দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরোঃ আজ চতুর্থ একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচে মরণ-বাঁচন লড়াইয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা মহিলা দলের মুখোমুখি হয়েছিল ভারতীয় মহিলা ক্রিকেট দল। আরো একবার টসে জিতে ভারতকে প্রথম ব্যাটিং করার আমন্ত্রণ জানান দক্ষিণ আফ্রিকান অধিনায়ক লরা। দ্বিতীয় ম্যাচের পর আর সেভাবে ঘুরে দাঁড়াতে পারেননি স্মৃতি। আজও ব্যক্তিগত ১০ রানের মাথায় শবনিমের শিকার হন তিনি। তবে সিরিজ জুড়ে দুরন্ত ফর্মে থাকা পুনম রাউতকে নিয়ে আজ জুটি বাঁধেন অন্য ওপেনার প্রিয়া পুনিয়া। যদিও ৩২ রানের মাথায় স্যানগেসের বলে খাকার হাতে তালুবন্দি হওয়ায় আবারো ভেঙে পড়ে সেই পার্টনারশিপ।
গত দিনের মতোই আজও ভালো ছন্দে ছিলেন অধিনায়ক মিতালী। অন্যদিকে যখন পুনম বড় ইনিংস গড়ে তুলতে ব্যস্ত, তখন দলের পতন রোধ করার চেষ্টা করেন তিনি। শুধু তাই নয় আজ প্রথম ভারতীয় ক্রিকেটার হিসেবে একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ৭০০০ রানেরও মালিকও হন মিতালী। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ৭১ বলে চারটি চার দিয়ে সাজানো ৪৫ রানের ইনিংস খেলে টিউমির বলে শবনিমের হাতে ধরা পড়ে যান তিনি। ফলতো এক প্রান্তে ম্যাচের হাল ধরে থাকা পুনমের দরকার ছিল একজন নির্ভরযোগ্য সঙ্গী। আজ দলের হয়ে সেই দায়িত্ব পালন করেন হারমানপ্রীত কৌর। বেশ কিছুদিন ধরে ছোট ছোট সুন্দর ইনিংস খেললেও নিজের নামের প্রতি সঠিকভাবে সুবিচার করতে পারছিলেন না হারমানপ্রীত। আর যখন অন্যদিকে ক্রমশ শতকের দিকে এগিয়ে চলেছিলেন পুনম গতি বাড়ানোর দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নেন হারমানপ্রীত। মাত্র ৩৫ বলে সাতটি বাউন্ডারি এবং একটি ওভার বাউন্ডারি সহযোগে ৫৪ রানের বিধ্বংসী ইনিংস উপহার দেন তিনি। শেষ পর্যন্ত ক্রিজে টিকে থাকতে না পারলেও তার এই মারকুটে ব্যাটিংয়ের কারণেই বড় স্কোর খাড়া করার কাজটি যথেষ্ট সহজ হয়ে যায় ভারতের জন্য। অবশ্যই প্রশংসা করতে হবে পুনমেরও। শেষ পর্যন্ত ১২৩ বলে দশটি বাউন্ডারির সাহায্যে যে অপরাজিত শতরান উপহার দেন তিনি তার দৌলতেই নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৪ উইকেটের বিনিময়ে ২৬৬ রানের পৌঁছায় ভারতীয় দল। দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে সর্বোচ্চ দুটি উইকেট তুলে নেন টিউমি। আজ মিতালীর সাথে সাথে হরমনপ্রীতকেও বোল্ড করে সাজঘরে ফেরান তিনি। একটি করে উইকেট তুলে নেন শবনিম এবং স্যানগেসে।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে ব্যাটিং সহায়ক উইকেটের সুবিধা শুরু থেকেই তুলতে শুরু করে দক্ষিণ আফ্রিকার মেয়েরা। মাত্র ৭৫ বলে ১০ টি বাউন্ডারি সাহায্যে ৬৯ রানের অপূর্ব ইনিংস উপহার দেন লি। অর্ধশত রান করেন অধিনায়ক লরাও। মানসীর বলে শেফালী বর্মার হাতে ধরা পড়ার আগে অবধি ৭৮ বলে হাফ ডজন বাউন্ডারির সাহায্যে ৫৩ রান সংগ্রহ করেন তিনি। অন্য ওপেনার লিকে অবশ্য আগেই ফিরিয়েছিলেন হারমানপ্রীত। কিন্তু প্রয়োজনীয় রান তুলে নিতে আজ তেমন কোনো সমস্যাই হয়নি দক্ষিণ আফ্রিকার। কারণ লারা গুডালের সাথে আবারও সুন্দর পার্টনারশিপ গড়ে তোলেন প্রীজ। একদিকে প্রীজ যেমন ছিলেন বিধ্বংসী, অন্যদিকে তেমনি উইকেটের পতন রোধ করেন লারা। যদিও রাজেশ্বরী গায়কোয়াড় পার্টনারশিপ ব্রেক করেন ঠিকই কিন্তু ততক্ষণে মাত্র ৫৫ বলে আটটি বাউন্ডারি এবং একটি ওভার বাউন্ডারি সাহায্যে ৬১ রানের মারকুটে ইনিংস খেলে দক্ষিণ আফ্রিকাকে অনেকটাই জয়ের কাছাকাছি এনে দিয়েছেন প্রীজ।
বাকি কাজটা অবশ্য করে দেন ক্যাপই৷ একদিকে যখন ৬৬ বলে ৫৯ রান করে অপরাজিত থাকেন লারা। তখনই অন্যদিকে মাত্র ১৮ বলে ২২ রানের গুরুত্বপূর্ণ ক্যামিও খেলে দলকে জয় এনে দেন ক্যাপ। ৮ বল বাকি থাকতেই ৭ উইকেটে তুলে নেওয়া এই জয়ের ফলে সিরিজ নিজেদের পকেটের পুড়লো লরার দল। কারণ এই মুহূর্তে ৩-১ ব্যবধানে পিছিয়ে পড়েছে ভারত। তাই সিরিজে কামব্যাক করা তাদের পক্ষে আর কোনোভাবেই সম্ভব নয়।