দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরোঃ আজ অস্ট্রেলিয়া ৩৩৮ রানের জবাবে ব্যাট করতে নেমে গতকালের ৯৬ রান বোর্ডে নিয়ে লড়াই শুরু করে ভারত। তবে সেভাবে জ্বলে উঠতে পারেননি গত ম্যাচের নায়ক তথা অধিনায়ক অজিঙ্কা রাহানে। মাত্র ২২ রানেই নিজের উইকেট কামিন্সের খাতায় তুলে দিয়ে সাজঘরে ফেরেন তিনি। ব্যর্থ হন হনুমাও। বলতো ভারতকে অস্ট্রেলিয়ার লক্ষ্যের কাছাকাছি পৌঁছে দেবার দায়িত্ব এসে পড়েছিল পান্থ এবং পূজারার উপর। নিজের আক্রমণাত্মক ব্যাটিং দিয়ে অস্ট্রেলিয়াকে আর যথেষ্ঠ চাপে রেখেছিলেন পান্থ। অন্যদিকে একই রকম রক সলিড ছিলেন পূজারাও। ফলতো ভোজন বিরতি অবধি দুজনের কাছ থেকেই ভালো ইনিংসের স্বপ্ন দেখছিল ভারত।
কিন্তু বিরতির পর মাঠে নেমে কামিন্সের বাউন্সার সামলাতে গিয়ে হাতে চোট পান ঋষভ। যন্ত্রণা নিয়েও লড়াই ছেড়ে যাননি তিনি। মাঠে থেকে পুজারাকে সাহায্য করার যথেষ্ট চেষ্টা করেন আজ। কিন্তু চোটের কারণে কোথাও ব্যাঘাত ঘটেছিল তার মনোযোগে। আর সেই কারণেই ৬৭ বলে চারটি বাউন্ডারি সাহায্যে ৩৬ রানের গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলার পর হেজেলউডের বল ড্রাইভ করতে গিয়ে ফার্স্ট স্লিপে ওয়ার্নারের হাতে ক্যাচ দিয়ে বসেন তিনি। তবে তখনো বোঝা যায়নি তার চোট কতটা গুরুতর। কিন্তু এর পরেই স্ক্যানের জন্য হসপিটালে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। এরকম একটি বলের আঘাতের কারণেই কনুইয়ের হাড় ভেঙে দেশে ফিরে আসতে হয়েছে মোহাম্মদ শামিকে। পান্থের ক্ষেত্রেও সে রকম কোনো সমস্যা হলো কিনা তা জানতেই আজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে।
তাই আজ অস্ট্রেলিয়ার দ্বিতীয় ইনিংস শুরু হতে পান্থের বদনে উইকেটকিপার হিসেবে মাঠে আসেন ঋদ্ধিমান সাহা। মাঠে এসেই নিজের ওইকেট কিপিং স্কিলের আরেকবার চাক্ষুষ প্রমাণ দেন তিনি। সিরাজের দুরন্ত আউট স্যুইং পুকোভস্কির ব্যাটের কানায় ছুঁতেই ডানদিকে বাজের মতো উড়ে সেই ক্যাচ তালুবন্দি করেন ঋদ্ধি। প্রথম ইনিংসে যথেষ্ট সমালোচিত হয়েছিল পান্থের উইকেটকিপিং স্কিল। তারপর ঋদ্ধির এই দুরন্ত ক্যাচ অবশ্যই বুঝিয়ে দিল টেস্ট ক্রিকেটে একজন দক্ষ উইকেটকিপারের কতখানি দরকার। যদিও দিন শেষে ১৯৭ রানের লিড সংগ্রহ করেছে অস্ট্রেলিয়া এবং বলাই যায় সিডনি টেস্টে আপাতত চালকের আসনে রয়েছে তারাই। একদিকে ৪৭ রানে অপরাজিত রয়েছেন লাবুশানে, অন্যপ্রান্তে ২৯ রানে অপরাজিত রয়েছেন স্মিথ। তবে এ কথা মাথায় রাখা দরকার প্রথম ইনিংসে দু দুবার জীবন দান পেয়েছিলেন লাবুশানে। আর তারপরেই ৯১ রানের দুরন্ত ইনিংস খেলে অস্ট্রেলিয়াকে বড় রানের লক্ষ্যে এগিয়ে দেন তিনি। তাই শুরুতেই তাকে ফেরানো গেলে হয়তোবা আজ এত বড় লিড পেতে হতো না ভারতকে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য এই ম্যাচে ব্যাটিংয়ের সময় আঙুলে চোট পান জাদেজাও। বাঁ হাতের বুড়ো আঙ্গুলের এই চোট আগেও ভুগিয়েছে তাকে। আজও এরপর থেকে আর বোলিং করতে আসতে পারেননি তিনি। বিসিসিআই সূত্রের খবর তাকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে স্ক্যানিংয়ের জন্য। এখন কাল তাকেও যদি না পায় ভারতীয় দল তাহলে ব্যাটিং-বোলিং দু’জায়গাতেই ভুগতে হবে তাদের। কারণ প্রথম ইনিংসে চার উইকেটে নিয়ে জাদেজা প্রমাণ করে দিয়েছিলেন দলের জন্য তিনি কতখানি গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়া ব্যাটিংয়েও দুরন্ত ফর্মে রয়েছেন তিনি। তাই শামি, উমেশ, রাহুল, ইশান্তের পর তাকেও যদি হারাতে হয় ভারতকে। তাহলে যে যথেষ্ট সমস্যায় পড়বে টিম ম্যানেজমেন্ট এ নিয়ে কোন সন্দেহ নেই।