দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরোঃ প্রথম ইনিংসে মাত্র ১১ রানে ফিরলেও দ্বিতীয় ইনিংসে ৭২ রান করে ফর্মে ফেরার ঝলক দেখিয়েছিলেন কোহলি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাঁর অনবদ্য লড়াই সত্বেও ২২৭ রানের লজ্জাজনক হারের মুখোমুখি হতে হয় টিম ইন্ডিয়াকে। তাই স্বাভাবিকভাবেই সতীর্থদের ওপর ক্ষুব্ধ ভারত অধিনায়ক। বিশেষত অস্ট্রেলিয়ায় দুরন্ত পারফরম্যান্স করে ফেরার পর ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে এইভাবে আত্মসমর্পণ মতেই মেনে নেওয়া যায় না। কোহলি অবশ্য এজন্য কাঠ গড়ায় তুলছেন খেলোয়াড়দের শরীরী ভাষাকেই। তারমধ্যে খেলোয়াড়দের মধ্যে সেই আক্রমণাত্মক মানসিকতার যথেষ্ট অভাব ছিল ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ম্যাচ জিতে নিতে প্রয়োজন
ম্যাচের প্রথম থেকেই যে কার্যত বিপক্ষ দলকে চাপে রাখতে ব্যর্থ হয়েছে টিম ইন্ডিয়া তা পরিষ্কার স্বীকার করে নেন কোহলি। তরুণ স্পিনার সুন্দর এবং নাদিমের বোলিং দক্ষতার অভাবকেও এদিন একহাত নিয়েছেন তিনি। অবশ্যই এদিন কুলদীপ যাদব কেন দলে সুযোগ পেলেন না সে ব্যাপারেও জানিয়েছেন কোহলি। অন্তত দল নির্বাচন নিয়ে তিনি যে খুশি ছিলেন এ কথা জানাতে কোন দ্বিধা করেননি তিনি। তার মধ্যে মূল সমস্যা খেলোয়াড়দের মানসিকতায়। তিনি বলেন “ম্যাচের প্রথম দিকে আমরা বিপক্ষকে চাপে রাখতে ব্যর্থ হয়েছি। জোরে বোলাররা ও অশ্বিন চেষ্টা করলেও সেটা চাপ বাড়ানোর জন্য যথেষ্ট ছিল না। প্রচুর বাজে রান দিয়েছি। তাই ওরা সহজে রান করে গেল। এই পিচে ওদের জোরে বোলার ও স্পিনাররা দারুণ বোলিং করলেও আমরা পারলাম না। আমাদের পার্ট টাইম বোলাররা প্রভাব ফেলতে পারেনি। অশ্বিন আর সুন্দর তো খেলতই। তবে এই পিচে কুলদীপের বদলে শাহবাজ ছিল আদর্শ। তাই ওকে সুযোগ দেওয়া হয়েছিল।”
প্রথম ইনিংসে পুজারা, পন্থ এবং সুন্দর রান পেলেও তেমনভাবে প্রভাব ফেলতে পারেননি রোহিত শর্মা বা শুভমান গিল। বিরাটের মতে টপ অর্ডারের এই ব্যর্থতা হারের বড় কারণ হয়ে উঠেছে। প্রথম ইনিংসে রান পাননি তিনি নিজেও আর সেকারণেই যে ভারত এতোখানি পিছিয়ে পড়েছিল তা কার্যত স্বীকার করে নিয়েছেন তিনি। দু ইনিংসেই সেই ব্যর্থ হয়েছেন রোহিত শর্মাও। সে কথা মাথায় রেখে কোহলি বলেন, “প্রথম ইনিংসে দলের মিডল অর্ডার ভাল খেললেও টপ অর্ডার একেবারেই প্রভাব ফেলতে পারেনি। আমাদের মত পেশাদার দলে এই ভুলগুলো মেনে নেওয়া যায় না। ইংল্যান্ড কিন্তু আমাদের থেকে অনেক বেশি পেশাদারি মনোভাব দেখিয়েছে। তাই ওরা জিতে মাঠ ছাড়ল।”
তবে পিছিয়ে পড়েও বারবার কামব্যাক করেছে ভারত। সাম্প্রতিক অতীতে অস্ট্রেলিয়া লজ্জাজনক হারের পর দুরন্ত ভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে ভারত। বিরাটের বিশ্বাস এবারও একই ভাবে ঘুরে দাঁড়াবেন তারা। তিনি বলেন, “আমাদের মধ্যে আক্রমণাত্মক মানসিকতার অভাব ছিল। প্রথম ইনিংসে একটা সময় আমাদের কাঁধ ঝুলে যায়। এতা মোটেও কাম্য নয়। এই নেতিবাচক মানসিকতাও কিন্তু টেস্ট হারের অন্যতম কারণ। তবে এখনই সব শেষ হয়ে যায়নি। আমরা আগেও অনেকবার ফিরে এসেছি। এবারও ফিরব।”
এই হারের পরে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের র্যাঙ্কিং তালিকাতেও যথেষ্ট পরিবর্তন ঘটেছে। এক ঝটকায় প্রথম স্থান থেকে চার নম্বর স্থানে এসে দাঁড়িয়েছে ভারতীয় দল। অন্যদিকে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে ইংল্যান্ড। ম্যাচ হেরে ভারতের জয়ের গড় এখন ৬৮.৩ শতাংশ। ৪৩০ পয়েন্ট নিয়ে চারনম্বরে নেমে এলেন বিরাটরা। অন্যদিকে এই সিরিজের দিকে তাকিয়ে রয়েছে অস্ট্রেলিয়াও। কারণ তাদের দরজা খুলতে এই সিরিজে দুটি হারই যথেষ্ট হতে পারে ভারতের জন্য। অবশ্য সে ক্ষেত্রে দুটি জয় দিয়ে সিরিজ ড্র করতে হবে তাদের। না, হলে কার্যত নিজেদের ঘরের মাঠে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে খেলতে নামবে ইংল্যান্ডই। আর অন্যদিকে ভারত যদি লর্ডসে পৌঁছতে চায় তাহলে তাদের সিরিজ জিততে হবে ২-১ বা ৩-১ ব্যবধানে। তাই আগামী ম্যাচ থেকে লড়াই যে আরো কঠিন হলো এ নিয়ে কোন সন্দেহ নেই।