দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো:গরম খাবার অনেকেরই পছন্দ। আবার রান্নার সুবিধার জন্য অনেকে একসঙ্গে বেশি পরিমাণ রান্না করে রেখে দেন এবং সেটি গরম করে পরে খান। রোজকার জীবনে অনেকে সময় বাঁচানোর জন্য রান্না করে ফ্রিজে রেখে দেন। পরে সেই খাবার গরম করে খান। কিন্তু কি জানেন, কিছু খাবার বারবার গরম করে খেলে আপনি পড়তে পারেন ভিষণ বিপদে।এতে যেমন খাবারের পুষ্টিগুণ কমে, তেমন বেড়ে যায় রোগের ঝুঁকি।
চিকিৎসকেরা বলছেন, সবসময় টাটকা খাবার খাওয়াই উচিৎ। তাও যদি ভাত গরম করে খেতে হয়, সর্বোচ্চ একবার গরম করাই ভালো। এর থেকে বেশি গরম করলে, ভাত নষ্ট হয়ে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। এছাড়াও আরও এমন খাবার আছে যেগুলি বারবার গরম করে খেলে আপনার শারীরিক অসুস্থতা দেখা দিতে পারে। জেনে নিন সেগুলি কি কি:
ভাত
ভাত রান্না করার সময় তাতে বেসিলস সিরিয়াস ব্যাক্টেরিয়া তৈরি হয়। রান্না করা ভাত আবার গরম করলে এই ব্যাক্টেরিয়া সংখ্যায় দ্বিগুণ হয়ে গিয়ে ডায়েরিয়া পর্যন্ত হতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ব্যাকটেরিয়া চাল সেদ্ধ করে ভাত তৈরি হয়ে যাওয়ার পরও বেঁচে থাকতে পারে।ভাত ঘরের স্বাভাবিক তাপমাত্রায় রেখে দিলে এই ব্যাকটিরিয়ার বংশ বিস্তার করে,আর শুরু হয় বিষক্রিয়া। আবার ভাত ৫ থেকে ৫৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় আবার গরম করা হলে এই ব্যাকটেরিয়া আরও সক্রিয় হয়ে ওঠে।
ডিম
ডিম যদি দ্বিতীয়বার গরম করা হয় তাহলে এর পুষ্টিগুণ নষ্ট হয়ে যায়। ডিমের মধ্যে নানা ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া জন্মায়। এসব ব্যাকটেরিয়া পেটের জন্য খুব ক্ষতিকর। এছাড়া ডিম দ্বিতীয়বার গরম করলে এরমধ্যে থাকা নাইট্রোজেন অক্সিডাইজড হয় যা ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। একারণে ডিম রান্না কিংবা ভাজা যেভাবেই খান না কেন, কোনোটাই দ্বিতীয়বার গরম করে খাওয়া ঠিক নয়।
মুরগির মাংস
অনেকেই সময় বাঁচানোর জন্য একবারেই অনেকটা মুরগির মাংস রান্না করে রাখেন।কিন্তু মুরগির মাংস বারবার গরম করে খাওয়া উচিত নয়। কারণ মুরগির মাংসে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন থাকে। রান্নার পরে আবার তা গরম করলে প্রোটিনের কম্পোজিশন বদলে গিয়ে তা থেকে বদহজম হতে পারে।
চা
এটা আমাদের অনেকেরই জানা যে একবার চা বানানোর পর তা ঠাণ্ডা হয়ে গেলে পুনরায় গরম করা ঠিক নয়। কারণ চায়ের মধ্যে ট্যানিক অ্যাসিড থাকে। তৈরি করা চা ফের গরম করে পান করলে লিভারের ক্ষতি হতে পারে।
পালংশাক
পালংশাককে গরম করে খেলে শরীরে কার্সিনোজেনিক এলিমেন্ট বা ক্যান্সার সৃষ্টিকারী উপাদানের পরিমাণ বেড়ে যায়। ফলে ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বহুগুণে বৃদ্ধি পায়। আসলে পালংশাকে উপস্থিত নাইট্রেট গরম করার পর নাইট্রাইটস-এ রূপান্তরিত হয়ে যায়। আর এই উপাদানটি শরীরের পক্ষে একেবারেই ভাল নয়। তাই পালংশাক রান্না করার সঙ্গে সঙ্গে খেয়ে নেওয়াই উচিত।
মাশরুম
সাধারণত মাশরুমের ফাইবার ও এনজাইম হজমে সাহায্য করে। এটি অন্ত্রে উপকারী ব্যাকটেরিয়ার কাজ বৃদ্ধিতে সাহায্য করে এবং কোলন-এর পুষ্টি উপাদান শোষণকেও বাড়াতে সাহায্য করে। আর তাই মাশরুম একবার রান্নার পরে দ্বিতীয়বার গরম করে খেলে তা আপনার পেটের জন্য অনেক ক্ষতিকর।