দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: মাইগ্রেনের একটা অন্যতম কারণ হচ্ছে, টেনশন। অনেকেই রাতে ঘুমোতে দেরি করেন। এর অনেকগুলি কারণ হতে পারে যেমন অফিসের কাজের চাপ এছাড়া যারা নাইট শিফটে কাজ করেন ইত্যাদি। এই কাজ শেষ করতে করতেই তাঁদের ২টো বেজে যায়। অতঃপর সেইভাবে ঘুম আসতে চায় না। কারণ ঘুমের সময় যখন ঘুম পায় তখন জোর করে জেগে থাকতে হয়,আর ঘুমের সময় পার হয়ে গেলে কিছুতেই ঘুম আসতে চায় না। ফলত সকালে ঘুমও ভাঙতে চায় না। আর ঘুম থেকে দেরিতে উঠলেও মেজাজ ক্রমশ খিটখিটে হতে শুরু করে। শুধু তাই নয় দেখা দেয় নানা শারীরিক সমস্যা। যেমন চোখের তলায় কালি পড়া, ত্বক খসখসে হয়ে যাওয়া, মাইগ্রেনের ব্যথা হওয়া প্রভৃতি।
এসব যাতে আর না হয় আর স্নায়বিক উত্তেজনা ও যাতে কম থাকে এবং রাতে যাতে ভালো ঘুম হয় তার জন্য বিশেষজ্ঞরা ক্যামোমাইল চা খেতে বলেন। এবার অনেকের মনেই প্রশ্ন জাগতে পারে ক্যামাইল চা আবার কেন? বিশেষজ্ঞদের মতে এই ক্যামোমাইল চা শরীর সুস্থ রাখাতে এবং রাতে ঘুম হওয়ার উপযোগী। এটি হল একপ্রকার ভেষজ চা।শুকনো চামোমাইল ফুলগুলি ক্যামাইল চা তৈরি করতে ব্যবহৃত হয়। যার ফলে এই চায়ের মধ্যে ক্ষতিকর ক্যাফেন থাকে না। আর তাই এই চা খেলে স্নায়ুর উত্তেজনা কম থাকে। ঘুম ভালো হয়।
মূলত দুরকমের ক্যামোমাইল চা ব্যবহার করা হয়- এক, রোমান ও দুই, জার্মান। প্রাচীন আয়ুর্বেদ শাস্ত্রেও উল্লেখ রয়েছে উপকারী চায়ের। তবে যারা গর্ভবতী, তাঁদের এই চা এড়িয়ে চলারই পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। ক্যামোমাইল চা যেহেতু চা এর ফুল থেকে তৈরি হয়, তাই এই চা খুব ভালো করে সংরক্ষণ করতে হবে। মূলত কাঁচের জারে রাখতে হবে এই চা। আর কাঁচের পাত্রটি এমন জায়গায় রাখতে হবে যেখানে সূর্য রশ্মি না লাগে। সেই সাথে ঠান্ডা পরিবেশেও রাখতে হবে এই চা।
ক্যামোমাইল চা বানানোর উপকরন-
২ চামচ চা ,২ কাপ জল ,২ চামচ মধু (প্রয়োজনে নাও দিতে পারেন) ,আপেলের টুকরো সামান্য
চা বানানোর পদ্ধতি-
প্রথমে একটি পাত্রে জল রেখে তা ভালো করে গরম করে নিন। এবার ওর মধ্যে আপেলের টুকরো অথবা আপেলের টুকরোর মিশ্রণ বানিয়ে ঢেলে দিন। এবার ওর মধ্যে ক্যামোমাইল চা দিন। তিন মিনিট ঢাকা দিয়ে রাখার পর ছেঁকে নিন। প্রয়োজনে মধু মিশিয়ে খেতে পারেন। কিন্তু চিনি একদম দেবেন না। এতে এই চায়ের উপকারিতা নষ্ট হয়ে যাবে।
চা এর উপকারিতা-
- ক্যামোমাইলের সুন্দর গন্ধই স্নায়ুকে অনেক রিল্যাক্স করে দেয়। এতে যেমন ভালো ঘুম হয় তেমনই মনও শান্ত থাকে। স্নায়ুর চাপ কমে।
- ক্যামোমাইলের মধ্যে রয়েছে অ্যান্টিস্প্যাসমোডিক ও অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি প্রপার্টিজ। যা পেটের ও অন্ত্রের ক্র্যাম্পস সারাতে খুবই কার্যকর। পেটের সমস্যা যেমন- কোষ্ঠকাঠিন্য, গ্যাস, পেট ফোলা কমাতেও গুরুত্বপূর্ণ ক্যামোমাইল। তাই দিনে অন্তত ২ বার করে ক্যামোমাইল চা খেলে এই সব সমস্যা দূরে পালাবে।
- পিরিয়ডসের সময় ক্র্যাম্পস এর সমাধানেও এই ক্যামোমাইল টি ব্যবহৃত হয়। এটি ইউটেরাসের পেশিকে শিথিল করে এবং গ্লাইসিন লেভেল বাড়িয়ে দেয়। যা ক্র্যাম্পস দূর করতে সাহায্য করে।
- এই ক্যামোমাইল চা ডার্ক সার্কলস দূর করতে সহায়ক। যেমন ছোট ছোট প্যাকেটে ক্যামোমাইল চা নিন অথবা আইস ট্রে-র মধ্যে ক্যামোমাইল টি নিয়ে বরফ আকারে জমিয়ে নিতে হবে। এ বার ওই প্যাকেটের বা আইসকিউবের ক্যামোমাইল টি আপনার চোখের তলায় ঘষতে থাকুন। পাঁচ মিনিট পরে ঠান্ডা জল দিয়ে চোখ ধুয়ে ফেলুন।