দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: আপনার কি হাইপারটেনশন, স্থূলতা, ডায়াবেটিস, রয়েছে, সাবধান! তাহলে আপনি অজান্তেই এই রোগের শিকার হয়ে উঠছেন। বর্তমানে যে কোনো রোগই মানুষের নিত্য দিনের সঙ্গী। করোনার মতো মহামারী ও এখন সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবনের সঙ্গী হয়ে উঠেছে। তবে এখন হার্ট ফেলিওর বা হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়াটা কয়েক সেকেন্ডের বিষয় হয়ে গিয়েছে।
আমাদের দেশে হার্ট ফেলিওরের সংখ্যার গ্রাফটা দিন দিন ঊর্ধ্বমুখী হচ্ছে। প্রতিটি দেশের মতো আমাদের ভারতেও দিনের পর দিন হৃদযন্ত্রঘটিত সমস্যা দেখা দিচ্ছে। যার দরুণ মৃত্যু হচ্ছে অনেকেরই। যাদেরই মূলত হাইপারটেনশন, করোনারি হার্ট ডিজিজ, স্থূলতা, ডায়াবেটিস, রিউমেটিক হার্ট ডিজিজ এই সব অসুবিধা রয়েছে তাঁরাই এই হার্ট ফেলিওরের শিকার।
শুধুমাত্র তাই নয়, যে কাজ মানুষের নিত্য দিনের সঙ্গী। সেই কাজের যায়গায় প্রতিনিয়ত বেড়ে চলা প্রেসার, স্ট্রেস প্রভৃতি কারণে তৈরি হওয়া রক্তচাপের সমস্যা, অনিয়িন্ত্রিত জীবনযাপন প্রভৃতি সবকিছুই মানুষের হার্ট ফেলিওরের অন্যতম কারণ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
তবে এর আরোও একটি কারণ রয়েছে আর তা হলো,বয়সজনিত কারণ। এই কারণের ফলেই অনেকেই এই হার্ট ফেলিওরের শিকার হন। তবে অল্প বয়স্করা, যাঁদের ডায়াবেটিস, হাইপারটেনশনের মতন রোগ রয়েছে তাঁরাও হার্ট ফেলিওরের শিকার হতে পারেন। এ ছাড়াও কারও পরিবারে যদি আগে থেকে হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যুর ইতিহাস থাকে, তবে পরবর্তী প্রজন্ম এই দুর্ঘটনার শিকার হতে পারেন।
তবে এই হার্ট ফেলিওরের লক্ষণ কী?
হার্ট ফেলিওরের মূলত অনেক লক্ষনই দেখা যায় যেমন, এনার্জিতে ঘাটতি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শারীরিক দুর্বলতা অনুভব, শ্বাস নিতে কষ্ট, পায়ের তলায় ঘাম হওয়া, শ্বাসকষ্টের কারণে ঘুমে ব্যাঘাত ঘটা, রাতে ঘন ঘন প্রস্রাব পাওয়া ইত্যাদি।
নিউ ইয়র্ক হার্ট অ্যাসোসিয়েশন-এর মত অনুযায়ী হার্ট ফেলিওরকে মূলত ৪ ভাগে ভাগ করা যায়। যেমন, স্টেজ ১ এবং স্টেজ ২-কে ‘প্রি-হার্ট ফেলিওর অধ্যায়’ বলা যায়। যে সব হার্ট ফেলিওর রোগীদের হৃদন্ত্রঘটিত দুর্বলতা আছে তাঁদের স্টেজ ৩-এ রাখা যায়। আর যাঁরা হার্ট ফেলিওরের প্রবল সম্ভাবনার শিকার তাঁদের স্টেজ ৪-এর অন্তর্ভুক্ত করা হয়। তবে ভয়ের কোনো কারন নেই। সঠিক চিকিৎসা, মেডিক্যাল ট্রিটমেন্টের মাধ্যমেই এই হার্ট ফেলিওরের মতো রোগের হাত থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
হার্ট ট্রান্সপ্ল্যান্ট, এলভিএডি ইমপ্ল্যান্টেশন পদ্ধতির মাধ্যমেও এই হার্ট ফেলিওরের দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে ফিরে আসা সম্ভব। এছাড়া জীবনযাত্রা পথে এই হার্ট ফেলিওরকে পরাজিত করতে গেলে মানুষের একটা সুন্দর জীবনযাপনের অভ্যাস তৈরি করা ভীষণভাবে প্রয়োজন। তাই এর জন্য বিশেষ কিছু নিয়ম মেনে চলা বাধ্যতামূলক। যেমন, ধূমপান ছেড়ে দেওয়া, ড্রাগ-এর মতো মাদক ত্যাগ করা, নিয়মিত ব্যায়াম করা, নিয়মিত সুষম খাবার খাওয়া যা শরীরকে পুষ্টি যোগাবে। আর অবশ্যই হার্ট ফেলিওরের লক্ষণ এবং কারণগুলি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল থাকা।