দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরোঃ মেলবোর্নে ঐতিহাসিক টেস্ট জয় পেয়েছে ভারত। সবচেয়ে বেশি মেলবোর্নে মোট চারটি টেস্ট জয় করে ইতিমধ্যেই রেকর্ডের খাতায় নাম লিখিয়েছে তারা। শুধু দল নয় রেকর্ডের তালিকায় নাম তুলেছেন খেলোয়াড়রাও। এই ঐতিহাসিক জয়ের পর বোলার হিসেবে মুরলীধরন, অনিল কুম্বলেদেরও টেক্কা দিয়েছেন এক ভারতীয় অফস্পিনার। রবীচন্দ্রন অশ্বিন ছাড়া তিনি আর কেইবা হতে পারেন। ভারতীয় ক্রিকেটের রেকর্ডের তালিকায় শুরুর থেকেই বেশ ওপরের দিকে থাকে রবীচন্দ্রন অশ্বিনের নাম। তবে মাঝখানে বেশ কিছুদিন ব্যাট হাতে সেরকম প্রদর্শন না করতে পারলেও বল হাতে আজও তিনি একই রকম চ্যাম্পিয়ন।
সেটাই আরেকবার প্রমাণিত হলো অ্যাডিলেড এবং মেলবোর্নে। ভারতীয় স্পিন বোলিং বিভাগের প্রধান দায়িত্ব সামলানো অশ্বিন এবার রেকর্ড বুকে নিজের নাম তুললেন কিছুটা অন্যভাবে। সর্বশ্রেষ্ঠ উইকেট শিকারী হতে হয়তোবা তার এখনো অনেকটা দেরি আছে। কিন্তু সবচেয়ে বেশি বাঁহাতি ব্যাটসম্যান শিকার করে এই মুহূর্তে তালিকার প্রথম স্থানে উঠে এলেন রবীচন্দ্রন অশ্বিন। দ্বিতীয় ইনিংসে জোশ হজলউডকে বোল্ড করে এই বিরল কৃতিত্বের অধিকারী হন তিনি। এই মুহূর্তে রবিচন্দ্রন অশ্বিনের উইকেট তালিকায় আউট হওয়া বাঁহাতি ব্যাটসম্যানদের সংখ্যা ১৯২।
শ্রীলংকার কিংবদন্তি অফ স্পিনার মুরলীধরন এক্ষেত্রে এক উইকেটে পিছিয়ে পড়লেন অশ্বিনের থেকে। সারা জীবনে তিনি বাঁহাতিদের সাজঘরে ফেরত পাঠিয়েছেন ১৯১ বার। এদিন মেলবোর্নে অস্ট্রেলিয়ার মাঠে যা টপকে গেলেন অশ্বিন। মুরলীর পরে এক্ষেত্রে সবথেকে বেশি বাঁহাতি উইকেট শিকারের রেকর্ড রয়েছে ইংল্যান্ডের জোরে বোলার জেমস অ্যান্ডারসনের নামে। তিনি তার কেরিয়ারে ১৮৬ বার আউট কোরেছেন বাঁহাতি ব্যাটসম্যানদের। অস্ট্রেলিয়ান কিংবদন্তি গ্লেন ম্যাকগ্রা এবং শেন ওয়ার্ন দুজনেই ১৭২ বার ফেরত পাঠিয়েছেন বাঁহাতিদের। ভারতীয় কিংবদন্তি অনিল কুম্বলে বাঁহাতিদের সাজঘরে ফিরিয়েছেন ১৬৭ বার।
অবশ্য শুধু রবীচন্দ্রন অশ্বিন নয়, অজি ভুমে নিজের অভিষেক ম্যাচে দুরন্ত ৫ উইকেট সংগ্রহ করে রেকর্ড তালিকায় নাম লিখিয়েছেন মোহাম্মদ সিরাজও। বাবা ঘাউস মোহাম্মদের শেষ সময়ে পাশে থাকতে পারেননি সিরাজ। কিন্তু প্রথমবার দলে সুযোগ পেয়েই বিরল কৃতিত্বের অংশীদারদের তালিকায় নিজের নাম অঙ্কিত করে বাবাকে সম্মান জানালেন তিনি। এদিন দুরন্ত বোলিং করেন এই ডেবিউ টান্ট। প্রথম ইনিংসে লাবুশানে এবং ক্যামেরন গ্রীনকে ফেরানোর পর দ্বিতীয় ইনিংসেও তিনটি গুরুত্বপূর্ণ উইকেট তুলে নেন সিরাজ। বিশেষত তা আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে কারণ দ্বিতীয় ইনিংসে বোলিং করার সময় চোট পেয়ে উমেশ যাদবকে বেরিয়ে যেতে হয় মাঠের বাইরে। ফলে পাঁচ বোলার থেকে চার বোলারে পরিণত হয় ভারতীয় দল। তারপরও যেভাবে নিজের ম্যাচিউরিটি দেখিয়েছেন সিরাজ তা সত্যিই অনবদ্য।
দ্বিতীয় ইনিংসেও তিনি ফিরিয়ে দেন হেড, গ্রীন এবং লায়নকে। বিশেষত মাঠে প্রায় মাটি কামড়ে পড়ে থাকা গ্রীনের উইকেট ছিল ভারতীয় দলের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ম্যাচ শেষে মোট ৭৭ রানের বিনিময়ে ৫ উইকেট সংগ্রহ করেন সিরাজ। শেষ ৫০ বছরে অস্ট্রেলিয়ায় সফররত অভিষেককারী বোলারদের তালিকায় পাঁচ বা পাঁচের বেশি উইকেট নিয়েছেন মাত্র চারজন। যার মধ্যে রয়েছেন ইংল্যান্ডের ফিল ডেফ্রেটিয়াস(৫-৯৪) এবং অ্যালেক্স ট্যুডার(৫-১০৮)। শ্রীলংকার কিংবদন্তি পেসার মালিঙ্গা (৬-৯২) এবং তালিকায় নাম তুলে নিয়েছেন ভারতের সিরাজ(৫-৭৭)।