দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরোঃ ২০১১ সালের বিশ্বকাপের আসরেই নিজের জীবনের ৯৯ তম সেঞ্চুরি পেয়েছিলেন মাস্টার ব্লাস্টার শচীন টেন্ডুলকার। কিন্তু তারপর শততম সেঞ্চুরি পর্যন্ত পৌঁছাতে রীতিমতো অপেক্ষার কাল পেরোতে হয়েছিল লিটিল মাস্টারকে। মাইলফলকের খুব কাছাকাছি এসে বারবার হাতছাড়া হয়ে গিয়েছিল সেই সুযোগ। ক্রিকেটে নার্ভাস নাইনটিজ কথাটি যেকোনো খেলোয়াড়ের কাছেই ভীষণ পরিচিত। ৯০-৯৯ রানের মাথায় স্নায়বিক চাপ নিতে না পেরে বারবারই আউট হয়ে ফিরতে হয়েছে অনেক গুণী ব্যাটসম্যানকে। সেই অবস্থা হয়েছিল শচীনেরও।নিজের ম্যারাথন ক্যারিয়ারের প্রায় ১৫ বার নার্ভাস নাইনটজের কবলে পড়ে ছিলেন শচীন। কাছে গিয়েও বারবার ছুঁতে পারেননি সেই কাঙ্খিত তিন অঙ্কের মাইলফলক। আর জীবনে ৯৯ তম সেঞ্চুরি পাওয়ার পরেই যেন আরো বেশি এই চাপ কাজ করছিল ক্রিকেটের ভগবানের মাথায়।
বিশ্বকাপে নাগপুরে সাউথ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ১১১ রানের দুর্ধর্ষ ইনিংস খেলার পর থেকেই সমর্থকদের উচ্চাকাঙ্খার চাপ যেন রীতিমতো চেপে ধরে তাকে। শততম সেঞ্চুরি পর্যন্ত পৌঁছাতে শচীনকে খেলতে হয়েছিল আরো ৩৪ টি ইনিংস।এর মাঝেই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ৮৫ রানে আউট হন তিনি। ওভাল টেস্টে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ৯১ রান করার পরেও ছোঁয়া হয়নি সেই কাঙ্খিত মাইলস্টোন। এরপর নিজের ঘরের মাঠ ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে দুর্দান্ত সুযোগ পেয়েছিলেন শচীন। কিন্তু সেবারও ৯৪ রানের মাথায় রবি রামপালের বলে আউট হন তিনি। তার আগে ফিরোজ শাহ কোটলায় ৭৬ করে স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পূরণ হয়নি সকল সমর্থকদের কামনা। এরপর সকলেই ধরে নিয়েছিলেন হয়তোবা অস্ট্রেলিয়ার মাটিতেই রেকর্ড গড়বেন শচীন। কিন্তু মেলবোর্নে ৭৩ এবং সিডনিতে ৮০ রানের পৌঁছানোর পরেও তিন অঙ্কের সেই স্বপ্নের স্কোরে পৌঁছানো হয়নি শচীনের।
শেষ পর্যন্ত ২০১২ সালে বাংলাদেশের মিরপুরে স্বপ্ন পূরণ হয় লিটল মাস্টারের। আজকের দিনেই অর্থাৎ ১৬ মার্চ এশিয়া কাপে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ১১৪ রানের দুর্ধর্ষ ইনিংস খেলে শততম শতরানের মাইলস্টোন ছুঁয়ে ফেলেন তিনি। ম্যাচের পর তার মাথায় এই শততম শতরানের চাপ কিভাবে চেপে বসেছিল সে কথা নিজেই স্বীকার করেন শচীন। তিনি বলেন, “আমি মাইলস্টোনের কথা চিন্তাই করছিলাম না। এক বছর আগে যখন বিশ্বকাপে সাউথ আফ্রিকার বিরুদ্ধে আমি আমার ৯৯তম শতরানটি পাই, তখনো কেউ তেমন ভাবে এটা নিয়ে আলোচনা করেনি। তারপর সম্ভবত সংবাদ মাধ্যমে এই আলোচনা শুরু হয়। তারপর রেস্টুরেন্ট, হোটেল যেখানে আমি গেছি, হাউসকিপিং, রুম সার্ভিস যাদের সাথে কথা বলেছি, প্রত্যেকেই শুধুমাত্র আমার শততম শতরানের কথাই বলেছে। এটা আমার জন্য মানসিকভাবে বেশ কঠিন হয়ে ওঠে কারণ আমি কখনোই শুধুমাত্র নিজের শততম শতরানের জন্য খেলছিলাম না।”
আজকের এই ঐতিহাসিক দিনে তাই লিটল মাস্টারকে শুভেচ্ছা জানানো হয়েছে বিসিসিআই তরফেও। আজ টুইটে তারা লেখেন, “এ সেঞ্চুরি অফ সেঞ্চুরিস, আজকের দিনেই মাস্টারব্লাস্টার শচীন পৃথিবীর একমাত্র ব্যাটসম্যান হিসেবে শততম শতরানের মাইলস্টোন ছুঁয়েছিলেন। তাই আজকের দিনে তাকে অসংখ্য শুভেচ্ছা।”