দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরোঃ ইংল্যান্ডের ৫৭৮ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে গতকাল পুজারা এবং পান্থ ছাড়া দাঁড়াতে পারেননি তেমন কেউই। পূজারার ৭৩ এবং পান্থের দুরন্ত ৯১ রানের সৌজন্যে কিছুটা এগোলেও দিন শেষ হতে হতে ৬ উইকেট হারিয়ে ২৫৭ রানে পৌছায় ভারত। ক্রিজে অপরাজিত ছিলেন তরুণ ওয়াশিংটন সুন্দর এবং রবীচন্দ্রন অশ্বিন। তখনো ফলোঅন থেকে ১২১ রান দূরে ছিল ভারত। তবে আজ সকালে অস্ট্রেলিয়ার ভালো ফর্ম এবং আত্মবিশ্বাস কাজে লাগান দুজনেই। মাত্র ৮২ বলে আজ নিজের দুরন্ত অর্ধশতক পূর্ণ করেন ওয়াশিংটন সুন্দর। নিজের অভিষেক ম্যাচে ঘরে এবং বাইরে দুই জায়গাতেই অর্ধশতক পূর্ণ করে রুশী মোদি, অমরনাথ, সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়, অরুণ লাল, হার্দিক পান্ডিয়া, মায়ানক আগারওয়াল দের সাথে একই তালিকায় জায়গা করে নেন তিনি। এমনকি নতুন বল আসার পরেও একই রকম মানসিকতা ছিল দুজনেরই। হাতের কাছে খারাপ বল পেলেই তাতে বাউন্ডারি ঠিকানা লিখে দেওয়ার চেষ্টা করছিলেন অশ্বিন এবং ওয়াশিংটন। বোঝাই যাচ্ছিল অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে খেলা অশ্বিনের তিনি তার আত্মবিশ্বাস অনেকটাই বাড়িয়ে দিয়েছে।
বিশেষত জিমি অ্যান্ডারসন এবং জোফরা আর্চারদের বিরুদ্ধে যেভাবে একের পর এক কভার ড্রাইভ ফেলেছিলেন তিনি, তাতেই বোঝা যাচ্ছিল ব্যাটিং নিয়ে এখন ভীষণ আত্মবিশ্বাসী তিনি। এই টেস্ট ড্র করানোর জন্য ভারতের একমাত্র লক্ষ্য ছিল যতক্ষণ বেশি ব্যাট করা যায় ততক্ষন ব্যাট করা। আর সেই লক্ষ্যেই আস্তে আস্তে এগিয়ে চলেছিলেন দুজনে। নতুন বলে জোরে বোলাররা তেমন ফায়দা তুলতে না পারলেও আজ রবীচন্দ্রন অশ্বিন এবং ওয়াশিংটন সুন্দরের ৮০ রানের পার্টনারশিপ ভঙ্গ করেন বাঁহাতি স্পিনার লিচ। ৯১ বলে তিনটি বাউন্ডারি এবং একটি ওভার বাউন্ডারি সাহায্যে ৩১ রানের গুরুত্বপূর্ণ যোগদান রেখে বাটলারের দুরন্ত ক্যাচের সৌজন্যে সাজঘরে ফেরেন তিনি। তবে এই জুটির মরণপণ লড়াই ভারতের যন্ত্রণাকে কিছুটা লাঘব করে এ নিয়ে কোন সন্দেহ নেই। অন্যদিকে ওয়াশিংটন সুন্দরের লক্ষ্য ছিল শাহবাজ নাদিমকে সাথে নিয়ে লড়াই চালিয়ে যাওয়া এবং ইংল্যান্ডের স্কোরের যতটা কাছাকাছি পৌঁছানো সম্ভব, কতটা এগিয়ে চলা।
তবে আজ বেশিক্ষণ সুন্দরের সঙ্গ দিতে পারেননি নাদিম। খাতা খোলার আগেই আজ লিচের শিকারে পরিণত হন তিনি। এখন সাথ দিতে পারতেন শুধুমাত্র ইশান্ত শর্মা। আর সেই কারণেই বেশ কিছুটা আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠেন সুন্দর। কিন্তু অ্যান্ডারসনের শর্ট বলের সামনে দাঁড়াতে পারেননি ইশান্তও। মাত্র ৪ রানের শর্ট লেগে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান তিনি। অন্যদিকে ৭১ রানে অপরাজিত থাকা সুন্দরকে সঙ্গ দিতে মাঠে আসেন জসপ্রীত বুমরাহ। এই মুহূর্তেও ফলোঅন থেকে প্রায় ৫৫ রান দূরে ছিল ভারত। অবশ্য রুট স্পেলে আসার সাথে সাথেই তার উপরে আক্রমণ শুরু করেন সুন্দর। পরপর একটি চার এবং একটি ছয় তুলে নেন তিনি। ইনিংসে এটি ছিল তাঁর দ্বিতীয় ওভার বাউন্ডারি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আন্ডারসনের বল সামলাতে পারেননি বুমরাহ। তাই শেষ পর্যন্ত ৩৩৭ রানেই শেষ হয়ে যায় ভারতের ইনিংস। শেষ পর্যন্ত ১৩৮ বলে এক ডজন বাউন্ডারি এবং দুটি ওভার বাউন্ডারি সাহায্যে ৮৫ রান করে অপরাজিত থেকে যান ওয়াশিংটন সুন্দর। ফলতো এখনো ২৪১ রান পিছনে থেকে যায় ভারত। যদিও মূলত সময়ের কথা মাথায় রেখেই ভারতকে আর ফলোঅন করাতে চায় না ইংল্যান্ড। এই পিচে চতুর্থ ইনিংসে ব্যাটিং আরো কষ্টকর, তাছাড়া কিছুটা বিশ্রাম দেওয়া দরকার বোলারদের। আর সেই কারণেই দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিং করে কিছুটা রান বোর্ডে তুলে নিতে চায় রুট বাহিনী।
ফলতো লাঞ্চের আগেই ব্যাটিং করতে নামতে হয় ইংল্যান্ডকে। এবং খাতা খোলার আগেই এক উইকেট হারায় ইংল্যান্ড। রবীচন্দ্রন অশ্বিনের দুরন্ত বোলিংয়ের ফিরে যান ররি বার্ন্স। আপাতত এক উইকেটের বিনিময়ে ১ রান সংগ্রহ করেছে ইংল্যান্ড। ক্রিজে রয়েছেন লরেন্স এবং শিবলী। আপাতত ২৪২ রানে এগিয়ে রয়েছে তারা।