দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: কোভিড-১৯ বা করোনা ভাইরাস আজ এক বৈশ্বিক আতঙ্কের নাম। দৈনিক মৃত্যুর খবর অথবা নতুন কেউ আক্রান্ত হওয়ার খবর উর্ধমুখী। বিশেষজ্ঞদের মতে শারীরিক ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার মাধ্যমে কিছুটা হলেও রুখে রাখা যায় এই ভাইরাসটিকে। তবে কাজের তাগিদে অনেককেই বাড়ির বাইরে যেতেই হচ্ছে তারপর এখন লোকাল ট্রেন ও পাবলিক ট্রান্সপোর্ট সব খুলে গিয়েছে। সকলকেই চড়তে হচ্ছে বাস, ট্রেন, রিক্সা ইত্যাদি যানবাহনে। জেনে নিন কিভাবে যানবাহনে করোনা প্রতিরোধ করবেন –
যানবাহনে করোনা প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
আমাদের দেশে অনেক আগ থেকেই স্কুল, কলেজ সহ অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। কিছু কিছু অফিসেও ঘরে বসে কাজ করার অনুমতি দিয়েছে। কিন্তু বেশির ভাগ কর্মক্ষেত্রই এখনো সচল রয়েছে। তাই অফিসের উদ্দেশ্যে সকালেই বেড়িয়ে পড়েন অনেকেই।
কর্মক্ষেত্রে যাওয়ার জন্য আমরা যে যাতায়াত ব্যবস্থা গ্রহণ করছি সেটাই হতে পারে আমাদের জন্য সবচেয়ে ঝুঁকিপুর্ন। কেননা সেখানে মানুষের আনাগোনা সবচেয়ে বেশি। তবে কিছু সাবধানতা অবলম্বন করলে আমরাও থাকতে পারি সুরক্ষিত।
যানবাহনে করোনা
১) যানবাহনে করোনা প্রতিরোধে বাসে কিংবা ট্রেনে যদি আপনার সহযাত্রীটি প্রবল বেগে হাঁচি কাশি দিতে থাকে তাহলে সেটা আপনার স্বাস্থ্যের জন্য সবচেয়ে বেশি ক্ষতিকর। তাই আপনি তখনই সেই ব্যক্তি থেকে দূরত্ব বজার রাখুন। সম্ভব হলে চালক কিংবা কন্টাক্টরকে অবগত করুন। অন্যান্য যাত্রীদেরও সাবধান করে দিন। এতে ভাইরাসটি ছড়িয়ে পরবে না।
২) রাস্তাঘাটে চলাচল করার সময় সর্দি কাশি কিংবা জ্বরে আক্রান্ত কোন ব্যক্তির সংস্পর্শে এলে মাস্ক তাহলেও রুমাল দিয়ে জোরে নিজের নাক ও মুখ চেপে রাখুন। রোগীর গায়ে ভুলেও স্পর্শ করবেন না। পর্যাপ্ত পরিমাণে দূরত্ব বজায় রাখার চেষ্টা করুন। পারলে দ্রুত সেই স্থানটি ত্যাগ করুন বা অন্য যানবাহনে উঠুন।
করোনা প্রতিরোধে মাস্ক ব্যাবহার
৩) আমাদের দেশে সকালে ও সন্ধ্যায় এই দুই সময়ে ভীড় বেশি হয়। তাই চেষ্টা করুন এই দুই সময়ে আপনাকে যেন বের হতে না হয়। যানবাহনে করোনা প্রতিরোধে ভীড় এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন। অফিস থাকলে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে তারপর অফিস থেকে বের হন। বাস কিংবা অন্যান্য যানবাহন এড়িয়ে চললে আপনি অনেকটাই সুরক্ষিত থাকতে পারবেন।
৪) ট্যাক্সি, অটো, ওলা কিংবা ব্যক্তিগত গাড়ি ব্যবহার করলে অবশ্যই গাড়ির জানালা খোলা রাখার চেষ্টা করুন, এসি ব্যবহার না করাই ভালো। গাড়িতে যথেষ্ট পরিমাণে আলো বাতাস প্রবেশ করতে দিন। কেননা বদ্ধ জায়গায় ভাইরাস খুব দ্রুত ছড়ায়। আর গাড়িতে ঘেঁষাঘেঁষি করে বসবেন না। শেয়ার ট্যাক্সি বা ওলা ব্যবহার না করাই ভালো।
করোনা প্রতিরোধে হাত ধোয়া
৫) বাড়ি থেকে অফিসে গিয়ে কিংবা অফিস থেকে বাড়ি ফিরে সাবান-জল বা হ্যান্ড ওয়াশ দিয়ে ভালোভাবে হাত পরিষ্কার করে ধুয়ে নিন। কেননা যাতায়াতের জন্য আমরা যে বাহনটি ব্যবহার করছি সেটা যথেষ্ট অপরিষ্কার ও জীবাণুযুক্ত। আমরা বাসে উঠার সময় এবং বাস থেকে নামার সময় সব সময়ই বাসের হাতলে হাত রাখছি যা ক্ষতিকর ভাইরাসের আখড়া। তাই চেষ্টা করবেন টিস্যু অথবা রুমাল দিয়ে বাস কিংবা অন্যান্য যানবাহন ধরতে। সেটা সম্ভব না হলে ব্যাগে স্যানিটাইজার রাখুন। যদি সেটাও সম্ভব না হয় তাহলে বাড়ি ফিরে কিংবা অফিসে পৌঁছে ভালোভাবে হাত ধুয়ে ফেলুন।
৬) বাইরে থাকাকালীন সময়টুকু চেষ্টা করবেন নাক, মুখ ও চোখে হাত না দিতে। সবসময় হাত পরিষ্কার রাখার চেষ্টা করুন। অপরিষ্কার হাতে নাক মুখ স্পর্শ করলে জীবাণু শরীরের ভিতরে প্রবেশ করে ফেলার সম্ভাবনা থাকে। তাই হাত পরিষ্কার রাখাটা অত্যন্ত জরুরি।
হেলমেট ব্যাবহার
৭) মোটর সাইকেল অথবা ওলা শেয়ার না করাই ভালো এখন। কেননা মানুষের সংস্পর্শেই বেশির ভাগ ভাইরাস ছড়ায়। তাই নিজের বাইক থাকলে নিজেই চালান। বিএসআই মার্ক যুক্ত হেলমেট ব্যবহার করুন। বাড়ি ফিরে রোজ বাইক স্যানিটাইজ করে নেবেন। সেক্ষেত্রে শ্যাম্পু বা সার্ফ এর জল হলেই হবে।
মনে রাখবেন করোনা ভাইরাসের সাথে লড়াই করছে সারা বিশ্ব। আপনিও চেষ্টা করুন উপরোক্ত নিয়মগুলো মেনে চলতে। তাহলে ভাইরাসটি দমনে সফল হবো আমরা সকলেই। আপনার সামান্য সাবধানতা হয়তো ভাইরাসটি থেকে মুক্ত রাখতে পারে আপনাকে, আপনার পরিবারকে ও সমাজকে। সচেতন হোন, ভালো থাকুন ও সুস্থ থাকুন।