দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরোঃ সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই নানা প্রশ্ন উঠছে বোর্ডের অন্দরে। এমনিতেই বিসিসিআই প্রেসিডেন্টের বেশকিছু সিদ্ধান্ত নিয়ে ক্ষোভ বাড়ছিল রাজ্য ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনগুলির মধ্যে। আর এখন সেই ক্ষোভ মাথাচাড়া দিচ্ছে বিসিসিআইয়ের অন্যান্য সদস্যদের মধ্যেও। কিছুদিন আগেই ঘোষণা হয়েছিল ইংল্যান্ড ভারত সিরিজের আয়োজক রাজ্যগুলির নাম। তাতে বাদ পড়েছিল পশ্চিমবঙ্গ এবং মুম্বাইয়ের মত বড়োসড়ো ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনগুলি। জানিয়ে যথেষ্ট ক্ষুব্ধ হয় তারা। অনেকেই প্রশ্ন তোলেন বোর্ডের মধ্যে কি চলছে সূক্ষ্ম রাজনীতি?
সূত্রের খবর অনুযায়ী বোর্ডের এজিএম সভায় ২৪ ডিসেম্বর সৌরভের বিরুদ্ধে বেশ কিছু প্রশ্ন তোলা হবে। বিশেষত সৌরভের বিভিন্ন ব্র্যান্ডের বিজ্ঞাপন করা নিয়ে ক্ষুব্ধ অনেক বোর্ডসদস্যই। তাই প্রশ্ন উঠতে পারে বিসিসিআই সভাপতি হবার পর ঠিক কতগুলি ব্র্যান্ডের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন সৌরভ?এদের মধ্যে কতগুলি বোর্ডের স্পন্সরদের স্বার্থবিরোধী?বোর্ডের সভাপতি যখন ক্রিকেটপ্রেমীদের উদ্দেশ্যে ফান্টাসি লীগে অংশগ্রহণ করার আহ্বান জানান তখন তা বোর্ডের ভাবমূর্তিকে নষ্ট করে নাকি?বোর্ডের সাম্মানিক পদে থাকাকালীন কেউ বোর্ডের স্পন্সরদের বিরোধী সংস্থার বিজ্ঞাপন করবেন বিসিসিআই সংবিধানে এই অনুমতি দেয় কি?
আইপিএলের টাইটেল স্পন্সর ছিল ‘ড্রিম ইলেভেন’ কিন্তু বোর্ড সভাপতি সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় ‘ড্রিম ইলেভেন’ ছাড়াও একই ধরনের একটি ফ্যান্টাসি অ্যাপের বিজ্ঞাপন করেন, যার নাম ‘মাই ১১ সার্কেল’। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন ওঠে এই সংস্থা ভারতীয় দলের স্পন্সরদের বিরোধী। তাহলে সৌরভ গাঙ্গুলীর বিসিসিআই প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন এই সংস্থার বিজ্ঞাপন করা উচিত কি? বোর্ডের অনেকেই মনে করছেন স্পন্সররা এটা কখনোই ভালোভাবে নেবে না। একই কথা খাটে ভারতীয় দলের জার্সি স্পন্সর ‘বাইজুস’কে কেন্দ্র করে। ‘বাইজুস’ ছাড়াও একটি অনলাইন শিক্ষামূলক অ্যাপের বিজ্ঞাপন করেন সৌরভ।বোর্ডের মতে ‘বাইজুস’ যেকোনো সময়ের প্রতিবাদ জানাতেই পারে।
এছাড়া প্রশ্ন উঠেছে আইপিএলের নতুন ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোকে নিয়েও? আগামী গ্রুপ যেখানে নতুন দল কিনতে ইচ্ছুক, সেখানে এই সংস্থার একটি ভোজ্য তেলের বিজ্ঞাপন করেন খোদ বিসিসিআই প্রেসিডেন্ট। জেএসডাব্লু সিমেন্ট এর সঙ্গে এক বছরের জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন সৌরভ। আর এই সংস্থা আইপিএলের দিল্লি ক্যাপিটালসের ৫০% শেয়ারের মালিক। এই ধরনের অজস্র প্রশ্ন এখন ঘোরাফেরা করছে বোর্ডের অন্দরে। মনে করা হচ্ছে আগামী বার্ষিক সভায় এই সমস্ত প্রশ্নবাণের মুখোমুখি হতে হতে পারে বর্তমান বিসিসিআই প্রেসিডেন্ট সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কে। এর আগে ইতিহাসবিদ তথা বোর্ডের প্রাক্তন সদস্য রামচন্দ্র গুহ সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কে টাকার কাঙ্গাল বলে কটাক্ষ করেছেন। বিসিসিআই প্রেসিডেন্টের প্রতি এই ধরনের কটাক্ষকে মোটেই ভালো চোখে দেখছে না বোর্ড। কারণ পদের সম্মান সবচেয়ে বেশি। আর সেই কারণেই বোর্ড সদস্যদের অজস্র প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হবে সৌরভকে।