দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরোঃআবারো ক্রিকেটে ফিরল একঘন্টার তত্ত্ব। ২০১৯ সালের সেমিফাইনালে হারার পর প্রথম ভারতীয় ক্রিকেটশিবির শিবির থেকে উঠে এসেছিল সময় তত্ত্ব। সমর্থকদের উদ্দেশ্যে জানানো হয়েছিল, সারা সিরিজ ভীষণ ভালো খেলেছে ভারত। কিন্তু মাত্র আধ ঘণ্টা খারাপ খেলার জন্যই বিশ্বকাপ থেকে বেরিয়ে যেতে হলো তাদের। আজ কিছুক্ষণ আগেই গোলাপি বলের টেস্ট হেরেছে ভারত। দ্বিতীয় দিন পর্যন্ত দেখতে গেলে তারা ছিল চালকের আসনে। প্রথম ইনিংসে কোহলির ৭৪, রাহানের ৪২ এবং পূজারার ৪৩ রানের অনবদ্য ইনিংসের দৌলতে ২৪৪ রানের লক্ষ্যমাত্রা খাড়া করে ভারতীয় দল। তাড়া করতে নেমে বুমরাহ উমেশ এবং রবীচন্দ্রন অশ্বিনদের দুরন্ত বোলিংয়ে ১৯১ রানেই থামতে হয় অস্ট্রেলিয়াকে। সৌজন্যে অবশ্যই অধিনায়ক টিম পেইনের দুরন্ত অর্ধশত রান। ৫৩ রানের আরামদায়ক লিড নিয়ে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করে দ্বিতীয় দিন পর্যন্ত এক উইকেটের বিনিময়ে ৯ রান যোগ করে ছিল ভারতীয় দল।
আজ ছিল অ্যাডিলেড টেস্টের তৃতীয় দিন। ৬২ রানের লিড নিয়ে চালকের আসনে ছিল ভারত। কিন্তু যশ হেজেলউড এবং প্যাট কামিন্সের দুরন্ত বোলিংয়ের সামনে মাত্র ৩৬ রানেই অলআউট হয়ে যায় টিম ইন্ডিয়া। স্কোরকার্ড অনেকটা ছিল ফোন নম্বরের মত। চেতেশ্বর পুজারা,বিরাট কোহলি, মায়াঙ্ক আগারওয়াল, অজিঙ্কা রাহানের মতো তারকা ব্যাটসম্যানরা কেউই দুই অঙ্কের স্কোরে পৌঁছতে পারেননি। ফলে টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে ভারতের সর্বনিম্ন স্কোরেই এদিন শেষ হয়ে যায় ভারতীয় ইনিংস। জয়ের জন্য ৯০ রানের লক্ষ্য নিয়ে ব্যাট করতে নেমে। বার্নসের দুরন্ত ৫১ এবং ওয়েডের ৩৩ রানের সঙ্গতের দৌলতে ৮ উইকেট বাকি থাকতেই ম্যাচ জিতে নেয় অস্ট্রেলিয়া। ভারতের হয়ে একমাত্র উইকেটটি তুলে নেন রবীচন্দ্রন অশ্বিন।
এরপর এই পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে মুখ খোলেন কোহলি। তিনি বলেন, “সম্ভবত আমরা সঠিক অভিপ্রায় নিয়ে ব্যাটিং করিনি। এই অনুভূতিকে ভাষায় ব্যক্ত করা সত্যিই কঠিন। আর যখন আমরা মাঠে নেমে ছিলাম আমাদের হাতে ষাটের বেশি রানের লিড ছিল। আমরা গত দু’দিন দুর্দান্ত ক্রিকেট খেলেছিলাম কিন্তু আজকের এক ঘন্টায় আমরা ম্যাচ হেরেছি।”
ভারত অধিনায়ক এও মনে করেন যে আজকের হারের জন্য ব্যাটসম্যানদের মানসিকতাই দায়ী।তিনি বলেন,”ওরা কিছু ভালো বল নিশ্চয়ই করেছে কিন্তু সব বলই সেরকম মারাত্মক ছিলনা।শুধুমাত্র ওরা এমন একটা পরিস্থিতি তৈরি করেছিল যে রান তোলা ছিল কঠিন।ওরা প্রথম ইনিংসের মতো একই জায়গায় বল করেছে। কিন্তু তখন আমাদের মানসিকতা ছিল রান তোলার। আমার মনে হয় এই ব্যাটিং ধ্বসের একটা কারণ যেমন ওদের ভালো বোলিং তেমনি একটা কারণ আমাদের ব্যাটসম্যানদের মানসিকতা।”
এর আগেও পরাজয়ের পর কোহলিকে একই ধরনের মন্তব্য করতে দেখা গেছে। কিন্তু এ কথা মাথায় রাখতে হবে যে এক বা দুই ঘন্টার খারাপ খেলায় যে কোন ম্যাচ হারের কারণ। পরাজয়ের জন্য সব সময় সমস্ত ম্যাচ জুড়ে খারাপ খেলার দরকার পড়ে না। তাই এই ধরনের মন্তব্য থেকে যত তাড়াতাড়ি দূরে সরে আসবে ভারত এবং স্বীকার করে নেবে নিজেদের ভুল। তত তাড়াতাড়ি জয়ে ফেরা সহজ হবে তাদের পক্ষে। এর আগেও ভারতীয় শিবিরের সময় তত্ত্ব বিষয়ক মন্তব্যে এমনই মত রেখেছিলেন ক্রীড়া বিশ্লেষক মহল। এখনো অস্ট্রেলিয়ায় ভারতকে যদি কামব্যাক করতে হয় তবে প্রথম দরকার নিজেদের ভুল স্বীকার করে নেওয়া। তবে এই ম্যাচের পর এই দেশে ফিরছেন কোহলি। সে ক্ষেত্রে ভারতের পক্ষে ঘুরে দাঁড়ানো যে আরও কঠিন হবে এ নিয়ে কোন সন্দেহ নেই। তারওপর পরের ম্যাচে সম্ভবত অনিশ্চিত হয়ে পড়তে পারেন মোহাম্মদ শামিও।সে ক্ষেত্রে সমস্যা আরও বাড়বে বৈ কমবে না।