দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরোঃ দিল্লির ফিরোজ শাহ কোটলা স্টেডিয়ামের সামনে প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী তথা ডিজিসিএ প্রেসিডেন্ট অরুণ জেটলির মূর্তি বসানোর বিরোধিতা করে ডিডিসিএর সদস্য পদ ত্যাগ করলেন প্রাক্তন ভারতীয় স্পিনার বিষন সিং বেদি। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, অরুণ জেটলির মৃত্যুর পরে ফিরোজ শাহ কোটলা স্টেডিয়াম এর নাম বদলে অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামও রাখা হয়। তখন এই সিদ্ধান্তের বিরোধীতা করলেও এবার অরুণ জেটলির মূর্তি বসানো তীব্র বিরোধিতা করেন বিষন সিং বেদি। সাথে সাথে তার নামাঙ্কিত স্ট্যান্ড থেকে নাম তুলে নেওয়ার কথা চিঠিতে লিখে জানান তিনি। ডিডিসিএর এই সিদ্ধান্ত নিয়ে স্পষ্টতই যে তিনি বিরক্ত তা জানাতে এদিন কোনো কার্পণ্য করেননি বেদি। তার মূল ক্ষোভের কারণ হলো ক্রিকেটারদের থেকেও প্রশাসকদের অনেক বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে অ্যাসোসিয়েশন।
এ বিষয়ে অরুন জেটলি পুত্র রোহন জেটলিকে তিনি চিঠিতে জানান,”আমি নিজেকে অত্যন্ত ধৈর্যশীল ব্যক্তি বলে মনে করি। কিন্তু ভয় পাচ্ছি সেই ধৈর্য চলে যাচ্ছে আস্তে আস্তে। ডিডিসিএ চাপ দিয়ে আমাকে এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করেছে। তাই সভাপতি মহাশয় আপনার কাছে আমার অনুরোধ, জেস্ট আন্টি আমার নামে করা হয়েছিল সেখান থেকে আমার নাম সরিয়ে দেয়া হোক। আমি ডিডিসিএর সদস্যপদও ত্যাগ করছি।”
১৯৯৯ সাল থেকে ২০১৩ সাল অবধি দীর্ঘ ১৪ বছর ডিডিসিএ-তে প্রশাসকের ভূমিকায় ছিলেন অরুণ জেটলি। তাই তাঁর মৃত্যুর পর তাকে সম্মান জানাতে ছফুটের একটি মর্মরমূর্তি প্রতিস্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে অ্যাসোসিয়েশন। অ্যাসোসিয়েশনের এই উদ্যোগেরই তীব্র বিরোধিতা করেছেন বেদি। এর আগে ২০১৭ সালে মহিন্দর অমরনাথ এবং বিষন সিং বেদির নামে নামাঙ্কিত হয় স্টেডিয়ামের দুটি স্ট্যান্ড।রোহন জেটলিকে পাঠানো এই চিঠিতে বেদি আরও লেখেন, “আমি অনেক ভাবনা চিন্তা করেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমাকে যে সম্মান দেওয়া হয়েছিল আমি তার কোনো রকম অসম্মান করছি না। কিন্তু সকলেই জানেন সম্মান এলে দায়িত্ব বাড়ে। আমি যে মর্যাদা ও সম্মানের সঙ্গে ক্রিকেট খেলে ছিলাম তার জন্যই আমাকে এই সম্মান দেওয়া হয়েছিল। তাই আমি তাদের এই সম্মান এবার ফিরিয়ে দিতে চাই।”
জেটলির কর্মপদ্ধতি নিয়েও যে ক্ষুব্ধ ছিলেন বেদি একথাও এদিন স্পষ্ট করে দেন তিনি। জেটলির ভাষা ব্যবহার, বেশকিছু দুর্নীতি অপছন্দ ছিল তার। এদিন স্পষ্ট তিনি লেখেন,”ডিডিসিএ-তে তিনি যাদের যুক্ত করেছিলেন সেই বিষয়ে আমার আপত্তি ছিল। আমার মনে আছে ওনার বাড়িতে এক বৈঠকে খারাপ মেজাজ ও ভাষা ব্যবহারের প্রতিবাদে আমি বৈঠক ছেড়ে চলে এসেছিলাম। আমি মাথা উঁচু করে চলতে ভালোবাসি। নিজের সময়ে কোটলাতে জেটলি যে দুর্নীতি চালিয়েছেন তার বিরুদ্ধে থাকতে পেরে আমি গর্বিত।”
তবুও অরুণ জেটলির মৃত্যুর পর যখন স্টেডিয়ামের নাম তার নামে নামাঙ্কিত করা হয় তার প্রতিবাদ করেননি বেদি। এদিন সেকথাও স্পষ্ট করেছেন তিনি,”তাড়াহুড়ো করে যখন ফিরোজ শাহ কোটলা স্টেডিয়াম এর নাম অরুণ জেটলির নামে রাখা হয়েছিল আমি তার বিরোধিতা করিনি। ভেবেছিলাম এটা একটা সম্মান দেওয়া। কিন্তু আমি ভুল ছিলাম। এভাবে একজন রাজনীতিবিদের মূর্তি কোটলার মত ঐতিহাসিক স্টেডিয়ামের সামনে বানিয়ে তার মর্যাদাহানি করা হচ্ছে। এভাবে একটা ব্যর্থ সময়কে তুলে ধরার কোন মানে হয় না।”