দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: ‘ফোর্বস’-এর বিচারে, ‘গত তিন বছর ধরে লাগাতার ইউটিউব থেকে সবথেকে বেশি রোজগার করেছে এক খুদে। মাত্র ৯ বছর বয়স তার। কেবল ২০২০ সালেই তার রোজগার প্রায় তিন কোটি ডলার। ভারতীয় মুদ্রায় যা প্রায় ২২১ কোটি টাকা!
এই বয়সে আর পাঁচটা শিশুরা যখন খেলাধুলো, স্কুল, পড়াশোনা করে জীবন কাটায় ঠিক সেই বয়সেই ইউটিউব দাপিয়ে বেড়াচ্ছে টেক্সাসের বাসিন্দা ন’বছর বয়সী রায়ান কাজি। প্রচলিত আছে যে, ‘এজ জাস্ট আ্য নাম্বার’ অর্থাত্ বয়স একটা সংখ্যা মাত্র! আর বাস্তবে এমনটাই খেটে গিয়েছে রায়ানের সাথে।


‘ফোর্বস’-এর মতো বাণিজ্য পত্রিকার তালিকা অনুযায়ী জুন ২০১৯ থেকে, জুন ২০২০ অবধি সর্বোচ্চ উপার্জনকারী ইউটিউবারদের মধ্যে প্রথম স্থানে আছে রায়ান। উল্লেখ্য, মাত্র চার বছর বয়সে ২০১৫ সালে, ইউটিউবে ভিডিও আপলোড করে টেক্সাসের বাসিন্দা রায়ান। সেই থেকেই তার জয়যাত্রা শুরু।
টেক্সাসের বাসিন্দা রায়ানের ইউটিউব চ্যানেলের নাম ‘রায়ানস ওয়ার্ল্ড’। তবে প্রথমে চ্যানেলটির নাম ছিল ‘রায়ান টয়স রিভিউ’। নাম থেকেই খানিকটা বোঝা যাচ্ছে যে চ্যানেলের মূল বিষয়টি ঠিক কি। এই চ্যানেলে আয়ানের মূল কাজ হল, বাক্স থেকে খেলনা বার করে সেগুলির রিভিউ করা। নেটাগরিকদের কাছে তুমুল জনপ্রিয় তার চ্যানেল।
ক্রমে দ্রুত বাড়তে থাকে ‘রায়ানস ওয়ার্ল্ড’-এর ভিউয়ারশিপ। আর তত উপার্জনও বৃদ্ধি পেতে থাকে।নেটদুনিয়ায় তাকে বলা হয় ‘চাইল্ড ইনফ্লুয়েন্সার’। অর্থাৎ যে শিশু বাকিদের উপর প্রভাব বিস্তার করতে জুড়িহীন।


একবার একটি মুভি কারের রিভিউ ভাইরাল হওয়ার পরই রাতারাতি জনপ্রিয় হয়ে যায় ছোট্ট রায়ান। তারপর থেকে আর পিছনে ফিরে তাকানোর দরকার পড়েনি তাঁর। একটি-দুটি নয়, এই মুহূর্তে ন’টি ইউটিউব চ্যানেল চালায় ন’বছর বয়সী ইউটিউবার রায়ান। যদিও ‘রায়ানস ওয়ার্ল্ড’-এর সাবস্ক্রাইবারের সংখ্যার সঙ্গে বাকিগুলির তুলনাই চলে না।এই চ্যানেলের সাবস্ক্রাইবার প্রায় ৩ কোটি! বাকি চ্যানেলগুলিতে অবশ্য কেবল খেলনার রিভিউ হয় না।
এক ঘেয়েমিতা নয়, বরং সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নতুন নতুন কনটেন্ট নিয়ে এসেছে রায়ান। এছাড়া রায়ানস ওয়ার্ল্ড’ নামে তার একটি নিজস্ব ওয়েবসাইটও আছে। পাশাপাশি নিকলোডিয়ন চ্যানেলে তার টিভি সিরিজও চলে। এর আগে রায়ান অন্য টয় রিভিউয়ার বা খেলনা সমালোচকদের ভিডিয়ো দেখত। তাদের মতো সেও টয় রিভিউয়ার হতে চায়, এমনই আবদার করত সে তাঁর মায়ের কাছে।ছেলের ইচ্ছেপূরণে তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছিল তার পরিবার। তাদের পারিবারিক পদবি ছিল ‘গুয়ান’। সেখান থেকে তাঁরা সকলে ‘কাজি’ হয়ে যান।
রায়ানের নিজের ভালমন্দ নিয়েও যথেষ্ট উদ্বিগ্ন সংশ্লিষ্ট মহল। এর আগে তার কাছে বিভিন্ন ব্র্যান্ড আসত তাদের তৈরি খেলনা রিভিউ করে দেওয়ার আর্জি নিয়ে। কিন্তু এখন রায়ান নিজেই একটি ব্র্যান্ড। তবে ইউটিউবার রায়ানের চ্যানেলের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই অনেক অভিযোগ উঠেছে।অভিযোগ, চ্যানেলের বিনিয়োগকারীদের নাম যথাযথ ভাবে প্রকাশ করা হয় না। বলা হচ্ছে, ৯ শতাংশ ভিডিওর মধ্যে অন্তত একটি করে ‘পেইড প্রোডাক্ট’ থাকে। অর্থাৎ অর্থের বিনিময়ে ওই ব্র্যান্ডগুলির জিনিসের রিভিউ করে রায়ান। এখানে মূলত প্রি-স্কুলের বাচ্চারাই প্রধান টার্গেট। অনেক সময়ই এতে অস্বাস্থ্যকর খাবার থাকে, যা তাদের পক্ষে অত্যন্ত ক্ষতিকর। মার্কিন ফেডেরাল ট্রেড কমিশন হয়তো শিগগিরি এই নিয়ে তদন্ত শুরু করবে।