ডায়েট সোডা খেলে কিডনি ফাংশন ব্যাহত হয়। সেই সঙ্গে কিডনি স্টোনের আশঙ্কাও বৃদ্ধি পায়। আসলে এই ধরনের পানীয়, ইউরিনে অ্যাসিড এবং খনিজের ভারসাম্যকে নষ্ট করে দেয়। সেই কারণে কিডনি স্টোন হওয়ার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়।
কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি পায়:
প্রতিদিন কোল্ড ড্রিঙ্ক খেলে চোখে কোলেস্টেরলের বৃদ্ধি ঘটে। ফলে হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কা বাড়ে। শুধু তাই নয়, বেশি পরিমাণে কোল্ড ড্রিঙ্ক খেলে আপনার স্ট্রোক হওয়ারও সম্ভাবনা থাকে।
হার্টের রোগ হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়:
প্রতিদিন ২ ক্যান কোল্ড ড্রিঙ্ক খেলে হার্টের রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা প্রায় ৩০ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। আর হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কা বৃদ্ধি পায় প্রায় ৫০ শতাংশ। এইধরনের পানীয় হয়তো আপনাদের তেষ্টা মেটায়, মানসিক শান্তিও দেয়। কিন্তু বাস্তবে আপনাকে হার্টকে একেবারে অকেজ করে দেয়।
কোষের মারাত্মক ক্ষতি হয়:
ডায়েট সোডা এবং বেশিরভাগ কোল ড্রিঙ্কেই সোডিয়াম বেঞ্জোএট নামে একটি উপাদান থাকে, যা কোষের মারাত্মক ক্ষতি সাধন করে।
শরীরে জলের ঘাটতি দেখা দেয়:
অনেকেরই বাড়ির বাইরে তেষ্টার সময় প্রথম পছন্দ হয় কোল্ড ড্রিঙ্ক। এমন অভ্যাস কিন্তু একেবারেই স্বাস্থ্যকর নয়। কারণ এই ধরনের পানীয়তে এমন কিছু উপাদান থাকে, যা আপনার শরীরে প্রবেশ করা মাত্র মস্তিষ্কের কাছে সিগনাল যায় যে শরীরে জলের অভাব দেখা দিয়েছে। ফলে একের পর এক নানা ধরনের সমস্যা দেখা দিতে শুরু করে।
হাড়ের রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে:
কোল্ড ড্রিঙ্কের স্বাদ বাড়াতে তাতে ফসফরিক অ্যাসিড নামে একটি উপাদান ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এই উপাদানটির মাত্রা শরীরে বৃদ্ধি পেলে ক্যালসিয়ামের মাত্রা কমতে শুরু করে। আর ক্যালসিয়ামের সঙ্গে যেহেতু হাড়ের স্বাস্থ্যের সরাসরি য়োগ রয়েছে, তাই এমনটা হলে স্বাভাবিকভাবেই হাড়ের ক্ষতি হতে শুরু করে।