দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরোঃ করোণা পরবর্তী প্রথম পর্বত অভিযানে হিমালয়ান রেঞ্জের আমাদাবলাম শৃঙ্গ জয়ের স্বপ্ন নিয়ে অভিযানের সামিল হয়েছিলেন খ্যাতনামা বাঙালি অভিযাত্রী সত্যরূপ সিদ্ধান্ত। এর আগেও এভারেস্ট জয় করেছেন সত্যরূপ। সুতরাং তার এই পর্বত প্রেম নতুন কিছু নয়। কিন্তু ৬৮১২ মিটারে শৃঙ্গ জয় করতে নেমে আচমকাই দুর্ঘটনার সামিল হন তিনি। ২৮ নভেম্বর অবধি ৬০১২ মিটার অতিক্রম করেছিল এই বাঙালি অভিযাত্রী দল। বাকি ছিল শেষ ৮০০ মিটার ট্রেক করে তুষারাবৃত শৃঙ্গের উপর গর্বিত পা রাখা।
সেই লক্ষ্যেই ২৮ তারিখ রাত সাড়ে দশটার সময় ক্যাম্প থেকে রওনা দেয় অভিযাত্রী দল।কিন্তু কিছুক্ষণ যাওয়ার পরেই সোনাম শেরপা ডাই লক্ষ্য করেন সত্যরূপে জুমারের সেফটি লাইনটি ৫০% ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে যা ছিল হার্নেসের সঙ্গে বাঁধা। এর আগেও বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার সঙ্গে লড়াই করেই এগোতেই হয়েছে তাকে। তাই এত কাছে এসে এখানেই অভিযান শেষ করতে চাননি সত্যরূপ। এরপরেও ৩০ মিনিট চড়াই ভেঙে সমস্ত সমস্যা অতিক্রম করে যখন তারা একেবারে পিকের কাছে, তখন হঠাৎ সত্যরূপ বুঝতে পারেন তিনি কিছু ধরতে পারছেন না। তার হাত অসাড় হয়ে গেছে। এর পরেই বাধ্য হয়ে ক্যাম্প দুইয়ের দিকে নামতে শুরু করেন তারা।কিন্তু আঙ্গুলের এই অসাড়তার কারণে নামাটিও ছিল যথেষ্ট কঠিন।
শেষ পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে প্রায় ২৫ ফুট নীচে গড়িয়ে পড়া থেকে কোনোরকমে বেঁচে যান সত্যরূপ। যদিও হেলমেট থাকার কারণে তেমন চোট লাগেনি তবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় পিঠ। এরপর হেলিকপ্টারের মাধ্যমে উদ্ধার করে তাকে ভর্তি করা হয় কাঠমান্ডু হাসপাতালে।
শেষ পর্যন্ত আমরা ফোনের মাধ্যমে যোগাযোগ করতে পারি সত্যরূপবাবুর সাথে। তিনি জানান, “আপাতত আমার শারীরিক অবস্থা অনেকটাই অনুকূল। ঠিক সময়ে গরম জায়গায় চলে আসার কারনে ফ্রস্টবাইটের সমস্যা এড়ানো গেছে। আমার তিনটি আঙ্গুলে ধীরে ধীরে সচেতনতা ফিরতে শুরু করেছে। পিঠের দিকে একটি ইনজুরি রয়েছে তবে চিকিৎসকদের মতে সেটা খুব গুরুতর কিছু নয়।”
এই অভিযান সম্পর্কে আরো বলতে গিয়ে তিনি জানান,”আমরা আসলে শরতের অভিযানে বেরিয়েছিলাম। কিন্তু কোয়ারেন্টাইন ও অন্যান্য নিয়মবিধি মানতে গিয়ে আমাদের এই অভিযানটি শীতকালীন অভিযান হয়ে যায়। যার চ্যালেঞ্জ সম্পূর্ণ আলাদা। তাছাড়া ২১ তারিখ থেকে আবহাওয়া ছিল ভীষণ খারাপ। সেই কারণেই অভিযানের দিন আরো পিছিয়ে দিতে হয় আমাদের। এমনকি এভারেস্ট অভিযানের সময়ও আমরা ১৫ মাইল/ঘন্টা হাওয়ার গতিবেগ থাকলে বেরোতে সাহস করিনি। কিন্তু এখানে আমাদের ৩০মাইল/ঘন্টা হাওয়ার গতিবেগের মোকাবিলা করে এগোতে হয়েছে।”