দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরোঃ আজ আইএসএলের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল এটিকে মোহনবাগান এবং ওড়িশা এফসি। অর্থাৎ একদিকে ছিলেন রয় কৃষ্ণা,মনবীর এবং অন্যদিকে ছিলেন মার্সেলিনহো, মউরিসিওরা। ৩ পয়েন্ট তুলে নিতে দু’দলই ছিল আজ মরিয়া। শুরু থেকেই বল দখলের লড়াইয়ে যথেষ্ট সক্রিয় ছিল সবুজ মেরুন। প্রথমার্ধের প্রথম পর্বেই সুন্দর সুযোগ তৈরি হয়েছিল রয় কৃষ্ণার জন্য যদিও শেষ পর্যন্ত গোলের মুখ খুলতে পারেননি তিনি। অন্যদিকে বারবার আক্রমণে আসছিল ওড়িশাও।৩৫ মিনিটের মাথায় ভালো সুযোগ এসে গিয়েছিলো তাদের কাছেও। কিন্তু গোলের মুখ খুলতে পারেনি জ্যাকোব। ওড়িশার তরফ শুরু থেকে যথেষ্ট সক্রিয় ছিলেন মউরিসিও। যদিও মোহনবাগানের লক্ষণ বিভাগ আজও ছিল যথেষ্ট প্রস্তুত। আর মূলত সেই কারণেই প্রথমার্ধের শেষভাগ পর্যন্ত নিষ্ফলা ছিল ওড়িশার ভাগ্য।
অন্যদিকে ওড়িশার রক্ষণ বিভাগে প্রথমার্ধে যথেষ্ট সক্রিয়। এন্টনি, টেলর, ট্রাট প্রত্যেকেই ছিলেন ভীষণ প্রস্তুত। যদিও একবারে শেষ ভাগে আবার সুযোগ এসে গিয়েছিলো ওড়িশার কাছে। ফ্রিকিক থেকে উড়ে আসা বল স্টিফেন টেলার আজ রাখতে পারেননি গোলে। আজ সত্যিই রয় কৃষ্ণা তৈরি থাকলেও গোলের মুখ খুলতে পারেননি।অতিরিক্ত সময়ের ঠিক আগে উড়ে আসা বল হেড করে গোলে রাখার চেষ্টা করেন তিনি। কিন্তু আসেনি সেই গুরুত্বপূর্ণ গোল। যার ফলে বিশ্রাম কক্ষে ফেরা অবধি ব্যবধান বাড়িয়ে নিতে পারেনি কোনো পক্ষই। একথা মানতেই হবে ডার্বি ম্যাচে যেভাবে শুরু থেকেই সক্রিয় ছিল মোহনবাগান, আজ প্রথমার্ধে সেই খেলা দেখা যায়নি।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেও যথেষ্ট সক্রিয় ছিল দুই দলই। তবে শুরুতেই ভালো এলাকা থেকে ফ্রি কিক পেয়ে যায় সবুজ মেরুন। কিন্তু হাবি হার্নান্দেজের শট আজ গোলের মুখ খুলতে পারেনি তাদের জন্য। যদিও যথেষ্ট বিতর্ক রয়েছে আজ রেফারির এই ফাউলের সিদ্ধান্ত নিয়ে। অনেক বিশ্লেষকই মনে করেন প্রবিরকে আসলে ট্যাকেল করা হয়েছিল পেনাল্টি বক্সের ভিতরে।সেক্ষেত্রে অবশ্যই এটি ছিল নিশ্চিত পেনাল্টি। দ্বিতীয়ার্ধে ১৩-১৪ মিনিটের মধ্যে আরো একটি সেমসাইড গোল করে ফেলে ওড়িশা কিন্তু হ্যান্ডবলের বিতর্কিত সিদ্ধান্তে রেফারি সেই গোল বাতিল করে দেন। অন্যদিকে ভালো সুযোগ পেয়ে গিয়েছিলেন নন্দন কুমারও।কিন্তু সেভাবে আজ সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি তিনি।
দ্বিতীয়ার্ধে অনেক বেশি সক্রিয় হলেও মধ্যপর্ব পর্যন্ত গোল তুলতে পারেনি মোহনবাগান। তবে মুহুর্মুহু যেভাবে আক্রমণ তুলে আনে তারা তা ছিল সত্যিই অনবদ্য। ৬৫ মিনিটের মাথায় আজ বক্স এর কাছাকাছি এলাকাতে সুন্দর ফ্রিকিক পেয়ে যায় ওড়িশাও।কিন্তু রক্ষণ বিভাগের দেওয়াল আজ ভাঙতে পারেননি মার্সেলিনহো।তবে প্রশংসা করতে হবে দুদলের ডিফেন্সই আজ যেভাবে ছিলেন সদা প্রস্তুত। একদিকে যেমন তিরি, সন্দেশ ঝিঙ্গান কোন বল ঢুকতে দেননি তেমনি অন্যদিকে একটু লাকি-এস্কেপ পেলেও টেলর, এন্টনিরাও ছিলেন সদা প্রস্তুত।
অবশ্যই আজ এডু গার্সিয়া এবং ডেভিড উইলিয়ামসের না থাকা যথেষ্ট প্রভাব ফেলেছিল মোহনবাগানের খেলায়। ফলতো দ্বিতীয় জলপান বিরতি অবধিও আজ নিষ্ফলা ছিল সবুজ মেরুনের স্কোর লাইন। একেবারে শেষ পর্বে উড়ে আসা বলে দুরন্ত সুযোগ পেয়েছিলেন রয় কৃষ্ণা। কিন্তু স্টিভেন টেলারের ডিফেন্স আজ ভাঙতে পারেনি তিনি। শেষবেলায় ওড়িশার পক্ষে দুরন্ত আক্রমণ তুলে এনেছিলেন আলেকজান্ডার কিন্তু আজ অরিন্দম ভট্টাচার্যকে পরাস্ত করতে পারেননি তিনি। অন্যদিকে সবুজ-মেরুনের পক্ষে ব্র্যাড ইনম্যানের মাটি কামড়ানো শটও আজ রুখে দেন কমলজিৎ।কিন্তু একেবারে অতিরিক্ত সময়ে ম্যাজিক মোমেন্ট তৈরি করে ম্যাচ জিতিয়ে দেন রয় কৃষ্ণা। দুরন্ত হেডারে আজ ৯৪ মিনিটের মাথায় তিনি পরাস্ত করেন কমলজিৎকে। ফলে আজ প্রায় ড্র হয়ে যাওয়া ম্যাচ শেষ বেলায় ১-০ গোলে জিতে নেয় এটিকে মোহনবাগান।