দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরোঃ মারাদোনার মৃত্যু নিয়ে রহস্য ঘনীভূত হয়েছে এর আগেই। ডাক্তারের গাফিলতির প্রসঙ্গও তুলে এনেছেন কেউ কেউ। এবার সামনে এলো সেই সম্পর্কিত তথ্য। এন্টিডিপ্রেসেন্ট এবং অ্যান্টিসাইকোটিক ড্রাগের একটি ককটেল ব্যবহার করা হতো মারাদোনার জন্য। যা বাইপোলার ডিসঅর্ডার নামক রোগ সারাতে ব্যবহৃত হয়। যে ধরনের ওষুধ পত্র দেওয়া হতো এই ফুটবল তারকাকে তার নাম কোয়েটিয়াপিন যা সাধারণত মেজাজ সংক্রান্ত সমস্যার ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়,গাবাপেন্টিন যা সাধারণত মধুমেহ রোগের কারণে হওয়া স্নায়বিক যন্ত্রনা মুক্তির জন্য ব্যবহার করা হয়।
বিশেষজ্ঞরা বলেন এই ধরনের ওষুধ পত্র মারাদোনার হার্টের সমস্যার ক্ষেত্রে যথেষ্ট বড় কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য এই প্রাক্তন আর্জেন্টিনা তথা বার্সেলোনা তারকার মৃত্যু হয় হার্ট অ্যাটাকের কারণেই এবং তার কন্যাদের অভিযোগের কারণেই পুলিশ এই সংক্রান্ত তদন্তের ক্ষেত্রে অগ্রসর হয়। প্রাথমিক ময়নাতদন্তের রিপোর্টে জানা গেছে ৬০ বছর বয়সী এই তারকার মৃত্যুর কারণ পালমোনারি এডেমা।চিকিৎসকরা এর সাথে সাথে ডিলিয়েটেড কার্ডিওমিওপ্যাথি রোগের কথাটি উল্লেখ করেছেন। এই ক্ষেত্রে সাধারণত হৃৎপিণ্ডের পেশী দুর্বল হয়ে যায় এবং বৃদ্ধি পায়।ফলে শরীরের বাকী অংশে পর্যাপ্ত রক্ত পাম্প করতে পারে না।
ইতিমধ্যেই মারাদোনাকে দেওয়া ওষুধের সমস্ত তালিকা পাঠানো হয়েছে রাষ্ট্রীয় প্রসিকিউটার্সদের হাতে। এ বিষয়ে শুরু হয়েছে একটি উচ্চ পর্যায়ের তদন্তও। আগের দুটি ওষুধের পাশাপাশি মারাদোনার জন্য ন্যালট্রেক্সোন নামক একটি ড্রাগও বরাদ্দ হয়েছিল যা অতিরিক্ত মদ্যপানে ফলে সংঘটিত রোগের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়। এছাড়া অ্যান্টিডিপ্রেসেন্ট ভেনেলাফ্যাক্সিন, যা সাধারণত প্যানিক অ্যাটাকের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়, লুরসিডোন যা রোগীদের আরও স্পষ্টভাবে চিন্তা করতে এবং কম নার্ভাসবোধ করতে সহায়তা করে, পেটের সমস্যার কারণে ওমেপ্রাজল এবং একটি ভিটামিন বি কমপ্লেক্সও রয়েছে মারাদোনার ওষুধের তালিকায়।স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন ওঠে এত ধরনের ওষুধের সাইডএফেক্ট থেকেই কি কোনভাবে ত্বরান্বিত গুলো মারাদোনার মৃত্যু?
আর্জেন্টিনার স্নায়ুবিজ্ঞান বিশেষজ্ঞ নিলসন কাস্ত্রো এ সম্পর্কে বলতে গিয়ে বলেন,”পরীক্ষা করে দেখা দরকার এই ওষুধগুলো তাকে কতটুকু দেওয়া হয়েছে এবং কি পরিমাণে দেওয়া হয়েছে। এবং তিনি ওষুধগুলো একই সময়ে খেয়েছেন না আলাদা আলাদা।এদের মধ্যে এন্টিডিপ্রেসেন্টস এবং অ্যান্টিসাইকোটিকসের প্রচুর মিশ্রণ রয়েছে।এই জাতীয় ওষুধগুলির মধ্যে বেশ কয়েকটি, কুইটিয়াপাইন, লুরসিডোন, ভেনেলাফ্যাক্সিনের কার্ডিয়াক প্রভাব রয়েছে। এগুলো সাধারণভাবে হার্ট রেটকে বৃদ্ধি করে।”
রডল্ফো বাক বলেন মৃত্যুর আগের দিনগুলিতে তার হার্টের হার প্রতি মিনিটে ১১৫ বিট পৌঁছেছিল। কিন্তু চিকিৎসকরা এই সতর্কতার সংকেত উপেক্ষা করেছেন। যদিও মারাদোনার চিকিৎসক লিউক দৃঢ়ভাবেই জানান,”দিয়োগের ক্ষেত্রে কোনকিছুর জন্য যদি আমি দায়বদ্ধ থাকি তাহলে তা হলেও দিয়েগোর প্রতি আমার তবে কেবলমাত্র আমি জানি ডাক্তার লিউক আপনি ভালোবাসা,তাকে সুস্থ করে তোলা, তার সেবা করা এবং তাকে আরও বেশিদিন বাঁচতে সাহায্য করা। আমি নিজেকে কোনো কিছুর জন্য দোষ দিই না। এখন যা হচ্ছে তা খুবই আনফেয়ার। কেউ একজন একজনকে স্কেপগোট বানাতে চাইছে। দিয়েগোর ক্ষেত্রে যতটা করা যেত ততটাই আমরা করেছি। “
যদিও স্নায়ুবিজ্ঞান বিশেষজ্ঞ লিউককে সমর্থন করেছেন দিয়েগোর আইনজীবী মোর্লা। তিনি এদিন টুইট করেন, “আমি জানি প্রসিকিউটররা কি বলার চেষ্টা করছেন, তবে কেবলমাত্র আমি জানি ডাক্তার লিউক আপনি দিয়েগোকে কতটা ভালোবাসতেন। কিভাবে আপনি তার যত্ন নিয়েছেন ও সঙ্গ দিয়েছেন।দিএগো আপনাকে ভালোবাসতো এবং তার বন্ধু হিসেবে আমি আপনাকে একা ছেড়ে যাবো না। আপনি রক্ত ঘাম এবং চোখের জল ঝরিয়েছেন সত্য একদিন জয়ী হবেই।”