দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরোঃ কাল থেকে শুরু হতে চলেছে কলকাতার অন্যতম প্রেস্টিজিয়াস লীগ আইএফএ। এবার ১২৩ তম আইএফএ লিগের আগে কলকাতা উত্তাল ফুটবল জ্বরে। যদিও দেখা যাবে না একসময় এ শিল্ড জয়ী ইস্টবেঙ্গল কিংবা মোহনবাগানকে। কিন্তু রয়েছে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ দল যারা কলকাতাবাসীর প্রাণের কাছাকাছি।আইএফএ তরফে কাল ম্যাচের আগে আজ প্রেস কনফারেন্সে দল এবং সমর্থকদের শুভেচ্ছা জানান পার্থসারথি গাঙ্গুলী। তিনি বলেন, “খেলোয়াড়দের কথা মাথায় রেখে শেষ পর্যন্ত যে এই শিল্ড আয়োজন করা যাচ্ছে তাতে আমরা ভীষণ খুশি। চিকিৎসকদের থেকে সমস্ত পরামর্শ নেওয়া হয়েছে। প্রতিটি ম্যাচের আগে খেলোয়াড়দের চেকআপ করানো হবে। এবার দর্শকশূন্য ময়দানে খেলা হলেও আশাকরি মিডিয়ার মাধ্যমে তা সকলের কাছে পৌঁছে যাবে।”
আইএফএ শিল্ডে এবারের অন্যতম বড় দাবিদার যে মোহামেডান স্পোর্টিং এ নিয়ে কোন সন্দেহ নেই। কোচ জোসে হাবিয়া, ফাতাউ,ফিলিপ আদজা,জামালদের বিদেশি খেলোয়াড়দের নিয়ে এবার যথেষ্ট প্রস্তুত তারা। শিল্ড শুরুর আগে কজ জসে হাবিয়া বলেন,”ফাতাউ ইতিমধ্যেই মাঠে এসে পৌঁছেছেন। কিছুদিনের মধ্যেই আসবেন জামালও। স্বদেশী এবং বিদেশি সমস্ত খেলোয়াড়রাই নিজেদেরকে উজার করে দিতে প্রস্তুত। আমরা ইতিমধ্যেই অনুশীলন শুরু করেছি। আশা করি টুর্ণামেন্টে ভালো ফলাফল করবে মোহামেডান স্পোর্টিং।”
কলকাতার এই দলের সাথে যুক্ত হতে পেরে তিনি যে খুশি একথা জানাতেও আজ ভোলেননি হাবিয়া।সাথে সাথে তিনি এও জানান, “শুধু ফিলিপ নয় সমস্ত দলই আক্রমণাত্মক খেলার দিকেই তাকিয়ে রয়েছে। আমি যে দেশ থেকে এসেছি সেই স্পেন আক্রমণাত্মক খেলার জন্য বিখ্যাত। সেই খেলা এখানে ধরে রাখতে পারলে আমি খুবই খুশি হব।”
শুধু শুধু জামাল ফিলিপ বা ফাতাউয়ের মত বিদেশি নয় দেশীয় খেলোয়াড়দের উপরে জোর দিচ্ছেন মোহামেডান কোচ আজ তার বক্তব্য থেকেই সে কথা পরিষ্কার। অন্যদিকে খুবই কঠিন বিপক্ষ হিসেবে অনেকেই এগিয়ে রাখছেন পিয়ারলেসকেও।পিয়ারলেসের তরফে আজ বাস্তব রায় বলেন,”আমাদের দলে ক্রোমার মত বিদেশি খেলোয়াড় রয়েছে। আশা রাখি এবার মরশুম ভালো যাবে।”
এতদিন পর ফুটবল শুরু হওয়া নিয়ে আশাবাদী ক্রোমাও,তিনি বলেন,”এখানকার খেলোয়াড় এবং আমাদের জন্য এটা খুবই ভালো খবর। প্রতিবছর সর্বোচ্চ গোলদাতা হতে পারলে কার না ভালো লাগবে। আগেরবারের মতো আমি এবারও চেষ্টা করব। এটা সমস্ত খেলোয়াড়দেরই স্বপ্ন সর্বোচ্চ গোলদাতার তালিকায় নিজের নাম লেখানো।
আইএফএ শিল্ড নিয়ে আশাবাদী জর্জ টেলিগ্রাফও।রঞ্জন বাবু বলেন,”যদিও কলকাতার দলগুলি কেউই সেভাবে তৈরি হতে পারেনি এই অল্প সময়ের মধ্যে। তবে এই পদক্ষেপের জন্য আইএফএকে ধন্যবাদ। খেলোয়াড়দের কথা মাথায় রেখে এই প্যানডেমিক সিচুয়েশনের মধ্যেও তারা যেভাবে আয়োজন করেছেন এই টুর্নামেন্ট এবং অবশ্যই ধন্যবাদ জর্জ টেলিগ্রাফকেও কারণ তারা এককথায় খেলতে রাজি হয়েছে। আশা রাখি জর্জ যেমন অন্যদের বিরুদ্ধে ভালো খেলে তেমনি খেলবে।”
রিয়েল কাশ্মীরের পক্ষ থেকে আদান জানান,”আইএফএ কলকাতার প্রেস্টিজিয়াস টুর্নামেন্ট। এর অংশ হতে পেরে আমাদের খুবই ভালো লাগছে। আশা করি এই সিজনে আমরা ভালো ফল করতে পারব। আমাদের দলে যথেষ্ট ভালো খেলোয়াড় রয়েছেন। আশাকরি সেমিফাইনাল অবধি পৌঁছাবে দল। “
ইন্ডিয়ান অ্যারোজ তরফে প্রাক্তন ভারতীয় ফুটবল তারকা তথা কোচ ভেঙ্কটেশ জানান,” এতদিন পরে সকলের মত এই টুর্নামেন্টে নিয়ে আমরা আশাবাদী।আমরা চেষ্টা করব নিজেদের সেরাটা উজার করে দিতে।
খিদিরপুর, বিএসএস এবং কালীঘাটে এবার কোন বিদেশী নেই। মূলত তারুণ্য এবং বাঙালি খেলোয়াড়দেরই প্রাধান্য দিচ্ছেন তারা। সব মিলিয়ে আগামী আইএফএ শিল্ড পেতে মরিয়া সবকটি দলই আজ প্রেস কনফারেন্সে সে কথা জানিয়ে দিতে ভোলেননি দলের কোচেরা।আগামী দিনের শিল্ড কার হাতে উঠবে সে কথা হয়তো বলবে সময়। কিন্তু কলকাতার ফুটবল জ্বরে ভুগছে এ নিয়ে কোন সন্দেহ নেই।