দ্য ক্যালকাটা মিরর: সবেদা। এই আপাত নিরীহ ফলটি সারা বছর মোটামুটি পাওয়া গেলেও এই শীতে এদের বাজারে আনাগোনা বেশি। ছোট বড় সকলেরই বেশ পছন্দের ফল এটি। দেখতে ছোট হলেও এই ফলের রয়েছে হাজারো উপকারিতা।
ছোট্ট আর মিষ্টিতে ভরপুর এই ফলটির মধ্যে ঠাসা রয়েছে ফাইবার। এছাড়াও এই ফলে আছে ভিটামিন এ, ই, সি আর ভিটামিন বি কমপ্লেক্স। যা চুল থেকে শুরু করে ত্বকের যত্নে এবং স্বাস্থ্যরক্ষাতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে। শুধু তাই নয়, একইসঙ্গে ওজন কমানো থেকে শুরু করে ডায়াবিটিস নিয়ন্ত্রণ সবই হয় এই সবেদার গুণে।
সবেদায় রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ চারটি ভিটামিন, ফ্রুকটোজ এবং সুক্রোজ। আর এগুলি থাকার ফলে সবেদা থেকে প্রচুর পরিমাণে এনার্জি পাওয়া যায়। সবেদায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণ খনিজ। আছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। সবেদায় যে ফাইবার রয়েছে তা কাজ করে প্রাকৃতিক ল্যাক্সেটিভ হিসেবে। যে কারণে সবেদা সহজপাচ্য এবং এতে প্রায় ১৫০ কিলো ক্যালোরি শক্তি রয়েছে।
পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস শরীরকে ভাইরাস-ব্যাকটেরিয়ার হাত থেকেও রক্ষা করে এই সবেদা।তাই বিশেষজ্ঞরা প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় একটা করে সফেদা রাখার কথা বলেন।
এখন জেনে নেওয়া যাক সফেদার নানান গুণাবলী সম্পর্কে-
হজম ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তাকারী-
এতে প্রচুর ফাইবার আছে, তাই এটি প্রাকৃতিক ল্যাক্সেটিভের ভূমিকা পালন করে। যাঁরা মূলত কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় ভুগছেন, তাঁদের জন্য এই ফল খুবই কার্যকরী। তাই প্রতিদিন ব্রেকফাস্টে সঙ্গে একটা করে সবেদা রাখা জরুরী।
পেটের নানা সমস্যা সমাধানে সহায়তাকারী-
প্রতিদিনই সাধারণ মানুষ পেটজ্বালা, গ্যাস অম্বল ইত্যাদি পেট সংক্রান্ত নানান সমস্যায় ভোগেন। তবে আর নয়!একটা সবেদাতেই আছে এর সমাধান। কারন সবেদায় রয়েছে ট্যানিন নামের এক প্রাকৃতিক উপাদান। যা অ্যান্টি ইনফ্লেমটরি হিসেবেই পরিচিত। যাঁদের কিছু খেলেই পেটে জ্বালা করে এবং যাঁদের গ্যাসট্রিকের সমস্যা আছে, তাঁরা যদি প্রতিদিন এই ফল খান, তা হলে অনেক উপকার পাবেন।
সর্দি-কাশির উপশমকারী-
সবেদায় আছে এমন কিছু রাসায়নিক উপাদান, যার বিক্রিয়ার জন্য সর্দিকাশির নিরাময় হয়। বিশেষ করে, যাঁরা দীর্ঘদিন ধরে ক্রনিক কাশি বা কফের সমস্যায় ভোগেন, তাঁরা ব্রেকফাস্টে একটা করে সবেদা খেতে পারেন। এই ফল খেলে দেখবেন কফ ও সর্দি নরম হয়ে বেরিয়ে আসছে।
হাড়ের গঠনে সহায়তাকারী-
সবেদায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে খনিজ। পেসী বা হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্য যে ক্যালসিয়ামের প্রয়োজন সেই ক্যালসিয়ামও এই ফলে প্রচুর পরিমাণে মজুত আছে। এ ছাড়াও হাড় শক্ত করার জন্য অন্য যে-যে খনিজ আছে, (যেমন আয়রন ও ফসফরাস,) সেগুলোও যথেষ্ট উপকারী। হাড় ছাড়াও শরীরের পেশি ও টিসু মজবুত করার জন্য যে কপার প্রয়োজন, সেটাও এই ফলে মজবুত আছে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়:
এই ফল শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। প্রচণ্ড গরমে যাতে হিট স্ট্রোক না হয়, তার জন্য এই ফল শরীরকে তৈরি করে।
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়তাকারী-
এই ফলের মধ্যে যে ম্যাগনেসিয়াম ও পটাশিয়াম আছে তা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের জন্য ভাল। ম্যাগনেশিয়াম রক্ত চলাচল স্বাভাবিক রাখে এবং পটাশিয়াম রক্তের চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে। এতে যেহেতু আয়রন আছে, সেহেতু এটি রক্তাল্পতা বা অ্যানিমিয়াও রোধ করতে সক্ষম।
এই কারণেই প্রাকৃতিক ফাইবারের উপযুক্ত উদাহরণ হল সবেদা। যা যেকোনো ধরনের রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে।