দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরোঃ আজকে আইএসএলে মুখোমুখি নেমেছিল বেঙ্গালুরু এফসি এবং নর্থইস্ট ইউনাইটেড এফসি। ম্যাচে নামার আগে পরিসংখ্যান পুরোপুরি কথা বলতে সুনীলদের হয়ে। দুই দলের মোট ৮ বারের সাক্ষাতে ৫ বার জয় এসেছে বেঙ্গালুরুর পক্ষে। মাত্র ১ বার জিততে পেরেছে নর্থইস্ট। আগের বছর লিগে দুটি দলের মুখোমুখি সাক্ষাতে একটি ম্যাচ ড্র হয় এবং অপরটিতে বেঙ্গালুরু জয় পায়। তবে গত ম্যাচে জয় এলেও এবছর এখনও বেঙ্গালুরু এফসি নিজেদের পুরোনো ছন্দ খুঁজে পায়নি। অপরদিকে নর্থইস্টের নতুন কোচ জেরার্ড নাসের কোচিংয়ে দলের বোঝাপড়ায় ক্রমে ক্রমে উন্নতি দেখা যাচ্ছিল। গোয়া, মুম্বাইয়ের মতো দলের বিরুদ্ধে তাদের পারফরম্যান্স সেই কথারই প্রমাণ। আশ্চর্যজনক ভাবে ইদ্রিসা সিলা-কে এই ম্যাচের প্রথম একাদশে রাখেননি নর্থইস্ট কোচ।
আরও পড়ুন- সবুজ মেরুণ শিবিরের হার চিন্তা বাড়ালো ইস্টবেঙ্গলেরও
ম্যাচের প্রথম থেকেই দুই দল একে অপরের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানাতে থাকে। ৩ মিনিটে গত ম্যাচের সুপার সাব পি ভি সুহেরের পাস ধরে পায়ের কাছে ডিফেন্ডারদের নাচিয়ে গোল লক্ষ্য করে শট নেন রোচারজেলা। নর্থইস্টেরই মাচাডোর কাঁধে লেগে দিক পরিবর্তন করে অসহায় গুরপ্রীত সিং সান্ধুকে দাঁড় করিয়ে রেখে বল গোলে ঢোকে। ম্যাচের শুরুতেই গোল খেয়ে একটু থমকে যায় বেঙ্গালুরু। তাদের আক্রমণ গুলি ঠিকঠাক দানা বাঁধতে পারে না খানিকক্ষণ। কিন্তু ১২ মিনিটে রাহুল ভেকের লং-থ্রো থেকে নর্থইস্ট ডিফেন্ডারদের মধ্যে মিসকমিউনিকেশনের সুযোগ নিয়ে গোল করে যান বেঙ্গালুরুর জুয়ানান। এরপরে দুই দলই একটু সতর্ক হয়ে নিজেদের মধ্যে পাস খেলে একে অপরকে মেপে নিতে থাকে। কিন্তু তা ক্ষনিকের জন্য। এরপরেই দুই দল ফের আক্রমণ শানাতে থাকে। একটুর জন্য গোল মিস করেন নর্থইস্টের মাচাডো এবং বেঙ্গালুরুর আশিক কুরুনিয়ান। ৪১ মিনিটে অল্পের জন্য গোল মিস করেন সুনীল ছেত্রী। ৪৪ মিনিটে মাচাডোর শক্তিশালী ফ্রি কিক বাঁচান গুরপ্রীত। অতিরিক্ত সময়ে কর্ণার থেকে করা জুয়ানানের হেড অল্পের জন্য বাইরে যায়। আক্রমণ প্রতিআক্রমণে ভরা প্রথমার্ধ শেষ হয় ১-১ ফলেই।
দ্বিতীয়ার্ধ শুরু হওয়ার ৫ মিনিটের মধ্যে রোচারজেলা কে তুলে ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে দুর্দান্ত ফুটবল খেলা নিনথই-কে নামান নাস। তারপর দু মিনিটের মধ্যে কেওয়েসি-র হেড দুর্দান্তভাবে বাঁচান গুরপ্রীত। বেঙ্গালুরু দ্বিতীয়ার্ধে অনেক বেশি বলের দখল নিয়ে খেলতে থাকে। ৫৯ মিনিটে কেওয়েসির বদলে ইদ্রিসা সিলা-কে মাঠে নামানো হয়। ৬২ মিনিটে খাবরার ক্রস থেকে ডেলগাডোর হেড বাঁচান নর্থইস্ট গোলরক্ষক গরুমিত সিং। তার ঠিক ১ মিনিট পরেই আবার দুর্দান্তভাবে পরিবর্ত হিসাবে নামা বেঙ্গালুরু স্ট্রাইকার অপসেথের শট বাঁচান সেই গরুমিত। চাপ ক্রমশ বাড়াতে থাকে বেঙ্গালুরু। ৬৩ মিনিটে উদান্তা সিং-কে মাঠে নামান কার্লেস কুয়াদ্রাত। নামার পাঁচ মিনিটের মধ্যে নর্থইস্ট ডিফেন্ডারের ঢিলেঢালা মনোভাবের সুযোগ নিয়ে দুরহ কোণ থেকে গোল করে দলকে এগিয়ে দেন উদান্তা। আশুতোষ মেহতাকে এরিয়াল ডুয়েলে পরাস্ত করে উদান্তাকে বলটা হেড করে নামিয়ে দিয়েছিলেন অধিনায়ক সুনীল ছেত্রী। গোটা ম্যাচে ফর্মে না দেখা গেলেও ম্যাচে নিজের ছাপ ছেড়ে যান ভারতীয় অধিনায়ক। কিন্তু ড্রিংকস ব্রেকের ঠিক পরেই জুয়ানানকে পরাস্ত করে গুরপ্রীত সিং সান্ধুর নাগালের বাইরে দিয়ে দুর্দান্ত ফিনিশ করে নিজের দ্বিতীয় গোল করে নর্থইস্টকে ম্যাচে ফেরত আনেন সেই মাচাডো। ৮১ মিনিটে ফের এগিয়ে যাওয়ার সুবর্ণ সুযোগ নষ্ট করে বেঙ্গালুরু। ৮৫ মিনিটে সুনীলের ফ্রি-কিক অল্পের জন্য বাইরে যায়। তারপরও দুই দল বেশ কিছু ভালো আক্রমণ তুলে এনেছিল। কিন্তু শেষপর্যন্ত ২-২ ফলে ড্র করেই মাঠ ছাড়তে হয় দুই দলকে।