দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরোঃ ক্রিকেটের মাঠে শ্রদ্ধার অপূর্ব নিদর্শন আমরা আগেও দেখেছি। নিজে ট্রফি জেতার পরেও অনেকেই ট্রফি তুলে দিয়েছেন তার চোখে ম্যান অফ দ্যা ম্যাচের হাতে। এমন নিদর্শনও ক্রিকেটে বিরল নয়। প্রথমবার ভারতীয় ক্রিকেটের ক্ষেত্রে কোথায় এই নিদর্শন স্থাপন করেছিলেন বিশ্বকাপজয়ী ওপেনার গৌতম গম্ভীর। বিরাট কোহলির প্রথম একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচে শতরানের পর তার হাতে নিজের ম্যান অফ দ্যা ম্যাচ ট্রফি তুলে দেন গৌতম। এ সম্পর্কে পরে অবশ্য একাধিকবার সোশ্যাল মিডিয়ায় মুখ খুলেছেন তিনি নিজেই বলেছেন কেউ যদি আমাকে আমার প্রথম আন্তর্জাতিক শতরানের দিন একটা ট্রফি দিত তবে সেটা আমার কাছে সব থেকে বেশি কাছের হত। আর সেই কারণেই সেদিন বিরাটের হাতে ট্রফি তুলে দিয়েছিলাম আমি যাতে এই দিনটি ও সব সময় মনে রাখে। পরে অবশ্য একাধিকবার বিরাটের সমালোচনাও করেছেন এই দিল্লি তারকা কিন্তু একথা ঠিক যে তিনি যে একজন স্পষ্টবাদী বক্তা এ নিয়ে কোন সন্দেহ নেই। যাইবা হোক কাল ভারত অস্ট্রেলিয়া টি-টোয়েন্টি সিরিজ শেষে এমনই এক নিদর্শন রাখলেন হার্দিক পান্ডিয়া।
ভারতের হয়ে টি-টোয়েন্টি সিরিজে নাম থাকলেও সেভাবে সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি হার্দিক। সেই কারণে বেশ কিছু সমালোচনার ঝড় সহ্য করতে হয়েছে তাকে। যদিও বিতর্কে জড়ানোর অভ্যাস তার এই প্রথম নয়। কিন্তু এবারের টি-টোয়েন্টি সিরিজে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে দুরন্ত ফর্মের নজির রেখেছেন তিনি। বিশেষত গত ম্যাচে তার দুরন্ত ব্যাটের জেরেই প্রায় অসম্ভব পরিস্থিতি থেকে ঘুরে দাঁড়ায় টিম ইন্ডিয়া। সাথে সাথেই সিরিজও পকেটস্থ করে তারা। গতকালকের শেষ ম্যাচেও হার্দিক যতক্ষণ ছিলেন ভারতীয় সমর্থকদের আশা ছিল হয়তোবা আবার কিছু অসাধ্যসাধন করবেন তিনি। যদিও শেষ পর্যন্ত তা হয়নি জ্যাম্পার বলে বড় শট নিতে গিয়ে শেষপর্যন্ত ফিরে যেতে হয় তাকে। কিন্তু একথা ঠিক এই সিরিজের ম্যান অফ দ্য সিরিজের জন্য খুব বেশি মাথা ঘামাতে হয়নি বিশ্লেষকদের। সহজেই সেই পুরস্কার জিতে নিয়েছেন হার্দিক। কিন্তু নিজে পুরস্কার জিতলেও তার চোখে ম্যান অফ দ্য সিরিজ অন্য কেউ। নিজেই নটরাজনের হাতে পুরস্কার তুলে দিয়ে তিনি বলেন,” এই ট্রফি তোমারই প্রাপ্য, তুমিই আমার চোখে এই সফরের ম্যান অব দ্যা সিরিজ।”
অস্ট্রেলিয়ার দুরন্ত ব্যাটিংয়ের সামনে যখন চাহাল, শার্দুল, চাহারদের মতো বোলাররা রান রুখতে ব্যর্থ হয়েছেন তখন সঠিক সময়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্রেক থ্রু দিয়ে টিমকে সাহায্য করেছেন নটরাজন। শুধু তাই নয় দলের হয়ে ডেথ ওভারে বোলিং করার দায়িত্বও নিয়েছেন তিনি। দলে চাহার শার্দুলদের মত অভিজ্ঞ বোলার থাকা সত্ত্বেও, যখন এক তরুণ বাঁহাতি নিজে থেকে দায়িত্ব অর্জন করে নেন আঠারোতম এবং কুড়ি তম ওভার বোলিং করার জন্য তখন বুঝতে হবে কতটা পরিণত মস্তিষ্ক তার। আর সেই কারণেই এই দুরন্ত অভিষেকের পর তার হাতে পুরস্কার তুলে দিলেন ভারতের অন্যতম খ্যাতনামা অলরাউন্ডার হার্দিক পান্ডিয়া।
এর আগেও নিজের সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডেল থেকে বারবার নটরাজনের প্রশংসা করেছেন তিনি। বলেছেন “ও যেভাবে বিষয়টা সহজ রাখে তা আমার খুব ভালো লাগে। ওকে যদি কখনো ইয়ার্কার করতে বলা হয় তাহলেও ইয়ার্কার করবে, ধীর গতির বল করতে বললে সঙ্গে সঙ্গে তা এক্সিকিউট করবে। ওর এই ক্ষমতা আমার ভীষণ পছন্দ।”