দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরোঃদিল্লির কৃষক আন্দোলন নিয়ে ইতিমধ্যেই সরগরম রাজনৈতিক ময়দান। কিন্তু কৃষকদের এই আন্দোলন শুধু আর দেশের সীমানায় থেমে নেই। দুমাস ধরে আন্দোলনের পর, বারবার আলোচনা করেও কোনো সমাধান সূত্র বেরোয় নি। রাকেশ টিকাইতদের মত কৃষক নেতাদের বক্তব্য একটাই, কৃষক বিরোধী এই কালো আইন ফিরিয়ে নিল সরকার। কোনরকম সংশোধনে তাদের মত নেই। অন্যদিকে প্রজাতন্ত্র দিবসের দিন, লালকেল্লায় ভারতীয় পতাকার পাশে নিজেদের ধর্মীয় পতাকা লাগিয়ে দেন কৃষকদের একটি অংশ। সেই ঘটনার পর থেকেই পরিস্থিতি আরো জটিল হতে থাকে কৃষক এবং সরকারের মধ্যে। ব্যারিকেড, কাঁটাতার তো বটেই এমনকি রাস্তায় পেরেক দিয়েও কৃষকদের দিল্লি আগমন আটকে দেওয়ার চেষ্টা শুরু করেছে দিল্লি পুলিশ। আর এর পরেই এই বিষয় নিয়ে সরব হয়ে উঠেছেন বিভিন্ন দেশের সমাজকর্মী এবং বুদ্ধিজীবীরা। সাম্প্রতিককালে কৃষকদের আন্দোলনের পাশে দাঁড়িয়ে ভারতের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন বিশ্বখ্যাত পপস্টার রিহানা , সমাজকর্মী গ্রেটা থুনবার্গ থেকে প্রাক্তন পর্নস্টার মিয়া খালিফা। টুইটারে কৃষক বিক্ষোভের প্রচার শুরু করেছেন তাঁরা।
ভারতীয় বিদেশমন্ত্রক এবং কেন্দ্রীয় সরকার এটিকে মোটেই ভালো চোখে দেখেনি। তাদের মতে এটি ভারতের সম্পূর্ণ আভ্যন্তরীণ ঘটনা, বর্হিশক্তির কোনরকম পরামর্শ এক্ষেত্রে গ্রহণীয় নয়। এই কথা মাথায় রেখেই টুইটারে “ইন্ডিয়াটুগেদার” এবং ”ইন্ডিয়া এগেনস্ট প্রোপাগান্ডা” ইত্যাদি হ্যাশট্যাগ শুরু করা হয়েছে ভারতের তরফে। ইতিমধ্যেই শচীন তেণ্ডুলকর, সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়, বিরাট কোহলি, অজিঙ্কা রাহানে, রবি শাস্ত্রী, অক্ষয় কুমার, লতা মঙ্গেশকর, সুনীল শেট্টি, করণ জোহরদের মতো সেলেবরা ভারতের জাতীয় সংহতির কথা বলেছেন। তাদের মন্তব্য বিশ্বের সংগতি সঙ্গে কোনো আপোস চলবে না। গতদিন নিজের টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে বিরাট লেখেন, ‘‘আসুন, এই মতবিরোধের মধ্যে আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ থাকি। কৃষকরা দেশের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। আমি নিশ্চিত, এই সমস্যার সমাধান পাওয়া যাবে, শান্তি ফিরবে এবং আমরা একসঙ্গে এগিয়ে যাব।’’
এই ঘটনার আগে পর্যন্ত অবশ্য বিরাট কোহলি বা অন্যান্য তারকা ক্রিকেটারদের কৃষক আন্দোলন বিষয়ে তেমন মন্তব্য করতে দেখা যায়নি। আর তার কারণেই ট্রোলিং শুরু করেন সোশ্যাল মিডিয়ার নেটিজেনরা। তাদের অনেকেরই বক্তব্য যখন দুশো চাষী মারা গেল তখন কেন কোনো মন্তব্য করেননি বিরাট সহ অন্যান্য ক্রিকেটাররা। প্রায় সব সেই কথার জবাব দেওয়ার মতো করেই আজ সাংবাদিক সম্মেলনে বিরাট জানান, “কৃষি আন্দোলন নিয়ে টিম মিটিংয়ে সামান্য আলোচনা হয়েছে। প্রত্যেকেই নিজের নিজের বক্তব্য রেখেছেন।” যদিও ঠিক কী কথা হয়েছে তা খুলে বলেননি বিরাট। কিন্তু একথা ঠিক যে ভারতীয় ড্রেসিংরুম পর্যন্ত পৌঁছেছে কৃষক আন্দোলনের আঁচ।
এদিন একই সাংবাদিক সম্মেলন থেকে আগামীকালের দল সম্পর্কে বেশকিছু তথ্য জানান ভারত অধিনায়ক। একদিকে যেমন কিপার হিসেবে তারা ঋষভ পান্তকেই ব্যাক করছেন বলে জানা গেছে। অন্যদিকে তেমনি অস্ট্রেলিয়ায় দুর্দান্ত পারফরম্যান্স এরপর ওপেনিংয়ের ক্ষেত্রেও শুরু করবেন শুভমান গিল এবং রোহিত শর্মাই। এদিন বিরাট জানান, “আমরা সবকটি টেস্টেই রোহিত এবং গিলের দিকেই তাকিয়ে রয়েছি। আশা করি অস্ট্রেলিয়ার মতই শুরুতে ওরা আমাদের আবার ভালো স্টার্ট দেবে। অস্ট্রেলিয়ায় যে ধরনের টেস্ট আমরা জিতেছি তার একটা মূল কারণ ছিল আমরা ভালো শুরু পেয়েছিলাম। টেস্ট ক্রিকেটের ক্ষেত্রে এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং রোহিত -শুভমান ঠিক সেটাই করছে। তাই আমাদের শক্তিশালী অবস্থানে রাখার ক্ষেত্রে এই সিরিজে ওদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকবে বলেই আমি মনে করি।”