দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরোঃ আজ মেলবোর্ন টেস্টের তৃতীয় দিনে ব্যাট করতে নেমে প্রথমভাগে অজিঙ্কা রাহানের শতরান এবং রবীন্দ্র জাদেজার দুরন্ত অর্ধশত রানের দৌলতে অস্ট্রেলিয়ার ১৯৫ রানের জবাবে ৩২৬ রানের বড় লক্ষ্যমাত্রা খাড়া করে ভারত। ভারতের কাছে আজ মোট লিড ছিল ১৩১ রান। জবাবে ব্যাট করতে নেমে আজ শুরু থেকেই নতুন বলে যথেষ্ট সমস্যার মুখে পড়েছিল অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটসম্যানরা। উমেশ যাদবের দুরন্ত আউট স্যুইং সামলাতে না পেরে পান্থের হাতে ক্যাচ দিয়ে বসেন জো বার্ন্স।
অপরপ্রান্তে ম্যাথু ওয়েডকে সাথে নিয়ে পার্টনারশিপ গড়ে তোলার চেষ্টা করেন লাবুশানে। কিন্তু ঠিক যখন দেখে মনে হচ্ছিল কিছুটা সমস্যা হতে পারে ভারতের জন্য তখনই ব্যক্তিগত ২৮ রানে তাকে ফিরিয়ে দেন রবীচন্দ্রন অশ্বিন। স্বাভাবিকভাবেই আরেকবার দল নির্ভর হয়ে পড়ে ম্যাথু ওয়েড এবং স্টিভ স্মিথের উপর। রবীচন্দ্রন অশ্বিনের স্পিনের ঘূর্ণিঝড় কোন ভাবে সামাল দিলেও চা পান বিরতির একটু পরেই ব্যক্তিগত ৮ রানের মাথায় বুমরাহ এর বলে অফস্টাম্পে সাফেল করতে গিয়ে বোল্ড হন তিনি। ফলে ৭১ রানে নিজেদের তৃতীয় উইকেট হারিয়ে বেশ চাপে পড়ে যায় অস্ট্রেলিয় দল। তবে অন্যদিকে ভারতের তরফেও ভালো খবরের সাথে সাথে ছিল একটি বড় দুঃসংবাদ। ভালো শুরু করে প্রথম উইকেট তুলে নেবার পরে বোলিং করতে গিয়ে চোট পান উমেশ যাদব। ফলে তিনি আর বোলিংয়ের জন্য মাঠে নামতে পারেননি। যা অনেকটাই সুবিধা করে দেয় অজি বাহিনীর।
কিন্তু ১৩৭ বল ধরে তীব্র পরিশ্রম করা ম্যাথু ওয়েডের তিনটি বাউন্ডারি দিয়ে সাজানো ৪০ রানের ইনিংস শেষ হয়ে জাদেজার হাতে। তার ভিতরে ঢুকে আসা আর্ম বল বুঝতে না পেরে এলবিডব্লিউ হন তিনি। ফলে ৯৮ রানে নিজেদের চতুর্থ উইকেট হারিয়ে আবারও চাপে পড়ে যায় অস্ট্রেলিয়া। যদিও এখনও যথেষ্ট ব্যাটিং বাকি অজি শিবিরে কিন্তু দু তরফ থেকে অশ্বিন এবং জাদেজার স্পিন খেলতে যে যথেষ্ট সমস্যা হচ্ছিল তাদের এ নিয়ে কোন সন্দেহ নেই। একদিকে যেমন চাপ তৈরি করেছিলেন রবীচন্দ্রন অশ্বিন। অন্যদিকে তেমনি উইকেট শিকারের দিকে মনোযোগ দিয়েছিলেন জাদেজা।
তবে যখন মনে হচ্ছিল হেড এবং গ্রীন কিছুটা প্রতিরোধ গড়ে তুলবেন। তখনই বোলিং পরিবর্তন করে সিরাজকে নিয়ে আসেন রাহানে। আর এসেই অধিনায়কের এই নির্বাচনের মূল্য দেন সিরাজ। তার নতুন স্পেলের প্রথম বলেই স্লিপে আগরওয়ালের হাতে ক্যাচ দিয়ে ১৭ রানে ফিরে যান ট্রাভিস। ফলে অস্ট্রেলিয়ার শেষ আশা ছিল অধিনায়ক টিম পেইন এবং ক্যামরন গ্রিন। ভারতের স্কোর থেকে তখনো ৩৩ রান দূরে ছিল অস্ট্রেলিয়া। কিন্তু ভারতের জন্য খুব বেশি সমস্যা তৈরি করতে পারেননি অধিনায়ক টিম পেইন। জাদেজার বলে উইকেট কিপার ঋষভ পান্থের হাতে ক্যাচ দিয়ে মাত্র এক রানে সাজঘরে ফিরে যান তিনি। ফলে গভীর সমস্যায় পড়ে যায় অস্ট্রেলিয়া। জয় তো দূরস্ত ইনিংস হার সামলানোই ছিল যথেষ্ট কঠিন কাজ। অবশ্যই তারিফ করতে হবে অধিনায়ক রাহানেরও। আম্পায়ার পেইনকে আউট না দিলেও সঠিক সময়ে ডিআরএসের জন্য আবেদন করেন তিনিই।
তবে লজ্জাজনক হারের মুখ থেকে অস্ট্রেলিয়াকে বাঁচিয়ে দেন ক্যামেরণ গ্রীন এবং প্যাট কামিন্স। নতুন করে আর কোনো উইকেট পতন হতে দেননি তারা। অশ্বিন জাদেজাকে তো বটেই সিরাজ এবং বুমরাহকেও যথেষ্ট ভাল সামাল দেন তারা। প্রশংসা করতে হবে মোহাম্মদ সিরাজেরও। উমেশ যাদব না থাকা সত্ত্বেও বুমরাহের সাথে যেভাবে ভারতীয় জোরে বোলিংকে সামলান তিনি তা সত্যিই অনবদ্য। দিনশেষে গ্রীন এবং কামিন্সের পার্টনারশিপের দৌলতেই ভারতের স্কোর পেরিয়ে ২ দিল্লির সংগ্রহ করে অস্ট্রেলিয়া দল। ৬ উইকেট হারিয়ে এখন তাদের স্কোর ১৩৩ রান। দিনশেষে ১৭ রানে অপরাজিত রয়েছেন গ্রীন এবং ১৫ রানে অপরাজিত রয়েছেন কামিন্স।