দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরোঃ এক নোবেল চুরির দায়ে লজ্জায় মাথা নত হয়েছিল পশ্চিমবঙ্গর। কবিগুরুর বিশ্বজয়ের স্মৃতি বাঁচাতে পারেনি তারা। অনেক রাজনৈতিক টানাপোড়েনের পরেও শেষ পর্যন্ত ফেরানো যায়নি রবি ঠাকুরের নোবেল। এবার আরেক লজ্জার সামনে কলকাতা। ফুটবল রাজপুত্র মারাদোনার স্মৃতির ইতিহাস ধরে রাখতে পারলো না তিলোত্তমা। ফুটবল রাজপুত্র মারাদোনার বাঁ পায়ের ছাপ ছিল এক বড়োসড়ো স্মৃতি গোটা কলকাতার কাছে। ফুটবল রাজপুত্র প্রথম ভারতে আসেন ২০০৮ সালে। সে সময়ে কলকাতাতেও বেশ কিছু সময় কাটান তিনি।
বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যে ছিল মহেশতলা স্টেডিয়াম এবং মহেশতলা স্কুলের জমি উদ্বোধন। হেলিকপ্টারে মহেশতলা পৌঁছানোর পর সমর্থকদের বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস সেদিন অভিভূত করেছিল বিশ্বকাপজয়ী এই ফুটবলারকে।মঞ্চ থেকেই ফুটবল নিয়ে নানা স্কিল আর কারুকার্যে দর্শকদের মন ভরিয়ে দেন তিনি। তারপরে আসে এক ঐতিহাসিক ক্ষণ প্লাস্টার অফ প্যারিস নেওয়া হয় মারাদোনার পায়ের ছাপ। সেদিন মারাদোনার পাশে ছিলেন দুই ভারতীয় ফুটবলার কৃষ্ণেন্দু রায় এবং মানস ভট্টাচার্য। স্বাভাবিকভাবেই এই ছাপ যত্ন করে রাখার কথা ছিল কলকাতার। কথা ছিল নবনির্মিত স্টেডিয়ামে রাখা হবে সেই পায়ের ছাপ।




কিন্তু শেষ পর্যন্ত নানান টানাপোড়েনের মাঝে গঙ্গা দিয়ে বয়ে গেছে বহু জল। মহেশতলায় বিশ্বকাপজয়ী মারাদোনার উদ্বোধন করা সেই জমিতে আজও হয়নি স্টেডিয়াম। আগের সরকার বর্তমান সরকারের টানাপোড়েনে আটকে আছে স্টেডিয়াম তৈরীর কাজ। আর এরই মাঝে উধাও হলো মারাদোনার পায়ের সেই ঐতিহাসিক ছাপ। আধুনিক মানের এক ফুটবল স্কুল এবং স্টেডিয়াম তৈরি করার উদ্দেশ্যে ইডেন সিটি নামক এক বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হন সেসময়ের সিপিআইএম নেতা শমীক লাহিড়ী। মারাদোনার অনুষ্ঠানেরও অন্যতম উদ্যোক্তা ছিলেন তিনি। স্টেডিয়াম তৈরীর কথা শুনে তা উদ্বোধনের ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন স্বয়ং মারাদোনা।
এখন সংবাদসংস্থা নিউজ ১৮ বাংলার তরফে খোঁজাখুঁজির পর জানা যায় মারাদোনার সেই ঐতিহাসিক পায়ের ছাপ কোথায় আছে এটা জানা নেই ইডেন সিটি কর্তৃপক্ষর।নিরাপত্তা কর্মীরা ও খোঁজ দিতে পারলেন না সেই ছবির। শমীক লাহিড়ী বলেন,”কয়েকজন এসে পায়ের ছাপ নিয়েছিল ঠিকই। তবে তা উদ্যোক্তাদের বিষয় ছিল না। পৌরসভা এবং ইডেন সিটি কর্তৃপক্ষ বলতে পারবে সেই ছাপ কোথায়? তবে স্টেডিয়াম তৈরি না হওয়াটা ভীষণই হতাশাজনক।”
১২ বছর আগে মারাদোনাকে সাহায্য করা মানস ভট্টাচার্য এবং কৃষ্ণেন্দু রায় এদিন অনুরোধ জানান এই ছাপ খুঁজে বের করার। ফুটবল রাজপুত্রের এই স্মৃতি হারিয়ে ফেলাটা যথেষ্ট লজ্জাজনক তিলোত্তমার কাছে।