দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরোঃ বাবা-মা, দাদা এবং বৌদি মেদিনীপুরের জামিট্যা গ্রামে এই নিয়েই দয়ানন্দের সংসার। অভাবের সংসারে নুন আনতে পান্তা ফুরায়। মাটির বাড়ি টিনের চাল থেকে জীবন শুরু করে আজ তিনি রয়েছেন ভারতীয় দলে। একসময় সংসারের অভাব সামলাতে পরিবারের চাষের কাজে হাত লাগাতে হয়েছে দয়ানন্দকে।ভাবছেন হয়তো কে এই দয়ানন্দ? ভারতীয় ক্রিকেট দলে তার ভূমিকাই বা কি?
মেদিনীপুরের এই অভাবী পরিবারের ছেলেই বর্তমানে ম্যাসার এবং থ্রোডাউন এক্সপার্ট হিসেবে জায়গা করে নিয়েছেন ভারতীয় দলের। শচীন-সৌরভের আমল থেকে ভারতীয় দলে জায়গা পালন করে আসছেন ডি রাঘবেন্দ্র। কিন্তু বর্তমানে তিনি করোনা আক্রান্ত হওয়ায় অস্ট্রেলিয়া সফরের জন্য দলে জায়গা মিলেছে দয়ানন্দ গরানির।
এর আগে আইপিএলে কিংস ইলেভেন পাঞ্জাবের হয়ে একই ভূমিকায় কাজ করেছেন তিনি। শুরুটা অবশ্য মোটেই সহজ ছিল না দয়ানন্দর।প্রত্যন্ত গ্রামে থেকেই ক্রিকেট খেলার স্বপ্ন নিয়ে জীবন শুরু করেছিলেন তিনি। বিখ্যাত বাংলা দৈনিককে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “ছোট থেকেই ক্রিকেট ভালবাসতাম। নিজে খেলতামও। ডানহাতি মিডিয়াম পেসার আমি। ২০০৭ সালে কোলাঘাট থেকে কলকাতার যুবভারতী স্টেডিয়ামে ফ্রেন্ডস অফ দ্য স্টেডিয়ামের ক্যাম্পে প্র্যাক্টিস করতে যেতাম। তবে রোজ যাতায়াত করার অর্থ ছিল না। তাই কোলাঘাটেই কৌশিক ভৌমিকের কাছে প্রশিক্ষণ নিতে শুরু করি। মাসে মাত্র ২০ টাকা খরচে। লাট্টুদা ও ডঃ মলয় পাল দারুণভাবে পাশে দাঁড়িয়েছিলেন।”
কোলাঘাট থেকে ময়দানে খেলতে আসা। বরানগর স্পোর্টিংয়ের হয়ে সিএবি-র দ্বিতীয় ডিভিশন লিগে খেলা শুরু করেন দয়ানন্দ। তারপর হোয়াইট বর্ডার, মৌরি স্পোর্টিং হয়ে কলকাতা পুলিশ দলে।এরপরই দেবরাজ নাহাটা তাকে গ্রীন পুলিশের চাকরির ব্যবস্থা করে দেন। এই সময় তার আলাপ হয় বাংলার সিনিয়র দলের ট্রেনার সঞ্জীব দাসের সাথে। মূলত তাঁর হাত ধরেই অন্ধপ্রদেশ দলে প্রথমে থ্রোডাউন এক্সপার্ট হিসেবে সুযোগ পান দয়ানন্দ। ২০১৬ সালে আসে কিংস ইলেভেনের সাথে কাজ করার সুযোগ।
সঞ্জীব বলেন, “দয়ানন্দের দু’হাতেই বল করার অদ্ভুত দক্ষতা রয়েছে। থ্রো ডাউনও করে দু’হাতে। এতে ব্যাটসম্যানদের ডানহাতি ও বাঁহাতি – দুরকম বোলারের বিরুদ্ধেই প্রস্তুতি নিতে সুবিধা হয়।”
এই দক্ষতার কারণেই এবার ভারতীয় দলের ম্যাচ আর এবং থ্রোডাউন এক্সপার্ট হিসেবে এই বঙ্গতনয় উড়ে যাবেন অস্ট্রেলিয়ায়। এই প্রসঙ্গে তিনি আনন্দবাজারকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন,”২ নভেম্বর দেশে ফেরার কথা ছিল। তবে অস্ট্রেলিয়া সফরে যেতে হবে বলে জৈব সুরক্ষা বলয় ভেঙে বেরতে বারণ করা হয়েছে আমাকে।”