দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: বিশ্বজুড়ে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ বা পুনর্সংক্রমণের শুরুতেই, বাড়তি সাবধানতায় ইতিমধ্যেই নতুন করে লকডাউন জারি হয়েছে বেশ কিছু দেশে। সেই তালিকায় নাম রয়েছে ইংল্যান্ডেও। ইংল্যান্ডে লকডাউন চলবে ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। ফলে এমন পরিস্থিতিতে আবার চিন্তায় পড়েছে বিভিন্ন রেস্তোরাঁর কর্মচারীরা। কাজ হারানোর পাশাপাশি পেট চালানোর দায় ভাবিয়ে তুলেছে তাদের। এমন পরিস্থিতি মাথায় রেখেই তাই এক অভিনব পন্থা অবলম্বন করলো বার্গার কিং ম্যাকডোনাল্ড সংস্থা।


ওই সংস্থার তরফে, নিজেদের সোশ্যাল সাইটে ফেসবুক তথা টুইটারে একটি পোস্ট করে আবেদন করা হয়েছে যাতে গ্রাহকরা অন্যান্য বার্গার ও পিৎজা প্রস্তুতকারক সংস্থার কাছ থেকেও খাবার কেনে। সেখানে ওই সংস্থার তরফে কেএফসি, সাবওয়ে, ডোমিনোজ, পিৎজা হাট, ফাইভ গাইজ, ট্যাকো বেল, গ্রেগস, পাপা জনস্-সহ অন্যান্য খাবার প্রস্তুতকারী সংস্থার থেকেও খাবার কেনবার অনুরোধ করেছে ওই সংস্থা। অর্থাৎ বাজারের প্রতিযোগিতা ছেড়ে উক্ত সংস্থাগুলিকে একপ্রকার প্রমোট করছে বার্গার কিং সংস্থা। পাশাপাশি তারা গ্রাহকদের হোম ডেলিভারি, টেক অ্যাওয়ের মাধ্যমেও খাবার সংগ্রহের অনুরোধ করেছেন।এর ফলে হাজার হাজার কর্মীর চাকরিটা রক্ষা পাবে বলে মনে করছেন ওই খাদ্য সংস্থা।
বার্গার কিং এর এই পোস্টটি ইতিমধ্যে ফেসবুকে শেয়ারের সংখ্যা পেরিয়ে গেছে ৪০ হাজার। এবং টুইটারে শেয়ার সংখ্যা ১ লক্ষেরও বেশি।সাধারণ মানুষের কাছেও এই উদ্দ্যোগ যথেষ্ট প্রশংসনীয় হয়েছে ।
তবে সুদূর কলকাতায়, বার্গার কিং এর এই অনুরোধে কতটা তাৎপর্যপূর্ন তা নিয়ে কলকাতা রেস্তোরার মালিকদের মত ভিন্ন। যেমন এ বিষয়ে ‘মেনল্যান্ড চায়না’র প্রতিষ্ঠাতা অঞ্জন চট্টোপাধ্যায় ওই সংস্থার উদ্যোগকে সাদরে অভিবাদন জানিয়েছেন। পাশাপাশি তিনি জানান, “ম্যাকডোনাল্ডের বিশ্বজোড়া পরিকাঠামোই তাদের এমন একটি সিদ্ধান্ত নিতে সাহস দিয়েছে। এমন সিদ্ধান্ত সকলের পক্ষে নেওয়া সম্ভব নয়”। আবার মোগলাই রেস্তোরাঁ ‘অওধ’র প্রতিষ্ঠাতা শিলাদিত্য চৌধুরীর বলেন, ‘‘ম্যাকডোনাল্ডসের ওই উদ্যোগ তাদের নিজস্ব ব্যবসায়িক পরিকল্পনা। তবে স্বপ্ন দেখলে এ ভাবেই দেখা উচিত। তার লক্ষ্য হওয়া উচিত বৃহৎ এবং সুদূরপ্রসারী।’’ পাশাপাশি তিনি বলেন করোনা পরিস্থিতি বেতন পাওয়া নিয়ে সমস্যা হয়েছে ঠিকিই লকডাউনের সময় দু’মাস অর্ধেক বেতন পেলেও বাকি সময়ে তাঁর কর্মীরা পুরো বেতন পেয়েছেন। এমনকি, পুজোর বোনাসও। শিলাদিত্যের দাবি, তাঁর সংস্থার ৭০০ কর্মচারীর কারওরই চাকরি যায়নি।উপরন্তু ৭২ জন বাড়তি নিয়োগ হয়েছেন।


বাঙালি খাবারের রেস্তোরাঁ ‘ভজহরি মান্না’র বোর্ড অফ ডিরেক্টর্সের সদস্য সিদ্ধার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এটা বিদেশের পরিকাঠামোয় মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য হলেও আমাদের ভাত–রুটি, ডাল-তরকারি, ভাজা, মাছ-মাংসের যাপনে মোটেই তেমন উল্লসিত হওয়ার মতো কিছু না”। পাশাপাশি তিনি বলেন, “ভারতীয় পরিকাঠামোয় এক দুদিন হলেও রোজ বাইরে থেকে খাবার আনিয়ে খাওয়াটা প্রাত্যহিক রুটিন হতে পারে না।’’