দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরোঃ আজ আইপিএলের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল রয়েল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর এবং দিল্লি ক্যাপিটালস। প্রয়োজনীয় টস জিতে নিয়ে আজ প্রথম ব্যাঙ্গালোর কে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানান দিল্লি অধিনায়ক শ্রেয়াস আইয়ার।
শুরুটা আজ মোটেই ভাল হয় নি ব্যাঙ্গালোরের জন্য। ১৭ বলে মাত্র ১২ রান করে কগিসো রাবাডার শিকার হন ফিলিপি। তবে অন্যদিকে গত কয়েকটি ম্যাচের মতোই ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছিলেন দেবদত্ত।অধিনায়ক বিরাট কোহলির সাথে পার্টনারশিপে দলকে এগিয়ে নিয়ে যাবার চেষ্টা করেন তিনি। কিন্তু আজ বেশিক্ষণ সঙ্গ দিতে পারেননি কোহলি, প্রথম অর্ধে একটি জীবন দান পেলেও আজ ফায়দা তুলতে পারেননি তিনি। ২৪ বলে দুটি চার ও একটি ছয় দিয়ে সাজানো ২৯ রানের ইনিংস খেলে রবীচন্দ্রন অশ্বিনের শিকার হন তিনি।
তবে দেবদত্ত একপ্রান্ত ধরে রেখে আজও নিজের মতো ইনিংস এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। ৪১ বলে পাঁচটি সুন্দর চার দিয়ে সাজানো ৫১ রানীর সাবধান ইনিংস উপহার দেন তিনি। কিন্তু ভুল সময়ে নকিয়ার বলে বোল্ড হওয়ায় রানের গতিতে বেশ কিছুটা মন্থরতা নেমে আছে আরসিবির।আজ মেজাজে ছিলেন ডি ভিলিয়ার্স। প্রথমে কিছুটা সময় নিলেও শেষের দিকে বোলারদের ওপর আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠেন তিনি। শিভাম দুবেকে সাথে নিয়ে রাবাডা এবং নকিয়াকে যেভাবে মাঠের বাইরে পাঠাচ্ছিলেন দুজনে তাতে মনে হয়েছিল আজ হয়তো দিল্লির লড়াইটা কঠিন করে দিতে পারে ব্যাঙ্গালোর। কিন্তু শেষ ওভারে ২১ বলে ৩৫ রানের ইনিংস খেলে দুর্ভাগ্যজনকভাবে রান আউট হন তিনিও। ১১ বলে ১৭ রান করে শিভম ফিরেছিলেন আগেই। তাই শেষ অবধি নির্ধারিত কুড়ি ওভারে ৭ উইকেটের বিনিময়ে ১৫২ রানে থমকে যায় আরসিবির স্কোর।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই পৃথ্বী শকে হারালেও আজ দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেন শিখর ধাওয়ান এবং অভিজ্ঞ অজিঙ্কা রাহানে। গত দু ম্যাচে সেভাবে রান না পেলেও আজ মারমুখী ছিলেন গব্বর। ক্রিস মরিসের মতো অভিজ্ঞ বোলারও আজ তার সামনে রেহাই পাননি। ফলতো সময়মতো উইকেট তুলে নিতে চাহালকে বোলিংয়ে নিয়ে আসেন কোহলি। কিন্তু সুন্দর সুইপ শটে বাউন্ডারি তুলে নিয়ে তার বিরুদ্ধেও আক্রমণ জারি রাখেন রাহানে।
বিশেষত স্পিনারদের সামনে আজ নিজের নিয়ন্ত্রন যেভাবে বজায় রাখেন শিখর তা সত্যিই অনবদ্য। তাদের এই সুন্দর পার্টনারশিপের দৌলতেই মধ্য পর্বেই এক উইকেটের বিনিময়ে ৮১ রানে পৌঁছে যায় দিল্লি।দ্বাদশ ওভারে মাত্র ৩৭ বলে ছটি অসাধারণ চারের সাহায্যে নিজের চল্লিশতম আইপিএল অর্ধশতক পূর্ণ করেন শিখর ধাওয়ান। অন্যদিকে যথাযোগ্য সঙ্গ দিচ্ছিলেন রাহানেও।মরশুমে সেভাবে রান না পেলেও আজ প্রয়োজনীয় ম্যাচে বড় মঞ্চে নিজের সর্বোত্তম প্রদর্শন করেন তিনি। ফলতো ম্যাচ থেকে ক্রমাগত দূরে সরে যেতে থাকে ব্যাঙ্গালোর।
শেষ পর্যন্ত ৫৪ রানে শাহবাজ আহমেদের বলে স্কুপ খেলতে গিয়ে শিখর আউট হলেও ম্যাচ তখন অনেকটাই দিল্লির পক্ষে।৪৪ বলে তখন তাদের দরকার ছিল মাত্র ৪৬ রান।অন্যপক্ষে আজ ধৈর্য হারাননি রাহানে। মাত্র ৩৮ বলে পাঁচটি চার ও একটি ছয়ের সাহায্যে নিজের গুরুত্বপূর্ণ অর্ধশতক পূর্ণ করেন তিনি।
কোয়ালিফায়ার খেলার জন্য আজ মাত্র ১৩৪ রানই করতে হতো দিল্লিকে এবং ১৭.৩ ওভারের মধ্যে ম্যাচ জিতে নিতে পারলে ব্যাঙ্গালোরের জন্যেও প্লে অফসের পথ যথেষ্ট শক্ত করে দিতে পারত তারা। কিন্তু অন্যপক্ষে জারি ছিল উইকেট পতন, ১৭ তম ওভারে বড় শট খেলতে গিয়ে শাহবাজ আহমেদের বলে সাজঘরে ফেরেন অধিনায়ক শ্রেয়াস আইয়ার।ফলে সময়মতো রান তুলে নিয়ে ব্যাঙ্গালোরের যাত্রাপথ কঠিন করা সম্ভব হয়নি দিল্লির পক্ষে। উপরন্তু ১৮ তম ওভারে ৪৬ বলে ৬০ রানের ইনিংস খেলে রানের গতি বাড়াতে গিয়ে ওয়াশিংটন সুন্দরের বলে উইকেট দিয়ে ম্যাচ কিছুটা কঠিন করে দেন রাহানে।
শেষ পর্যন্ত স্টয়নিস এবং পান্থের দৌলতে ১৯তম ওভারে জয় তুলে নিয়ে দিল্লি দ্বিতীয় স্থানে পৌঁছালেও লাভ হবে না কেকেআরের জন্য কারণ এখনও তাদের থাকতে হবে শেষ ম্যাচের আশায়। যদি হায়দ্রাবাদ কাল পরাজিত হয় মুম্বাইয়ের কাছে তবেই চতুর্থ দল হিসেবে কেকেআর পৌঁছতে পারবে শেষ চারের লড়াইয়ে।