দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরোঃ বক্সিং ডে টেস্টের প্রথম দিনে ভালো বোলিং পারফরম্যান্সের দৌলতে ইতিমধ্যেই অস্ট্রেলিয়াকে চাপে ফেলে দিয়েছে ভারত। প্রথম ইনিংসে একদিনও গোটা ব্যাট করতে না পেরে ১৯৫ রানে অলআউট হয়ে যায় অস্ট্রেলিয়া ভারতের পক্ষ থেকে আজ বড় ভূমিকা নেন স্পিনাররা। একদিকে যেমন রবীচন্দ্রন অশ্বিন ফিরিয়ে দেন অস্ট্রেলিয়ার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাটসম্যান স্টিভেন স্মিথকে। কেমনি অন্যদিকে কামিন্সকে ফিরিয়ে দেন জাদেজা। অবশ্য আজ শুধু স্টিভ স্মিথকে তুলে নিয়েই থেমে থাকেননি অশ্বিন। ৩০ রানের মারমুখী প্রতিরোধ গড়ে তোলা ওয়েড এবং অধিনায়ক পেইনকেও আজ ফিরিয়ে দেন অশ্বিন।
অজিভূমে ভারতীয় স্পিনারদের এই পারফরমেন্সে স্বাভাবিকভাবেই খুশি ক্রীড়া বিশ্লেষক থেকে শুরু করে প্রাক্তন ক্রিকেটাররাও। বীরেন্দ্র সেহবাগ থেকে শুরু করে সকলেই যখন প্রশংসা করছেন, তখনই দ্বিতীয় ইনিংসে বোলিংয়ের আগে রবীচন্দ্রন অশ্বিন এবং রবীন্দ্র জাদেজাকে গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দিলেন লিটল মাস্টার শচীন টেন্ডুলকার। শচীনের মতে, দ্বিতীয় ইনিংসে বল হাতে রবীন্দ্র জাদেজার থেকেও অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে চলেছেন অফ স্পিনার অশ্বিন। এদিন নিজের ফেসবুক পেজ থেকে এক ভিডিও বার্তায় লিটিল মাস্টার বলেন, “আমি মনে করিনা বলের পরিবর্তনে তেমন কিছু এসে যায় তার থেকেও অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ হলো সার্ফেস বা পিচ। বিশেষত বাইরের দেশের সফরে প্রথম দিন পিচ কিছুটা আদ্র থাকে তখন বল বেশি গ্রিপ করে। তখন সাধারণ অফস্পিনের ওপরেই বেশি গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন, যেমন একজন বাঁহাতি বোলারের ক্ষেত্রে প্রয়োজন অর্থোডক্স বলের উপর বেশি গুরুত্ব দেওয়া। কিন্তু দ্বিতীয় বা তৃতীয় দিন যখন পিচ আরো শক্ত হতে থাকে, বলের পারচেজ কমে যায় তখন অফস্পিনারদের বেশি টপ স্পিনের উপর প্রাধান্য দিতে হয়। আর এই কারনেই চতুর্থ এবং পঞ্চম দিনে বোলাররা “সাইড ওয়েজ” বল করতে পছন্দ করেন। কারণ তখন বল পিচের ভাঙ্গা অংশগুলিতে পড়ে হঠাৎ করে অনেকটা বেঁকে যায়। আবার যেখানে পিচ ততটা ভাঙ্গে না সেখানে বল স্কিড করে যায়।”
https://www.facebook.com/SachinTendulkar/videos/844354133017159/
শচীন আরও যোগ করেন,”তাই আমার পরামর্শ হলো প্রথম দিন সাধারণ অফস্পিনের ওপরই বেশি নির্ভর করা উচিত এবং ম্যাচ যত এগোবে ততবেশি বাউন্স এবং টপ স্পিন করার দিকে মনোযোগ দেয়া উচিত। বিশেষত বাইরের দেশে এই পদ্ধতি খুবই ভালো কাজ দেয়।”
রবীচন্দ্রন অশ্বিন এক সময় নিজেই বলেছিলেন একজন অফ স্পিনারের কাছে সবচেয়ে কঠিন জায়গা হল অস্ট্রেলিয়া। একই কথা স্বীকার করেছিলেন বর্ষিয়ান অফস্পিনার হরভজন সিংহও। কারণ একথা সত্যি যে অস্ট্রেলিয়ার পিচে অফস্পিনার বা ফিঙ্গার স্পিনারদের জন্য খুব একটা সুবিধা থাকে না। তবে অবশ্যই প্রশংসা করতে হবে দুই পক্ষের দুই অফ স্পিনারের। একদিকে যেমন দুরন্ত বোলিং করেছেন নাথান লায়ন। অন্যদিকে তেমনি রবীচন্দ্রন অশ্বিনও সুন্দরভাবে কাজে লাগিয়েছেন তার বোলিংয়ের বিভিন্নতাকে। বিশেষত উইকেট টু উইকেট বল রেখে অফ স্টাম্প থেকেই অনেক বেশি বল স্পিন করাতে দেখা গেছে তাকে এবং সবচেয়ে বড় কথা হল টেস্ট বোলারের একটি বড় গুণ ধারাবাহিকতা। লাইন এবং লেন্থে সেই ধারাবাহিকতা সুন্দরভাবে বজায় রেখেছেন রবীচন্দ্রন অশ্বিন। যা তাকে সফলতা শিখরে পৌঁছে দিয়েছে।