দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরোঃ অ্যাডিলেডে গোলাপি বলের টেস্টে বর্ডার গাভাস্কার ট্রফির প্রথম ম্যাচে আজ মুখোমুখি হয়েছিল ভারত এবং অস্ট্রেলিয়া।টসে জিতে আজ প্রথম ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেন ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহলি। তবে সেই সিদ্ধান্ত ব্যাক ফায়ার করতে বেশি সময় নেয়নি।স্টার্কের বলে প্রথমেই প্লেড অন হয়ে ফিরে যান পৃথ্বী শ।আগরওয়ালের সাথে পুজারা কিছুটা প্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টা করলেও সেই প্রতিরোধ বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি বিধ্বংসী বোলিংয়ের সামনে।ফলে মাত্র ১৭ রানেই ফিরতে হয় আগারওয়ালকে। ভারতের দুর্গ রক্ষা করতে প্রথম পর্ব শেষ হওয়ার আগেই মাঠে আসেন কিং কোহলি।তবে বিরুদ্ধ পরিস্থিতিতেও আজ শুরু থেকেই কোহলি রণনীতি ছিল স্পষ্ট, খারাপ বলে আক্রমণ এবং ভালো বলকে সম্মান প্রদান।
দৃঢ় সংযমের সাথে আজ তার অপেক্ষা ছিল খারাপ বলের জন্য। অন্যদিকে পূজারার ডেড ডিফেন্স যেমন ছিল রক সলিড, তেমনি কোহলিও আজ নিজেকে সম্পুর্ন সময় দেন। খারাপ বলের বিরুদ্ধে কাজ শুরু থেকেই তিনি ছিলেন আক্রমণাত্মক। একদিকে যেমন বাউন্সার বা পায়ের দিকে ভেসে আসা বলকে সীমানার বাইরে পাঠাতে কোন ভুল করেননি তিনি, তেমনি লায়নের বলে স্টেপ আউট করে বাউন্ডারি তুলে নিতেও ভুল হয়নি তার। অন্যপ্রান্তে লায়নের উপর আক্রমণাত্মক ছিলেন পুজারাও। ৪৮ তম ওভারে পরপর দুটি বাউন্ডারি তুলে নেন তিনি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেই হাসি হাসেন লায়নই। ১৬০ বলে দুটি চার দিয়ে সাজানো ৪৩ রানের ইনিংস খেলে শেষ পর্যন্ত আউট হয়ে ফেরেন পুজারা। তবে অন্য দিকের উইকেট পতন হলেও নিজের ব্যাটিংয়ে তার কোন ছাপ পড়তে দেননি বিরাট। সহ-অধিনায়ক রাহানেকে সাথে নিয়ে বড় স্কোর তৈরি করার লক্ষ্যে দৃঢ়তার সাথে এগিয়ে চলেন তিনি।শেষ পর্যন্ত বিরুদ্ধ পরিস্থিতিতে ১২৩ বলে পাঁচটি চার দিয়ে সাজানো সুন্দর অর্ধশতক পূর্ণ করেন তিনি।চা পান বিরতির পরে রাহানে এবং কোহলির কাছে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল সুন্দরভাবে সান্ধ্যকালীন পর্ব কাটিয়ে দেওয়া।আজ দু’জনেই আক্রমণাত্মক নীতি অবলম্বন করেন।
সন্ধে গড়ানোর পর পিচ কিছুটা সহজ হয়ে যায় অ্যাডিলেডে। তার ফায়দা তুলতে আজ কোন ভুল করেননি ভারত অধিনায়ক। তবে অন্যদিকে আজ তার সংযমও ছিল শিক্ষণীয়।ইনিংসের শুরুতে লায়নের বলে ক্যাচ দিয়েও একবার বেঁচে যান তিনি। কারণ আম্পায়ার আজ আউট দেননি। কিন্তু তারপর থেকে যেভাবে সংযমী ইনিংস গড়ে তোলেন তিনি তা ছিল অনবদ্য। আজ তার যোগ্য সঙ্গ দেন রাহানেও। পেস এবং স্পিন দুই তরফেই তিনি ছিলেন সমান আক্রমণাত্মক। একদিকে যেমন লায়নের উপর আক্রমণ চালিয়েছিলেন তিনি তেমনি অন্যদিকে হেজেল উড, কামিন্সকেও রেহাই দেননি তিনি।
কিন্তু আজ দুর্ভাগ্যবশত ১৮০ বলে আটটি চারের সাহায্যে ৭৪ রানের ইনিংস খেলে ভুল বোঝাবুঝির কারণে রান আউট হয়ে ফিরে যেতে হয় কোহলিকে। ফলে ১৮৮ রানে চতুর্থ উইকেট হারিয়ে আবার চাপে পড়ে যায় ভারত। রাহানে ব্যাটিং করছিলেন ৪১ রানে।হনুমা বিহারির সাথে জুটি বেঁধে তার দায়িত্ব ছিল আজকের দিনে ভারতকে শেষ অবধি নিয়ে যাওয়া। কিন্তু আজ যেন এই রান আউটের পরে কিছুটা মনসংযোগ হারিয়ে ফেলেছিলেন রাহানে। আর সেই জন্যই শেষ পর্যন্ত স্টার্কের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ৪২ রানে ফিরে ফিরে যান তিনি। ফলে মহা সংকটে পড়ে যায় ভারত কারণ ১৯৬ রানে তারা হারিয়ে ফেলে অর্ধেক দলকে।ফলে ঋদ্ধিমান সাহা এবং হনুমা বিহারির উপর দায়িত্ব ছিল ভারতীয় দলকে সম্মানজনক লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছে দেওয়া। কিন্তু বেশিক্ষণ সঙ্গ দিতে পারেননি হনুমাও। মাত্র ১৬ রানেই হেজেলউডের শিকারে পরিণত হন তিনি।
ফলে সাহার সঙ্গ দিতে মাঠে আসেন রবীচন্দ্রন অশ্বিন। আজ অশ্বিন ছিলেন যথেষ্ট ডিপেন্ডেবল। খারাপ বলের জন্য অপেক্ষা করে সম্পূর্ণ সুযোগ কাজে লাগানোর চেষ্টা করেন তিনি। অন্যদিকে ভালো সাহায্য করেন সাহাও। শেষ পর্যন্ত দিনের শেষে ৬ উইকেটের বিনিময়ে ২৩৩ রানে পৌঁছায় ভারত। এক প্রান্তে ১৫ রানে অপরাজিত থাকেন অশ্বিন অন্যপ্রান্তে ঋদ্ধিমান সাহা অপরাজিত থাকেন ৯ রানে।