দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরোঃ আজ টি-টোয়েন্টি সিরিজের শেষ ম্যাচে সিডিতে মাঠে নেমেছিল অস্ট্রেলিয়া এবং ভারত। টসে জিতে এদিন আবারও বোলিং করার সিদ্ধান্ত নেন ভারতীয় ক্যাপ্টেন বিরাট কোহলি। ইতিমধ্যেই প্রথম দুটি টি-টোয়েন্টি জিতে সিরিজ পকেটস্থ করেছে ভারতীয় দল। তাই আজ তাদের চোখে ছিল অস্ট্রেলিয়াকে হোয়াইটওয়াশ করার স্বপ্ন।আজ প্রথমেই ফিঞ্চ এবং স্মিথকে হারিয়ে চাপে পড়ে গিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। কিন্তু হাল ধরেন ওয়েড এবং ম্যাক্সওয়েল। ওয়েডের ৮০ এবং ম্যাক্সওয়েলের ৫৪ রানের ইনিংসের দৌলতেই শেষ পর্যন্ত ১৮৬ রানের লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছায় অস্ট্রেলিয়া।
শুরুটা ভালো হয়নি ভারতীয় দলের জন্য প্রথম ওভারেই ম্যাক্সওয়েলের বলে খাতা খোলার আগেই ফিরে যান কে এল রাহুল। ফলে সমস্ত দায়িত্ব এসে পড়ে অধিনায়ক বিরাট কোহলি এবং শিখর ধাওয়ানের উপরে।কিন্তু আজ ম্যাক্সওয়েলের বলে ইনিংসের শুরুতে ক্যাচ দিয়ে বসেন বিরাট কোহলিও। যদিও সেই কাজ তালুবন্দী করতে পারেননি প্রাক্তন অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক স্টিভ স্মিথ। অন্যদিকে আজ ব্যাটে তেমন বল লাগছিল না শিখর ধাওয়ানেরও। তবে সময় খারাপ গেলেও ক্রীজ ছারেননি কেউই। বিশেষত জীবন দান পাওয়ার পরে আরো বেশি আক্রমণাত্মক হয়ে ফিরে আসেন কোহলি।অ্যাবোর্ট, টাই কেউই আজ রেহাই পাননি তার ব্যাট থেকে। পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে হাত খুলতে থাকেন শিখর ধাওয়ানও। অ্যাবোর্টের পরপর দুটি বাউন্ডারি তুলে নেন তিনি।
তাদের এই সুন্দর পার্টনারশিপের দৌলতেই সাত ওভার শেষে ৬১ রানে পৌঁছে যায় ভারতীয় দল। সিরিজের শুরুতে লেগ স্পিনারদের খেলতে কিছুটা সমস্যা হলেও আজ তৈরি ছিলেন কোহলি।বিশেষত সুইপসনের বিরুদ্ধে তাঁর রণনীতি ছিল দেখার মতো। কিন্তু অন্য প্রান্তে আজ বেশিক্ষণ সঙ্গ দিতে পারেননি শিখর। শেষ পর্যন্ত ২৮ রানে লেগ স্পিনার সুইপসনের বলে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান তিনি। তবে নিজের ব্যাটিংয়ে উইকেট পতনের কোন প্রভাব পড়তে দেননি কোহলি। মাত্র ৪০ বলে তিনটি চারের সাহায্যে আজ নিজের অর্ধশত রান পূর্ণ করেন তিনি। যদিও আজ সেভাবে সাথ দিতে পারেননি স্যামসান কিংবা শ্রেয়াস। ফের আর একবার সুযোগ কাজে লাগাতে না পেরে সুইপসনের শিকার হন দুজনেই।
ফলে ভারতকে লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছে দেওয়ার সমস্ত দায়িত্ব এসে পড়ে বিরাট কোহলি এবং হার্দিক পান্ডিয়ার উপর। রানরেট এবং লাগাতার উইকেট পতনের চাপ থাকলেও আজ তা তেমনভাবে চোখে পড়েনি কোহলির ব্যাটিংয়ে।বিশেষত অ্যান্ড্রু টাইয়ের বল যেভাবে অনায়াস ভঙ্গিতে মাঠের বাইরে পাঠান তিনি তা থেকে এটুকু পরিষ্কার ছিল আজ তিনি রয়েছেন অন্য মেজাজে। কিন্তু আজ শুরুতে বেশ কিছুটা সময় নেওয়ার ফলে ভারতের জয়ের জন্য দরকার ছিল ৭৬ রান। এই রান তোলা যে কোন ব্যাটসম্যানের পক্ষেই ছিল যথেষ্ট কঠিন। তবে ১৬ তম ওভারে স্যামসের বলে পরপর দুটি ওভারবাউন্ডারি তুলে নিয়ে তিনি বুঝিয়ে দেন আজ তিনি যতক্ষণ আছেন ততক্ষণ জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছাতে চেষ্টার কোন ত্রুটি হবে না। একই ওভারে কভার অঞ্চলের উপর দিয়ে দুরন্ত একটি ওভার বাউন্ডারি তুলে নেন হার্দিক পান্ডিয়াও।
১৭ তম ওভারে অ্যান্ড্রু টাইয়ের বলেও আজ পরপর একটি বাউন্ডারি এবং একটি ওভার বাউন্ডারি তুলে নেন হার্দিক। ফলে ব্যবধান অনেকটাই কমে আসে ভারতের জন্য। শেষ ১৮ বলে জয়ের জন্য দরকার ছিল ৪৩ রান। কিন্তু ঠিক এই সময় ম্যাচের অভিমুখ আবার ঘুরিয়ে দেন জ্যাম্পা। ওভারের প্রথম বলে মারমুখী হার্দিক পান্ডিয়াকে ২০ রানে ফিরিয়ে দেন তিনি। কিন্তু পরের বলেই বাউন্ডারি তুলে নিয়ে বিরাট বুঝিয়ে দেন আজ শেষ পর্যন্ত লড়াইয়ের মাঠ ছাড়বেন না তিনি। যদিও লড়াইটা অনেকটাই শক্ত হয়ে পড়েছিল তার পক্ষেও। কারণ শেষ দুই ওভারে জয়ের জন্য দরকার ছিল ৩৬ রান এবং শেষ পর্যন্ত ৬১ বলে পাঁচটি চার এবং চারটি ছয়ের সাহায্যে দুরন্ত ৮৫ রানের ইনিংস খেলে ফিরতে হয় বিরাটকেও।অ্যান্ড্রু টাইয়ের বলে ড্যানিয়েল স্যামসের তালুবন্দি হন তিনি। ফলে ১১ বল বাকি থাকতেই বাতাসে জয়ের সুগন্ধ পেতে শুরু করে অস্ট্রেলিয়া।
শেষ ওভারে বড় শট নিতে গিয়ে অ্যাবোর্টের বলে টাইয়ের হাতে ধরা পড়েন ওয়াশিংটন সুন্দরও।শার্দুল কিছু বড় শট খেললেও জয় তখন একপ্রকার অসম্ভবই ছিল ভারতের জন্য। শেষ পর্যন্ত ৭ উইকেটের বিনিময়ে ১৭৪ রানেই শেষ হয়ে যায় ভারতের ইনিংস। ফলে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জিতলেও অস্টেলিয়াকে তাদের মাটিতে হোয়াইট ওয়াশ করার স্বপ্ন অধরাই থেকে যায় বিরাট বাহিনীর।