দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরোঃ মারা গেলেন বেন স্টোকসের বাবা গেড স্টোকস। দীর্ঘদিন যাবৎ নিউজিল্যান্ডে ব্রেন ক্যান্সারের সঙ্গে লড়াই করেছিলেন তিনি। আইপিএল খেলার আগেও বাবাকে দেখতে গিয়েছিলেন স্টোকস। আর সেই কারণেই বেশকিছুদিন রাজস্থান রয়েলস দলে যোগ দিতে পারেননি তিনি। বেন স্টোকসের সেঞ্চুরির পর আঙ্গুল মুড়ে সেই সেলিব্রেশন সকলের চোখে লেগে আছে এখনো। বেন স্টোকসের বাবা গেড স্টোকস ছিলেন প্রাক্তন রাগবি প্লেয়ার। এক সময় পয়সার খুব অভাব হওয়ায় আঙ্গুলের চোটে চিকিৎসা সময়মতো করাতে পারেননি গেড। যার কারণে কেটে বাদ দিতে হয় সেই আঙুলটি। আসলে আঙ্গুলের চিকিৎসা করাতে গেলে চিকিৎসকের পরামর্শমতো বেশকিছুদিন মাঠে নামতে পারতেননা গেড। আর সে সময় তাঁর খেলার আগে থেকেই চলত পরিবার। তাই পরিবারকে বাঁচাতে আঙ্গুল কেটে ফেলার সিদ্ধান্ত নেন গেড।
বাবার এই আত্মত্যাগ সারা জীবন মনে রেখেছেন বেন স্টোকস। ছোট্ট বেনকে নিয়ে একসময় বাবাই নিউজিল্যান্ড থেকে চলে আসেন ইংল্যান্ডে। তারপর সেখানেই বেড়ে ওঠে বেন এবং এক সময় ইংল্যান্ড দলের অন্যতম তারকা অলরাউন্ডার হিসেবে জাতীয় দলে নিজের জায়গা করে নেয়। কিন্তু বাবার এই আত্মত্যাগ তার মনে এত গভীর প্রভাব ফেলেছিল যে প্রতিটি শতরানের পর বাঁহাতের আঙ্গুল মুড়ে আকাশের দিকে তুলে বাবাকে শ্রদ্ধা জানানোর সিদ্ধান্ত নেন তিনি।
জীবনাবসান ঘটল বেনের সেই রোল মডেলের। অক্লান্ত লড়াই করেও শেষ পর্যন্ত জীবনের জোয়ার এ আরেকবার ফিরে আসতে পারলেন না গেড স্টোকস।ব্রেন ক্যান্সার কেড়ে নিল তার জীবন। আইপিএলে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের বিরুদ্ধে সেঞ্চুরি করার পর যেভাবে আঙুল ভরে বাবাকে শ্রদ্ধা জানিয়ে ছিলেন বেন তা হয়তো এখনো চোখে লেগে আছে ভারতীয় ক্রীড়াপ্রেমীদের। কিন্তু আর হয়তো দেখা যাবে না পিতা-পুত্রের অদ্ভুত প্রেমের এই যুগলবন্দী। বাবার ব্রেন ক্যান্সার ধরা পড়ার সময় ভীষণ ভেঙে পড়েছিলেন বেন, তিনি জানিয়েছিলেন সাতদিন প্রায় ঘুমোতে পারেননি তিনি।
৬৫ বছর বয়সে ইংল্যান্ড থেকে আবার স্ত্রী ডোবেরাকে নিয়ে নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে ফিরে গিয়েছিলেন গেড।সেখানেই ধরা পড়ে তার ব্রেন ক্যান্সার। তারপর দীর্ঘ দিনের লড়াই, তবে শেষ রক্ষা হলো না।চির নিদ্রায় চলে গেলেন এক তৃপ্ত পিতা।